Image description
 

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ডিপ্রেশনের মধ্যে আছে। তিনি জানান, দেশের জাতীয় আমানত এখন মোট প্রায় ১৬ লাখ কোটি টাকা। এর আগে তিনি শুনেছিলেন যে মোট আমানত ছিল প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের পরিমাণ যদি সাড়ে চার লাখ কোটি টাকা ধরা হয়, তাহলে দেশের অর্ধেকের বেশি টাকা প্রকৃতপক্ষে নেই। আবার যদি বর্তমান হিসাব অনুযায়ী ১৬ লাখ কোটি টাকা হয়, তাহলে চার ভাগের এক ভাগও দেশের হাতে নেই।

 

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে চীন বাংলাদেশকে যুদ্ধবিমান কেনার জন্য প্রেশার দিচ্ছে এবং এ ব্যাপারে মধ্যস্থতা করছে পাকিস্তান। রনি প্রশ্ন তুলেছেন, “এই মুহূর্তে যুদ্ধবিমান কিনে আমরা কার সঙ্গে যুদ্ধ করব— পাকিস্তানের সঙ্গে, ভারতের সঙ্গে নাকি মায়ানমারের সঙ্গে? এবং আমরা কত ঘণ্টা টিকতে পারব?”

তিনি উল্লেখ করেন, একটির দাম চার থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা হওয়ায় ১৫টি যুদ্ধবিমান কিনলে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখতে হলে আমাদের এই বিশাল খরচ করতে হবে এবং ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক শত্রুভাবে গড়ে উঠতে পারে।

 

রনি বলেন, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারা শুল্ক ছাড় দিয়ে আমাদের আরও এক্সপোর্ট করার সুযোগ দেবে। বছরে আমরা প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা আয় করতে পারি। এর বদলে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার। তিনি উল্লেখ করেন, আগের আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদী ঋণে ১২টি ড্রিমলাইনার দেওয়া হয়েছিল, যেগুলো চালাতে আমরা সমস্যায় পড়েছি। এখন আরও ২৫টি বোয়িং কেনা প্রয়োজন হলে কমপক্ষে ২০ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে। তিনি বলেন, এই ২০ বিলিয়ন ডলার হয়তো আমাদের ৩০ বছরের মধ্যে সুদসহ পরিশোধ করতে হবে। তিনি মনে করেন এটি অপ্রয়োজনীয় এবং দেশের জন্য বিপজ্জনক।

 

গোলাম মাওলা রনি সতর্ক করেন, বর্তমান অবস্থায় চীন ও যুক্তরাষ্ট্র আমাদের ফাঁদে ফেলছে এবং দেশের শেষ সম্বলগুলোও তাদের কাছে চলে যেতে পারে। তিনি বলেন, “দুরবস্থা ও বিপদের সময় কারো কাছে গেলে শেষ সম্বল, অর্থাৎ আপনার স্ত্রী, সন্তান, পকেটের টাকা এমনকি হাতে থাকা সামান্য জিনিসও লোভী মানুষ খুলে নেবে।”

তিনি দেশের পরিস্থিতিকে ক্রান্তিকাল বলে উল্লেখ করে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন যেন বাংলাদেশকে বোয়িং ও যুদ্ধবিমানের কবল থেকে রক্ষা করা হয়।