
জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে স্পষ্ট হচ্ছে মেরুকরণ। নির্বাচনকে সামনে রেখে কোন দল কার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে বা আসন সমঝোতার ভিত্তিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, তা নিয়ে চলছে তীব্র দরকষাকষি ও আলোচনার ঝড়। এর মধ্যে সবার নজর এখন জামায়াত ও বিএনপিকে ঘিরে সম্ভাব্য বৃহৎ জোট গঠনের দিকে।
সূত্র জানিয়েছে, দেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি একটি বড় নির্বাচনী জোট গঠনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। দলটি ইতোমধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে সম্পৃক্ত বিভিন্ন দল ও জোটের কাছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা চেয়েছে। এসব দলের কয়েকজন প্রার্থীকে বিএনপি থেকে ‘গ্রিন সিগনাল’ও দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এর বাইরে আরও কয়েকটি দলের সঙ্গেও বিএনপি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।
বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী জোট গঠনের প্রক্রিয়ায় এনসিপির সঙ্গেও বিএনপির পর্দার আড়ালে আলোচনা চলছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, “বৃহত্তর নির্বাচনী জোট গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। কার কার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, তা সময়মতো জানানো হবে।”
দলের নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন, যুগপৎ আন্দোলনের অংশীদার দলগুলোর পাশাপাশি সমমনা জাতীয়তাবাদী, উদার গণতান্ত্রিক ও ইসলামী আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি বৃহৎ নির্বাচনী জোট গঠনের লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে বিএনপি।
এ জোটে থাকছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), ১২-দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমন্বয় জোট, বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য, গণফোরাম ও লেবার পার্টি। যুগপৎ আন্দোলনের অংশ এসব দল ও জোটের কাছ থেকে বিএনপি ইতোমধ্যে আসনের তালিকা চেয়েছে।
১২-দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার গণমাধ্যমকে জানান, “আমরা যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে ছিলাম, আগামী নির্বাচনে একসঙ্গেই অংশগ্রহণ করব। ইতোমধ্যে বিএনপির আহ্বানে ৩০ থেকে ৩৫টি আসনের তালিকা জমা দিয়েছি।”
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব ড. রেজোয়ান আহমেদ বলেন, “২০১২ সাল থেকে আমরা বিএনপির সঙ্গে আছি। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে যে রাজনৈতিক মেরুকরণ তৈরি হচ্ছে, তাতেও বিএনপির সঙ্গেই থাকব।”
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিবুর রহমান পার্থ বলেন, তার দল বিএনপির জোটের সঙ্গেই আছে এবং তিনি ঢাকার একটি আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের পরিকল্পনা করছেন।
সব মিলিয়ে বিএনপির নেতৃত্বে একটি বৃহৎ ও বৈচিত্র্যময় নির্বাচনী জোট গঠনের প্রক্রিয়া এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই জোট নির্বাচনের মাঠে একটি বড় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।