
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানি চলছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি এস কে তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়েছে।
দুপুর আড়াইটার দিকে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের বিচারকরা এজলাসে উঠেন। বিভিন্ন মামলার ম্যানশন শুনানির পর ২টা ৪০মিনিট থেকে শুনানি শুরু হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া শুনানি করছেন।
এর আগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে হওয়া রিটের শুনানির জন্য সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।
এস এম ফরহাদ ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ থেকে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি ছাত্রশিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি।
রোববার (৩১ আগস্ট) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট একই বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন। আদালতে ওইদিন রিটের বিষয়টি উত্থাপন করেন রিট আবেদনকারীর আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। আদালত বলেন, ‘মঙ্গলবার শুনবো।’ তখন জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘বিকেল চারটায় রাখতে পারেন, বিষয়টি জরুরি।’ আদালত বলেন, ‘মঙ্গলবার শুনবো। সকাল সাড়ে ১০টায় মেনশন (উত্থাপন) করবেন, ২টায় শুনবো।’
এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, গত ২৮ আগস্ট ডাকসু নির্বাচনে এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে অপরাজেয় ৭১’, ‘অদম্য ২৪’ প্যানেলের বামজোট মনোনীত প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলম হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন।
এবারের ডাকসু নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা গত ২৬ আগস্ট প্রকাশ করা হয়। তালিকায় এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা নিয়ে করা রিটে তার বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ করা হয়েছে।
রিট আবেদনে ডাকসুর নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা দেওয়াটা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে।
আসন্ন নির্বাচনে ফরহাদের প্রার্থিতা বাতিল করে তাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এ বিষয়েও রুল চাওয়া হয়েছে। রুল হলে তা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকার অংশটুকুর কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে রিটে।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এরইমধ্যে নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে জমজমাট প্রচারণা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচন হয়েছে ৩৭ বার। আর স্বাধীনতার পর মাত্র সাতবার হয় ডাকসু নির্বাচন। যার মধ্যে সবশেষ ভোটগ্রহণ হয় ২০১৯ সালে।
আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এবার ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে মোট ৪৭১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এর মধ্যে নারী প্রার্থী ৬২ জন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী সিনেট চৌধুরী ভবনে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে ২৮ জন তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন। এছাড়া প্রাথমিক বাছাই প্রক্রিয়ায় বাদ পড়া ১০ জন প্রার্থী আপিল না করায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে চূড়ান্তভাবে ৪৭১ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।