Image description
 

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল জামায়াতের রাজনীতি প্রসঙ্গে বলেছেন, একটি দল কখন যে কার সঙ্গে, মতিগতি বুঝি না। তিনি বলেন, দলটি কখনো বিএনপির সঙ্গে কখনো আওয়ামী লীগের সঙ্গে। আবার যখন কারও সঙ্গে না, তখন ভেতরে ভেতরে লোক ঢুকিয়ে রাখে। এটা কী ভাই?

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

কবিতার ভাষায় তিনি জামায়াতকে বলেন, ‘যখন ডুবেছে পঞ্চমীর চাঁদ, হঠাৎ মরিবার হলো তার সাধ’। ’৯৬-এ হঠাৎ করে আওয়ামী লীগের সাথে জোট বাঁধলেন, আরও কয়েকটি দল নিয়ে আন্দোলন শুরু করলেন। আমরা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকলাম। যেই দল ’৭২-’৭৫ সালে গণহত্যা (আওয়ামী লীগ) চালিয়ে ২৩ বছর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছে, সেই দলকে ক্ষমতায় বসালেন।

 

জামায়াতের সংস্কার চাওয়াকে হাস্যরস উল্লেখ করে সোহেল বলেন, জামায়াতও সংস্কার চায়! আমি বলি, নিজেদের মধ্যে সংস্কার করেছেন কি? এসময় তিনি বলেন, আগে একাত্তর সালে গণহত্যার দায়ে জাতির কাছে ক্ষমা চান তারপর মাথা নিচু করে রাজনীতি করুন।

 

তারেক রহমানের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমার নেতা শহীদ জিয়াউর রহমানের রক্ত কণিকা হয়তোবা এখনো লেগে আছে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের আনাচে-কানাচে। প্রিয় নেতা (তারেক রহমান) সেই লোহিত কণিকা, শ্বেতকণিকা আপনাকে ডাকছে। আমাদের জন্য না হলেও সেই লোহিত কণিকা শ্বেত কণিকার আহ্বানে আপনি ছুটে আসুন।

 

তিনি আরও বলেন, আপনার পিতার রক্ত আপনাকে ডাকছে। খুনের বদলা খুন না, আমি জানি আপনি তা বিশ্বাস করেন না। কিন্তু যে স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে আমাদের নেতা চলে গিয়েছিলেন, সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করেই আপনি আপনার পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নেবেন। সেটা আমরা বিশ্বাস করি।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, সাবেক মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা উত্তরের সভাপতি ফরিদ হোসেন, দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন, বিগত ১৫ বছরে আন্দোলন সংগ্রামে শহীদ ও গুম পরিবারের মধ্যে ২০১৮ সালে ক্রসফায়ারে নিহত মিরপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. সাগীর আহমেদের কন্যা সুরাই বিনতে সগীর, শহীদ নজরুল ইসলামের ছেলে রিয়াজ আহমেদ রাজু, ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর গুম হওয়া স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা কাওসার হোসেনের মেয়ে লামিয়া আকতার মিম।

এছাড়াও ২০২৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় নিহত স্বেচ্ছাসেবক দলের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক শওকত আলী দিদারের (ক্রিকেটের প্রথম শ্রেণির আম্পায়ার) স্ত্রীয় রাবেয়া রহমান।

অনুষ্ঠানে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন সিনিয়র সহসভাপতি ইয়াসিন আলী এবং সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, কেন্দ্রীয় নেতা ফখরুল ইসলাম রবিন, ডা. জাহেদুল কবির, জামির হোসেন, গোলাম সারোয়ার, সাদরাজ্জামান, আনু মো. শামীম আল আজাদ, রফিকুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ, সরদার নূরুজ্জামান, আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর এবং আশপাশের বিভিন্ন জেলার কয়েক হাজার নেতাকর্মী।