
সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেছেন, ‘পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত মর্মে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে আমার এবং সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর নাম লুটেরাদের তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেলে সিলেট নগরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
ওই ঘটনায় রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন নয় বরং বাস্তবতাবিবর্জিত কাল্পনিক সংবাদে আশ্চর্য হয়েছেন জানিয়ে কয়েস লোদী বলেন, ‘এ ধরনের মিথ্যা ও বিভ্রান্তকর সংবাদ পরিবেশনের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের একটি শীর্ষ সংবাদপত্রসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনের সূত্রের বরাদ দিয়ে ‘দুদকের অনুসন্ধান : সিলেটের সাদাপাথরে চুরির সঙ্গে জড়িত ৪২ জন’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশ করে। তালিকায় বিএনপির ২০ জন, আওয়ামী লীগের ৭ জন, জামায়াত ও এনসিপির ২ জন করে নেতাকর্মীর নাম রয়েছে।’
লোদী বলেন, ‘মানুষ যখন অন্যায় ও বৈষম্যের শিকার হয় তখনই গণমাধ্যমের দ্বারস্থ হয়। আজ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ, বিস্মিত ও আশ্চার্যান্বিত হয়ে সিলেট মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি।
পাথর চুরির ঘটনায় দুদকের সূত্রের কথা উল্লেখ করে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ (বুধবার) সমকাল এবং অন্যান্য গণমাধ্যমের অনলাইন ভার্সনে দুদকের অনুসন্ধান সিলেটে সাদাপাথর চুরির সঙ্গে ৪২ জন শীর্ষক সংবাদে দুদকের সূত্র দিয়ে কোনো প্রকার সুনির্দিষ্ট সূত্র উল্লেখ, অনুসন্ধান এবং কোনো প্রকার তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন এবং সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পাথর চুরির সঙ্গে জড়িত মর্মে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে আমার এবং সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর নাম লুটেরাদের নাম তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।’
এমন অভিযোগ অসত্য দাবি করে কয়েস বলেন, ‘এতে আমরা রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন নয় বরং এ ধরনের বাস্তবতাবিবর্জিত কাল্পনিক সংবাদের কারণে আশ্চর্য হয়েছি। আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি এই অপকর্মের সঙ্গে আমরা প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে আমাদের জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। এবং যারা এই মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করেছেন তাদের এটি প্রমাণ করতেই হবে।
তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে কয়েস লোদী বলেন, ‘এমন ভিত্তিহীন সংবাদ প্রত্যাখ্যান করে সংবাদের সপক্ষে তথ্য-প্রমাণ দেশবাসীর সামনে উপস্থাপনের জন্য আহ্বান করছি। এই ধরনের ভিত্তিহীন, কাল্পনিক এবং গুজব ছড়ানোর জন্য আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শুরু করেছি।’
দেশ যখন নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন একটি পক্ষ টার্গেট করে সারা দেশে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধারাবাহিকতায় গত কিছুদিন ধরে সিলেট বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে গুজব ও অপপ্রচার করা হচ্ছে। একটি পক্ষ ভোটের মাঠে সুবিধা করতে না পেরে বিএনপিকে ঘায়েল করার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।’
ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত বিজয়কে বাধাগ্রস্ত করতে এবং বিএনপিকে বিতর্কিত করতে তারা এই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে দাবি করে লোদী আরো বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি দুদকের কর্মকর্তারা সাদাপাথর সরেজমিন পরিদর্শনকালে এ বিষয়ে প্রশাসনের গাফিলতির কথা বলেছেন। সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টা প্রশাসনের দায় আছে মর্মে সংবাদমাধ্যমকে অবহিত করেছেন। আমরা একটি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে পাথর চুরি সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
পর্যটনকেন্দ্রগুলো রক্ষায় গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যেসব পর্যটনকেন্দ্র অক্ষত আছে সেগুলোকে সংরক্ষণ করতে হবে। অন্যথায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিনষ্ট হওয়ার কারণে পর্যটকরা সিলেট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বক্তব্য দেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ আহমদ চৌধুরী। সংবাদের প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, ‘মহানগর সভাপতি ও আমাকে নিয়ে সাদাপাথর সংক্রান্ত কিছু সংবাদ আমরা দেখতে পেয়েছি। যা দেখে আমরা মর্মাহত এবং লজ্জিতবোধ করছি। আমার বয়স ষাটের বেশি এবং রাজনীতির বয়স ৩৩ বছর। আমরা মানুষের জন্য রাজনীতি করছি। বিগত ১৬ বছর এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় আন্দোলন করেছি।’