Image description

দীর্ঘ চার বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের নতুন কমিটি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। তবে ১১টি পদের এ কমিটিতে নিয়মিত ছাত্রত্ব আছে মাত্র ৪ জনের। তাও বিশেষ বিবেচনায় ২০২৩-২৪ সেশনে ভর্তি হয়ে ছাত্রত্ব ধরে রেখেছেন ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান মিঠু। অন্যদিকে মাস্টার্সে দুই বছর ধরে আছেন দপ্তর সম্পাদক আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী নাফিউল জীবন। 

জানা গেছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের গঠনতন্ত্রের ৬.১-এর খ নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিক এবং অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীবৃন্দই কেবলমাত্র জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সদস্য/সদস্যা হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তবে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকালে ঘোষিত এ কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র সহসভাপতি, ২ জন সহসভাপতি, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের নিয়মিত ছাত্রত্ব নেই।

নতুন এ কমিটিতে ৭ জনের নিয়মিত ছাত্রত্ব নেই। তারা হলেন, সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী সুলতান আহমেদ রাহী, সাধারণ সম্পাদক সংগীত বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী সর্দার জহুরুল, সিনিয়র সহসভাপতি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী সাকিলুর রহমান সোহাগ, সহসভাপতি ভূগোল বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান, আইন বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী সাবিহা আলম মুন্নি, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপ বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম শফিক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারসি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী তাহের রহমান।

ছাত্রত্ব আছে মাত্র ৪ জন নেতার। তারা হলেন, সহসভাপতি লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী জান্নাতুন নাঈম তুহিনা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীত বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী জাহিন বিশ্বাস এষা, সাংগঠনিক সম্পাদক ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান মিঠু এবং দপ্তর সম্পাদক আরবি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী নাফিউল জীবন। 

অনিয়মিত ছাত্রদের নিয়ে কমিটির বিষয়ে রাবি ছাত্রদলের এক নেতা বলেন, ‘আমরা যেমন কমিটি চেয়েছিলাম তেমনটা হয়নি। এই কমিটি নিয়ে আমরা কেউই সন্তুষ্ট না। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশের সাথে এই কমিটি যায় না। উপর থেকে বলা হয়েছে সিনিয়রদের সন্মান দেখানোর জন্য এই কমিটি দেওয়া হয়েছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি দেওয়ার কথা বলেছেন তারা। তবে আমরা আশা করেছিলাম ছাত্রদের মধ্যেই কমিটি দেওয়া হবে।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল দেখভালের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান বলেন, ‘সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর, যে সময় ও শ্রম দিতে হয় তা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীরা দিতে পারে না। দুর্দিনে যারা ছিল তারা প্রত্যেকেই কোনো না কোনো বিষয়ে মাস্টার্সে ভর্তি আছে। আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের বিষয়টা মাথায় রেখে এবং আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব উচ্চতর শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে থাকায় এই কমিটির হল কমিটি দেওয়া যাচ্ছিল না।

আমান বলেন, ‘এখন সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত নিয়ে এই কমিটি দেওয়া হয়েছে। হল কমিটি হওয়ার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন কাউন্সিল হবে। এই কমিটি খুবই স্বল্প সময়ের জন্য। হল কমিটি হওয়ার পর আবার নতুন কমিটি গঠন করা হবে।’

সুলতান আহমেদ রাহী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আমাদের কমিটিতে ১১ জনের ভেতর ৭ অনার্স-মাস্টার্স শেষ হয়েছে। তবে এই ৭ জন অন্য বিষয়ে এমফিল বা মাস্টার্স করছেন। আমরা কোনো ব্যবসা বা চাকরিতে এখনো যোগদান করেনি। নিয়ম অনুযায়ী রাজনীতি করছি। তাই আমাদের ছাত্রত্ব শেষ হয়নি। কমিটিতে থাকা বাকি ৪ জনের এখনো অনার্স-মাস্টার্স শেষ হয়নি।

তিনি বলেন, ‘মানবিক বাংলাদেশ গড়তে আমাদের কমিটি কাজ করে যাবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা করে ৭ দিনের কেন্দ্রে ভেতর পাঠানো হবে। পূর্ণাঙ্গ কমিটির পর কাউন্সিলের মাধ্যমে হল কমিটি গঠণ করা হবে।’