
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির ও হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধি হেফাজতে ইসলাম দেয়নি, এটির দায়ও হেফাজতে ইসলামের নয়। যিনি এ উপাধি দিয়েছেন, তা ছিল তার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। তিনি হেফাজতের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না; বরং তিনি আওয়ামী লীগ-সমর্থিত এবং ওই দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী একজন আলেম ছিলেন। সুতরাং তার ব্যক্তিগত মন্তব্যের দায় কখনোই হেফাজতে ইসলাম বা বাংলাদেশের আলেমসমাজ নেবে না।
সম্প্রতি দৈনিক যুগান্তরের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে মাওলানা মামুনুল হককে প্রশ্ন করা হলে তিনি এ কথা বলেন।
২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে আওয়ামী লীগের চালানো নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার, শাপলা চত্বরে শহীদ হওয়া আলেম ও মাদ্রাসাছাত্রদের খোঁজখবরসহ সমসাময়িক নানা বিষয়ে যুগান্তরকে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কওমি সনদের স্বীকৃতির পর হেফাজতে ইসলাম শেখ হাসিনাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংবর্ধনা (শোকরানা মাহফিল) দিয়ে ‘কওমি জননী’ উপাধি দিয়েছে। এ বিষয়ে আজও হেফাজতে ইসলাম আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি। সেদিনের ঘটনার জন্য হেফাজত কি দুঃখ প্রকাশ করবে?
জবাবে মামুনুল হক বলেন, শোকরানা মাহফিল নিয়ে হেফাজতে ইসলামের তৎকালীন নেতৃত্বের মধ্যেও দ্বিধা-বিভক্তি ছিল। তৎকালীন মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, ঢাকা মহানগর সভাপতি ও নায়েবে আমির আল্লামা নুর হোসাইন কাসেমীসহ বহু শীর্ষ নেতা সেদিন উপস্থিত ছিলেন না। মাহফিলটি মূলত কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) সংশ্লিষ্ট আয়োজন ছিল। তবে সরকার পরিকল্পিতভাবে সেখানে হেফাজতে ইসলামের নাম ব্যবহার করতে বাধ্য করেছে। আসলে বিষয়টি ছিল কওমি সনদের স্বীকৃতি নিয়ে- যা দীর্ঘদিন ধরে কওমি ছাত্রজনতার প্রাণের দাবি ছিল। সেই দাবির প্রেক্ষাপটে আলেম সমাজকে তৎকালীন সরকারের সঙ্গে ন্যুনতম সমন্বয় করতে হয়েছে। এটা দুঃখ প্রকাশ করার মতো কোনো কিছু বলে আমি মনে করি না। তবে সেখানে তৎকালীন সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, বিশেষ করে হেফাজতের ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি বলে যে চরম মিথ্যাচার করা হয়েছিল, আমরা তখনই এর প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং আজও জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ‘সত্যকে বিকৃত করার এ অপচেষ্টা হেফাজত কখনোই প্রশ্রয় দেয়নি, দেবে না’।