
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে ভিপি পদে জয় লাভ করেছেন ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন’ প্যানেলের আব্দুর রশিদ জিতু। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’-এর আরিফুল্লাহ আদিব।
ভিপি পদে নির্বাচিত আব্দুর রশিদ জিতু ৩ হাজার ৩৩৪ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আদিবের ভোটসংখ্যা ২ হাজার ৩৯২।
জাকসুতে স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে ভিপি পদে জয় লাভের পর থেকে আলোচনায় জিতু। সবার আগ্রহের জায়গা তাকে নিয়ে। এক সময় ছাত্রলীগের রাজনীতেত সক্রিয় থাকা জিতু কিভাবে জুলাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিলেন।
কে এই জিতু
আব্দুর রশিদ জিতু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) সদস্য ছিলেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় পদত্যাগ করেন তিনি।
এরপর ১ জুলাই থেকে কোটাবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় তাকে। এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হয়ে ওঠেন জিতু। আন্দোলনের আগে জিতু ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও আন্দোলনের সময় সর্বপ্রথম ছাত্রলীগের হাতে মার খেয়ে আহত হন।
জাকসু নির্বাচনের প্রচারণার সময় জুলাই আন্দোলনে ছাত্রলীগ থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে তিনি জানান, জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রজনতার পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় নিজ সংগঠন ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন তিনি। বিবেকবোধ থেকে দেশের স্বার্থে ছাত্রলীগের রাজনীতি সরে দাঁড়ান।
এরপর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে ‘ফার্স্ট ম্যান’ হিসেবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগরের আন্দোলন পরিচালনা করেন। বর্তমানে ‘গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ নামে প্ল্যাটফর্মের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন জিতু।
সমন্বয়ক পদ থেকেও পদত্যাগ
জিতু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটিতে সমন্বয়ক ছিলেন। একই সময় কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করেন।
গত বছরের ৩ অক্টোবর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৪ সমন্বয়ক ও চার সহসমন্বয়ক পদত্যাগ করেন। এর মধ্যে ছিলেন জিতু। সেই সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে ‘সরকারি দলের মতো আচরণ ও গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট-বিরুদ্ধ কাজে’ যুক্ত থাকার অভিযোগ তুলে তারা পদত্যাগ করেন।
জয়ের পর যা বলেছেন
জাকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে জয় লাভের পর আব্দুর রশিদ জিতু শিক্ষার্থীদের যেকোনো চাহিদা ও আশা-আকাঙ্ক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন, সেখান থেকে আমি অবশ্যই তাদের চাওয়া-পাওয়াকে গুরুত্ব দিয়ে সব সময় কাজ করার চেষ্টা করব। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অধিকারের প্রশ্নে কখনো আপস করিনি, ভবিষ্যতেও করব না।