
নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ‘একটি দলের উর্দি পরা মেরুদণ্ডহীন প্রতিষ্ঠান’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী। রোববার (৩ আগস্ট) সকালে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে দেশের মানুষ সুষ্ঠু ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। বর্তমান পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে চাইলে একটি দল ছাড়া অন্যদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনই বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি ইসি ভোট নেয়া ও দেয়ার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে এনসিপি নির্বাচনে অংশ নেবে না।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক অভিযোগ করেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি নির্দিষ্ট দল ছাড়া অন্য সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ রোধ করতে ইসি নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি বলেন, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো এবং জুলাই সনদের আলোকে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি তুলবো।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এনসিপির নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় সংশোধনী কাগজপত্র ইসিতে জমা দেয়া হয়েছে এবং দলটি শাপলা প্রতীক বরাদ্দের আশা করছে।
এছাড়াও, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমের নিয়মিত অগ্রগতি জানাতে প্রতি ১৫ দিন পরপর অনলাইনে ব্রিফিং আয়োজনের দাবি জানান তিনি।
এদিন দুপুর সাড়ে ১২টায় এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশন অফিসে যান। তার সঙ্গে ছিলেন দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ এবং যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা।
এর আগে নির্বাচন কমিশন এনসিপিসহ ১৪৪টি নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন আবেদন যাচাই-বাছাই করে তথ্য ঘাটতির বিষয়ে চিঠি দেয়। এনসিপির ক্ষেত্রে ছয়টি বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল জেলা ও উপজেলা কমিটির তালিকা, অফিস ভাড়ার চুক্তিপত্র, তহবিলের উৎস ও পরিমাণ, কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তের স্বাক্ষর, গঠনতন্ত্র সংবিধান পরিপন্থি নয় এ মর্মে প্রত্যয়ন এবং প্রার্থী মনোনয়নে প্যানেল ব্যবস্থার উল্লেখ।
প্রসঙ্গত, গত জুন মাসে এনসিপি ট্রাকে করে নির্বাচন কমিশনে ৪৩ হাজার ৩১৬ পৃষ্ঠার নথিপত্র জমা দেয়। তবে প্রাথমিক যাচাইয়ে দলটি উত্তীর্ণ হতে পারেনি। ইসি জানিয়েছে, জমা দেয়া ১৪৪টি দলের বেশিরভাগের কাগজপত্রেই বিভিন্ন ঘাটতি রয়েছে।