Image description

জুলাই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর শাহবাগ থানার হত্যা মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ড শুনানিতে অসুস্থতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের মতো মরে প্রমাণ করতে হবে আমরা অসুস্থ।

উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে সোমবার (৬ অক্টোবর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সকালের দিকে দীপু মনিকে আদালতের হাজত খানায় রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর হেলমেট, হ্যান্ডকাপ ও বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে পঞ্চম তলার ৭ নম্বর কোর্টে উঠানো হয় তাকে। মাথার হেলমেট ও জ্যাকেট খুলে কাঠগড়ায় উঠানো হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিচারক আসার পরই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক মাইনুল খান পুলক আসামির ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, বিগত সরকারের মন্ত্রী ছিলেন আসামিরা। জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে হত্যার জন্য হাসিনা সরকারকে সরাসরি সহযোগিতা করেছেন। তাদের প্রত্যক্ষ মদদেই এ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। সরকারকে তারা কী কী পরামর্শ দিয়েছেন? কেন হত্যাগুলো হয়েছে? এসব বিষয় জানার জন্য তার ১০ দিনের রিমান্ড চাই। আসামি পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, দীপু মনি একজন নারী। জুলাই আন্দোলনের সময় তার দায়িত্ব ছিল সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে। এ মামলার সঙ্গে তার কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। শুধু হয়রানির উদ্দেশ্য তাকে এসব মামলায় জড়ানো হয়েছে। ইতোপূর্বে তাকে কয়েকবার রিমান্ডে নেওয়া হয়। আমরা তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করছি।

পরে দীপু মনি আদালতের অনুমতি নিয়ে বলেন, আমি অসুস্থ। কারাগারে চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। আমাকে হাসপাতালে নেওয়া হবে বলে আদালতে আনা হয়েছে। এখন ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হচ্ছে। আমাদের সাবেক মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন চারবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর মারা গেছেন। আমাদেরও কি মরে প্রমাণ করতে হবে যে আমরা অসুস্থ। সবশেষে তিনি আইনজীবীর সঙ্গে একান্তে কথা বলতে চান।

বিচারক দীপু মনির আইনজীবীকে বলেন, এ বিষয়ে অনুমতি নেওয়ার জন্য নিয়মিত আদালতে আবেদন করবেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, দীপু মনির গলার জোর আওয়াজই প্রমাণ করে, তিনি অসুস্থ নন। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ৫ আগস্ট শাহবাগ থানার চানখারপুল এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন মো. মনির হোসেন। দুপুরে আসামিদের ছোড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রোজিনা আক্তার গত ১৪ মার্চ শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় ৩৫১ জনকে এজাহারনামীয় ও ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৯ আগস্ট সন্ধ্যায় রাজধানীর বারিধারা এলাকা থেকে ডা. দীপু মনিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আটক রয়েছে।