
জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গত ৫ আগস্টে আমাদের লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদের পতন। এবার আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশের পুনর্গঠন। ৫ আগস্ট আমাদের লক্ষ্য ছিল গণভবন। এবার আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সংসদ ভবন। আমরা গণভবন জয় করেছি, এবার আমরা জাতীয় সংসদ ভবনও জয় করব। কিন্তু তার আগে কথা আছে। নির্বাচনের আগে অবশ্যই সংস্কার ও বিচারের সুরাহা হতে হবে।
রোববার সন্ধ্যায় রাজশাহীতে জুলাই পথযাত্রা শেষে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, নির্বাচনের আগে অবশ্যই সংস্কার ও বিচার সুরাহ হতে হবে। গণহত্যাকারী খুনি হাসিনার বিচার আমরা দেখতে চাই, সংস্কার দেখতে চাই, নতুন সংবিধান দেখতে চায়। এ প্রজন্ম বাংলাদেশের জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি নিচ্ছে একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান মানুষকে উপহার দিবে, যে সংবিধান বাংলাদেশের জনগণের অধিকার নিশ্চিত করবে, ইনসাফ নিশ্চিত করবে। স্বৈরতন্ত্র এবং পরিবারতন্ত্রের অবসান ঘটাতে হবে এই বাংলাদেশ থেকে। মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে আমরা নতুন বন্দোবস্ত গড়ে তুলব।
রাজশাহী ঐতিহ্যের নগরী উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, রাজশাহী ঐতিহ্যের নগরী। রাজশাহী জ্ঞানবিজ্ঞান ও সংস্কৃতির নগরী। এই পদ্মার পারে রাজশাহী যুগ যুগ ধরে টিকে ছিল। মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী এই রাজশাহী থেকে ফারাক্কা লংমার্চ শুরু করেছিলেন। আমরা ঘোষণা করছি, যদি নদীর হিস্যা, পানির হিস্যা বুঝে নিতে হয়। আমাদের সীমান্তকে রক্ষা করতে হয়। তাহলে আমরা লংমার্চ শুরু করব এই রাজশাহী থেকে।
সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘আপনারা প্রস্তুত হোন। ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে দেখা হবে। আমরা জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র আদায় করে ছাড়ব। যারা বলে, জুলাই কেবল আবেগের বিষয়। যারা বলে, জুলাইকে কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি দেয়ার দরকার নেই, তাদেরকে দেখিয়ে দিতে হবে বাংলাদেশের জনগণ আবারও মুজিববাদ ও মুজিববাদী সংবিধানের বিরুদ্ধে একত্রিত হবে। যারা জুলাইকে সংবিধানে জায়গা দিতে চায় না, কোনো আইনি কাঠামোতে জায়গা দিতে চায় না। তারা মুজিববাদের রাস্তা তৈরি করতে চায়। তারা মুজিববাদের নতুন পাহারাদার হিসেবে নিজেদের ঘোষণা দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, রাজশাহীতে কর্মসংস্থান থাকবে। শিক্ষা থাকবে। রাজশাহীতে শিল্পের বিকাশ ঘটাতে হবে। উন্নয়ন মানে কেবল ঢাকার উন্নয়ন নয়। উন্নয়নের বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। এটার জন্যই সংস্কার, এটার জন্যই জুলাই পদযাত্রা। এই পদযাত্রা নতুন দেশ গঠনের যাত্রা। আমরা নতুন দেশ উপহার দিব বাংলাদেশের জনগণকে।
রাজশাহী মহানগরীর প্রধান সমন্বয়কারী মোবাশ্বের আলীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্ত শারমিন, সদস্য সচিব আখতার হোসাইন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ মুখ্য, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা।
এর আগে বিকেলে রাজশাহী মহানগরীর রেল গেট থেকে জুলাই পদযাত্রা শুরু করে। পরে পদযাত্রীটি মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এক পথসভায় যোগ দেয়।