Image description

রাজনীতিতে ফজলুর রহমানকে নিয়ে আলোচনা যেন থামছেই না। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে মুক্তিযুদ্ধ, আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশের রাজনীতি প্রশ্নে একের পর এক মন্তব্য করে আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এই উপদেষ্টা। এ নিয়ে ইতিবাচক-নেতিবাচক মন্তব্য থাকলেও তাতে মাথা ঘামায়নি দলটি। যদিও ব্যক্তিগতভাবে কাউকে কাউকে মন্তব্য করতে দেখা গেছে।

এমনই একজন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন বলেছেন, ‘ফজলু ভাইর কাছে বিএনপির পক্ষ থেকে মাফ চাই। বিএনপিকে মাফ করে দেন ভাই’। রবিবার (২৪ আগস্ট) সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন। হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন।

হাসান মামুনের ওই মন্তব্যের স্ট্যাটাসে অনেকেই কমেন্ট করেছেন। আমিনুল ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, ‘ওনি অপ্রাসঙ্গিক ভাবে বর্তমান প্রজন্মের সামনে কথায় কথায় ৭১ ও মুজিব বন্দনা অব্যাহত রেখেছেন। আওয়ামী লীগ থেকে কোন ধার করা নেতা বিএনপির মুখপাত্র হতে পারে না।’

গাজী বাশের নামে অন্য একজন কমেন্টে করেন, ‘এর দায় কোনোভাবেই দল এরাতে পারে না ভাই। একে ছুড়ে না ফেলা পর্যন্ত বিএনপির এ বোঝা বহন করতে হবে।’

এর আগে একটি গণমাধ্যমের টকশোতে অংশ নিয়ে ফজলুর রহমান বলেন, ‘যারা ৫ আগস্ট ঘটিয়েছে, সেই কালো শক্তির নাম হলো জামায়াতে ইসলাম। সার্জিস আলমরা যারা এর অভিনয় করেছে, এটার অভিনেতা যারা ৫ আগস্টের অভিনেতা—আমি তাদেরকে আর নেতা বলতে চাই না, তাদেরকে আমি অভিনেতা বলব।’

টকশোতে ফজলুর রহমান আরও বলেন, ‘আমি তাদের আর নেতা বলতে চাই না, তাদেরকে আমি অভিনেতা বলব। মানুষ বুঝে গেছে, এরা হলো রাজাকারের বাচ্চা। তারা টাকা-পয়সার মাধ্যমে তরুণ সমাজের একটা অংশকে যেকোনোভাবে কনভেন্স করে। নির্বাচন হলে বিএনপি দুই-তৃতীয়াংশ সিট পেয়ে ক্ষমতায় আসবে আল্লাহর রহমতে।’

‘কিন্তু যারা ৫ আগস্ট ঘটাইছে কালো শক্তি, সেই কালো শক্তির নাম হলো জামায়াতে ইসলাম’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তাদের যে অগ্রগামী শক্তি হলো, তা ইসলামী ছাত্রশিবির। যাকে সার্জিস আলমরা যারা এটার অভিনয় করেছে, এটার অভিনেতা যারা ৫ আগস্টের অভিনেতা—আমি তাদেরকে আর নেতা বলতে চাই না, তাদেরকে আমি অভিনেতা বলব।’

ফজলুর রহমান বলেন, ‘সেই আল বদর, আল শামস, জামায়াতে ইসলাম—আমরা মনে করেছিলাম ৫৪ বছরে তাদের পূর্বপুরুষের গ্লানি তারা ভুলে গেছে। কিন্তু না, আরও দ্বিগুণ আকারে সেই গ্লানিটা তাদের মধ্যে এসেছে। যে কারণে এই যে ৫৪ বছর আজকে আমি বলতে চাই, তারা চক্রান্ত করে এই দেশে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পেছনে জাতীয়-আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র আছে। সে ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশে এমন একটা শক্তি হিসেবে দাঁড়াইছে। তাদের অর্থ-বিত্ত-শক্তি সব কিছু আছে। তারা টাকা-পয়সার মাধ্যমে তরুণ সমাজকে যেকোনোভাবে আজকে একটা শক্তি নিয়ে সামনে আসছে। সারা বাংলাদেশে এখন এসিল্যান্ড থেকে ইউএনও, ওসি থেকে এসপি এবং ডিসি—যা আছে, উপরে সচিব পর্যন্ত—বাংলাদেশের সমস্ত প্রশাসন তারা দখল করেছে।’

ফজলুর রহমানের ভাষ্য, ‘বাংলাদেশের ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংক, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, শেয়ার মার্কেট, হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংগঠন—সবকিছু তারা দখল করেছে। তারা এখন মনে করছে, আমরা তো একটা আনঅফিসিয়াল ক্ষমতায় আছি। কিন্তু অফিসিয়াল ক্ষমতায় আমরা জীবনেও যেতে পারব না। কারণ ভোটের গণনায় আমরা আগে ছিলাম ৭ শতাংশ। এখন গেলে আরও এক পারসেন্ট কমবে।’

মানুষ বুঝে ফেলছে, এরা হলো রাজাকারের বাচ্চা মন্তব্য করে ফজলুর রহমান আরও বলেন, ‘৫৪ বছর পরেও তারা রাজাকারের সেই কুকীর্তি ভুলে নাই, তার প্রতিশোধ নিতে চাই। সে কারণে তারা নির্বাচনে যেতে চায় না। নির্বাচনে যেতে চায় এভাবে, যদি বিএনপিকে ধ্বংস করতে পারে সামনে। কারণ বিএনপি এখন তাদের সামনে পাহাড়ের মতো দাঁড়িয়ে আছে ভোটের বেলায়।’