Image description

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক এমপি ও মেঘনা ব্যাংকের চেয়ারম্যান এইচ এন আশিকুর রহমানের জন্য পর্ষদ সভায় যোগ দেওয়ার নিয়ম শিথিল করল বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষ বিবেচনায় একমাত্র তিনি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় অনলাইনে অংশ নেওয়ার অনুমোদন পেয়েছেন। এর বাইরে অন্য সব পরিচালককে সশরীরে পর্ষদ সভায় উপস্থিত হতে হবে। যে কোনো কারণেই হোক, কেউ যদি টানা তিনটি বৈঠকে অনুপস্থিত থাকেন, স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাঁর পরিচালক পদ চলে যাবে। এরই মধ্যে এ কারণে বিভিন্ন ব্যাংকে অনেকেই পরিচালক পদ হারিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রভাব শুরুর পর ২০২০ সাল থেকে অনলাইনে বৈঠক করার সুযোগ পাচ্ছিলেন পরিচালকরা। পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক ছাড়াও পর্ষদের নির্বাহী, অডিট ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা ভিডিও কনফারেন্স এবং হাইব্রিড পদ্ধতিতে করা যেত। হাইব্রিড পদ্ধতি হলো– কিছু সদস্য সরাসরি এবং কিছু সদস্য ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেওয়াকে বোঝায়। সরকার পতনের পর গত ১৮ সেপ্টেম্বর এক নির্দেশনার মাধ্যমে কেউ অনলাইনে সভায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে জানানো হয়। এই নিয়ম করার পর গত সরকারের পতনের পর পলাতক পরিচালকদের অনেকেই পদ হারিয়েছেন।

জানা গেছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বরের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ-সংক্রান্ত সার্কুলার জারির পর এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবু জাফর মোহাম্মদ শফি উদ্দিনসহ অনেকেই অনলাইন মিটিং করার সুযোগ চেয়েছিলেন। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক তাতে সায় দেয়নি। যে কারণে এরই মধ্যে আবু জাফর মোহাম্মদ শফি উদ্দিন পলাতক অবস্থায় পদত্যাগ করেছেন। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলমসহ অনেকেই পদত্যাগ করেছেন। এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংক ১১টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করে দিয়েছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে গত সপ্তাহে এইচ এন আশিকুর রহমানকে বিশেষ বিবেচনায় অনলাইন বৈঠকে অংশ নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ এবং রংপুর থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর বয়স এখন ৮৩ বছর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা সমকালকে বলেন, আশিকুর রহমান তাঁর স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে দেশের বাইরে আছেন। তাঁর চিকিৎসার সব ধরনের ডকুমেন্ট যাচাই করে সম্পূর্ণ মানবিক কারণে বিশেষ বিবেচনায় তাঁকে অনলাইন মিটিংয়ে অংশ নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। 
আর কেউ এ অনুমোদন পাননি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গত ১৮ সেপ্টেম্বরের নির্দেশনায় বলা হয়, বর্তমানে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসায় এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ব্যাংকের নিয়মিত কার্যক্রম যথাযথভাবে চালু রাখতে অনলাইনে পর্ষদ সভার সুযোগ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হলো। অবশ্য শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন নয় এ রকম ব্যাংকের বিদেশি পরিচালকরা অনলাইনে যুক্ত হয়ে পরিচালনা পর্ষদ এবং পর্ষদের সহায়ক কমিটির সভা করতে পারবেন।