
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেছেন, কেউ ইসলাম ঐকমত কায়েম করতে চায়, কেউ অ্যামেরিকান গণতন্ত্রবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। কেউ ভারতের পক্ষে, কেউ ভারতের বিপক্ষে। দুইভাগে ভাগ হয়ে গেছে বাংলাদেশ। দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে গেছে। আগামী নির্বাচনে কী অবস্থা হবে? কারা ভোট পাবে? কথা ক্লিয়ার- যারা সুশাসন কায়েম করতে পারবে তারা ভোট পাবে। যারা সুশাসন কায়েম করতে পারবে না, তারা ভোট পাবে না। ক্লিয়ারকাট কথা।
রোববার বিকালে রাজশাহীতে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজশাহী মহানগর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
ইসলামী আন্দোলনকে ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ বলার প্রতিবাদ জানিয়ে দলটির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আজকে আমাদেরকে তারা বলে আমরা নাকি আওয়ামী লীগের দালাল। আমরা নাকি আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করেছি। রাজনীতি করবেন, জেনেশুনে রাজনীতি কইরেন। বক্তব্য দেবেন, জেনেশুনে দিয়েন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, আজ পর্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ কোনো জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি।
তিনি বলেন, ‘২০১৪-এর নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন অংশগ্রহণ করেনি। ’১৮-এর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, বিধায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তখনও গণভবনে যায় নাই। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিন্তু গণভবনে গিয়েছেন। ইসলামী আন্দোলন অংশগ্রহণ করেছে, কিন্তু শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করে নাই। ২০২৪-এর নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করেনি। বরং, ’১৮-এর নির্বাচন যেটা সবাই প্রত্যাখ্যান করেছে, বিএনপি সেই অবৈধ সংসদে গিয়েছে। তারা আওয়ামী লীগের দালাল, নাকি আমরা দালাল?’
দেশের রাজনীতিতে দুটি রেখা স্পষ্ট জানিয়ে ফয়জুল করিম বলেন, ৯২ পার্সেন্ট মুসলমানের দেশ বাংলাদেশ। যদি আপনি মনে করেন সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে সরকার নির্বাচিত হয়, তাহলে এ দেশে তো মুসলমানের সরকার নির্বাচিত হওয়া উচিত ছিল। অন্য কোন সরকার নির্বাচিত হওয়াটা অলীক ছিল। কিন্তু এখানে উল্টো হয়ে গেছে। এখন যে রাজনীতি চলছে। তা হলো- একটা ইসলামপন্থীদের রাজনীতি, আর ইসলামের বিপরীত রাজনীতি। দুইটা রেখা সৃষ্টি হয়ে গেছে অলরেডি।
আগামীর দেশ হবে ইসলামের উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামীর দেশে ইসলাম ক্ষমতায় যাবে, ইনশাল্লাহ। কোনো চোর, বাটপার, গুণ্ডা, চাঁদাবাজ, মাস্তান এবং খুনিদেরকে এ দেশের মানুষ আর ক্ষমতায় নেবে না। যেখানে জুলুম থাকবে না। অত্যাচার, অবিচার, খুন, লুট, চাঁদা থাকবে না, খুন হবে না, গুম হবে না। মা-বোনেরা রাস্তায় নামবে, ইজ্জতহানি হবে না। বাংলাদেশের এই জনগণ গোলামি চুক্তিতে আবদ্ধ হবে না।
‘আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ইসলামপন্থীদের ঐক্য ভাবনা উলামায়ে কেরাম ও তাওহীদি জনতার করণীয়’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি শেখ মুহাম্মদ নুরুন নাবী। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগরের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা হোসাইন আহমদ।