Image description

দেশে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বড় ব্যর্থতা দেখছেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। ‘সরকারের একটা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আছে, একটা আইন শৃঙ্খলা-বাহিনী আছে, তারা কী করল? এই প্রশ্ন করেন তিনি।

ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা রাজধানীর মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যকাণ্ড বর্বরতার সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, “ভিডিওটি দেখতে পারিনি। একটা পর্যায়ে গিয়ে আমার মনে হয়েছে, আমার পক্ষে এটা দেখা সম্ভব নয়।”

একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শো অনুষ্ঠানে রুমিন ফারহানা এসব কথা বলেন।

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ফারহানা বলেন, “রাতের অন্ধকারে নয়, প্রকাশ্যে দিবালোকে সোহাগকে হত্যা করা হয়েছে। একজনও এগিয়ে এলো না কেন? ঘটনাস্থল থেকে ১০০ গজ দূরে আনসার ক্যাম্প। তখন তারা কী করছিল?” 

“বাংলাদেশে আমরা পছন্দ করি না করি একটা সরকার আছে। নির্বাচিত হোক বা না হোক, একটা সরকার আছে। সেই সরকারের একটা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আছে। একটা আইন শৃঙ্খলা-বাহিনী আছে। তারা কী করল?” 

“এই প্রশ্নগুলোর জবাব সরকারকে দিতে হবে” বলেন রুমিন ফারহানা।  

তিনি আরো বলেন, “আপনি একজন অথর্ব স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পালবেন। আমি ওনাকে অথর্ব বলছি, তার হাজারটা কারণ আছে। তিনি একমাত্র উপদেষ্টা, যিনি গুলির ম্যাগাজিনকে চশমা বা মোবাইলের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। চশমা বা মোবাইল যেমন অতি গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু হার্মলেস একটা আইটেম। গুলিও সম্ভবত ওনার কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ, বাট নট দ্যাট হার্মফুল একটা আইটেম। ওনার ব্যর্থতার পরিচয় উনি দিয়েছেন প্রথম দিন থেকেই।” 

তিনি বলেন, “এ বছর প্রথম চার মাসে ১৩০০ এর কাছাকাছি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ২০২০ সাল থেকে ২৪ পর্যন্ত এই সংখ্যাটি ছিল কখনো ৫৫, কখনো ৫৪, কখনো ৫১, কখনো ৪৭। ২০২৫ এ এসে প্রথম চার মাসে এটা ১৩০০ অতিক্রম করল।”

“বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, এটা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই” বলে মন্তব্য রুমিন ফারহানার।

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক প্রশ্ন রেখে বলেন, “গত নয় মাস ধরে আমরা কী ধারাবাহিকভাবে দেখিনি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কীভাবে অবনতি হয়েছে? আমরা কী দেখিনি ১০০টির ওপর মাজার ভাঙা হয়েছে? আমরা দেখেছি নারী ফুটবলারদের ফুটবল খেলা বন্ধ করার পাঁয়তারা হয়েছে। আমরা দেখেছি নারীর পোশাকের ওপর পুলিশিং হয়েছে। আমরা দেখেছি মব হয়ে বিভিন্ন বাড়িতে ঢুকে গিয়ে এক্স আওয়ামী লীগ, এক্স এমপির পরিচয়ে, এমনকি একজন সাবেক এমপির সাবেক স্ত্রীর বাড়িতেও লোকজন ঢুকে গেছে। আমরা কী এই ঘটনাগুলো দেখিনি? আমরা দেখেছি। এর মধ্যে কয়টা ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? আমরা দেখেছি নারীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি করার পরে যখন গ্রেপ্তার হয়েছেন এক ব্যক্তি, তাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য ফুলের মালা নিয়ে লোকজন থানার বাইরে অবস্থান করেছে।”

সোহাগ হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ভিডিওতে পরিষ্কার দেখা গেছে কে এই মাথা থেতলে দিয়েছে, তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? সাধারণত আর্মস দেখলে লোক সরে যায়। পাথর, লাঠি এগুলো দেখলে তো মানুষ সরে না। তাহলে ওই লোকগুলোকে কারা কন্ট্রোল করছিল, যখন সোহাগের ওপর অ্যাটাক হয়। কারা চারপাশের মানুষদের ভীতির মধ্যে রেখেছিল? এখনো গণমাধ্যমে কথা বলতে গেলে প্রত্যক্ষদর্শীরা নাম গোপন রাখার শর্তে কথা বলছেন। তার মানে কী? আওয়ামী লীগের সময় যুবলীগ, ছাত্রলীগ বিশ্বজিতকে পিটিয়ে মেরেছে। তখন তো সরকার আওয়ামী লীগের। প্রত্যক্ষদর্শীরা হয়তো অনেকে মুখ খুলতে ভয় পেয়েছিল যে সরকার আওয়ামী লীগের। এই সরকার কাদের, যে খুনির ব্যাপারে মুখ খুলতে সাধারণ মানুষ ভয় পাচ্ছে? সেই খুনি যার হাতে কোনো ফায়ার আর্মস নাই, যার হাতে কেবল ইটের টুকরা, পাথরের টুকরা আছে। সেই খুনির ব্যাপারে মুখ খুলতে কেন ভয় পাচ্ছে? কারা ভয় দেখাচ্ছে? সরকার কেন যাকে ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে তাকে গ্রেপ্তার করছে না?”

শীর্ষনিউজ