Image description

ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় বানিহালা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হিজবুল আলম জিয়েস’র বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে ধরে এনে টর্চার সেলে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। তার ফিশারির একটি ঘরে গান বাজিয়ে চলত এই বর্বরতা।

সম্প্রতি জিয়েসের এই টর্চার সেলের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুরো উপজেলায় তোলপাড় শুরু হয়। চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে অবশেষে পুলিশ জিয়েস এবং তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, জিয়েস কয়েকজন ব্যক্তিকে আটকে রেখে নির্যাতন করছেন। নির্যাতনের শিকার জুয়েল ও রাসেল জানান, জিয়েস তাদের কাছে টাকা পাবে এই মর্মে জোর করে ভিডিও স্বীকারোক্তি আদায় করেন এবং নির্মমভাবে মারধর করতে থাকেন।

এদিকে, জিয়েসের চাঁদাবাজি ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন এলাকার ব্যবসায়ীরাও।

গত শনিবার (৮ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার মাঝিয়ালি বাজারের চুল কেটে টাকা না দিয়ে বরং উল্টো চাঁদা দাবি করেন জিয়েস। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাকে মারধর করে দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।

এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মামুন সরকারের ওপর হামলা চালানো হয়। পরে মামুন সরকার বাদী হয়ে জিয়েসকে প্রধান আসামি করে তারাকান্দা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, জিয়েস একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী, মাদক সেবনকারী এবং চাঁদাবাজ। তিনি মাঝিয়ালি বাজারের বিভিন্ন দোকান থেকে পণ্য নিয়ে টাকা দেন না। ঘটনার দিন হক মিয়ার দোকানে চুল কাটার পর টাকা চাইলে তিনি ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং দোকান বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে মারধর শুরু করেন।

এ সময় হক মিয়ার বড় ভাই লাক মিয়াকেও তার দোকানে গিয়ে মারধর করা হয়। পরে মামুন সরকারের কথায় দুই ভাই দোকান খুললে ৯ আগস্ট সন্ধ্যায় জিয়েস আবার দোকানে এসে হামলা চালান। মামুন সরকার প্রতিবাদ জানালে জিয়েস হাতে থাকা অস্ত্র দিয়ে তার চোখের ওপর আঘাত করেন।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী হক মিয়া বলেন, “চুল কাটার পর জিয়েস ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেয়ায় আমাকে মারধর করে দোকান থেকে বের করে তালা লাগিয়ে দেয়। মামুন ভাইয়ের কথায় দোকান খুললে আবারও জিয়েস হামলা চালায় এবং মামুন ভাইকেও আঘাত করে।”

এ বিষয়ে তারাকান্দা থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লিটন চন্দ্র পাল বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর প্রথমে ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই সহযোগীকে এবং পরে মূল আসামি জিয়েসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিন আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”