
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পদ স্থগিত থাকা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচনে আমি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। আমার দলের কাছে আমার অনুরোধ, আমাকে ধানের শীষ মার্কা দিবেন।’
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ আয়োজিত গণ-সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
ফজলুর রহমান বলেন, দল আমাকে তিন মাসের স্থগিতাদেশ দিয়েছে, আমি মাথা পেতে নিয়েছি। তবে আমি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চাই। দলের কাছে এটাই আমার চাওয়া। আপনারা জনগণ দলের কাছে দুইটা জিনিস চাইবেন। একটা হলো ফজলুর রহমান, আরেকটা হলো ধানের শীষ মার্কা। এসময় উপস্থিত হাজারো জনতা তার কথায় হাত উঁচিয়ে সমর্থন জানান।
এসময় জামায়াতে ইসলামির উদ্দেশ্যে ফজলুর রহমান বলেন, মুক্তিযুদ্ধ হইলো, দেশ স্বাধীন হইলো। কিন্তু জামায়াতে ইসলাম বলে এটা ছিল ভাইয়ে ভাইয়ে দ্বন্দ্ব। আর এই দ্বন্দ্ব নাকি ভারত লাগিয়ে ছিল।
ফজলুর রহমান বলেন, আমি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আমরণ বলে যাবো। এ বিষয়ে কোন আপোষ নেই। যেদিন পত্রিকায় জামায়াত লিখল, এই দেশে কোন মুক্তিযুদ্ধ হয় নাই। বলল মুক্তিযুদ্ধ রাখবে না। যারা যুদ্ধ করেছে তারা বেশিরভাগ নাকি হিন্দু। ইন্ডিয়া থেকে এসে যুদ্ধ করেছে। অস্ত্র নিয়ে যারা যুদ্ধ করেছো, তারা আল্লাহর কাছে মাফ চাও। এখনো আমি জীবিত আছি। সেই দিন আমি বলছি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে। আমি কী এমনিতেই জামায়াতের বিরুদ্ধে বলছি। আমি কী ঝগড়া করার মানুষ নাকি।
তিনি বলেন, যখন দেখছি মুক্তিযুদ্ধ রাখবে না, মুক্তিযুদ্ধকে কবর দিয়ে দিবে। যখন দেখছি ৩০ লাখ মানুষের রক্ত এ দেশে বৃথা যাবে। দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জত বৃথা যাবে, তখন আমি মনে করেছি, না আমি ছাড়বো না। আমি তাদেরকে ছাড়বো না, যারা মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে। যখন এসব কথা বললাম। আমার সঙ্গে যুক্তিতে পারে না, তখন কিছু মাওলানা বলা শুরু করলো ও তো পাগল, ও তো ফজু পাগলা।
এসময় উপস্থিত সকলকে উদ্দেশ্য করে ফজলুর রহমান বলেন, আপনাদের কী মনে হয় আমি ফজু পাগলা? আমাকে কী পাগল মনে হয়? আসলে আমাকে পাগল উপাধি দিয়ে রাজাকারেরা বাঁচতে চায়।
এসময় তিনি জামায়াতের আমিরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, আপনার বাড়িতো সিলেট। সিলেটে ১৯টি আসন আছে। কোন আসনে দাঁড়াইবেন বলেন। আমি আমার দল থেকে সেই আসনে দাঁড়াবো। ১৯টির মধ্যে একটা আসনেও যদি পাশ করতে পারেন, তাহলে ভাববো আপনারা বাপের বেটা।
মিঠামইন সদরের ইউনিয়ন পরিষদের সামনে গণ-সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মিঠামইন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইব্রাহীম। এসময় উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাসহ জনতা মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। বিকেল থেকে শুরু হওয়া এ অনুষ্ঠান সন্ধ্যায় শেষ হয়।