Image description
চলমান রাজনীতি

গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রাজনীতির মাঠে বিএনপিকে এখন সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে সময় যত গড়াচ্ছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দলটির সামনে নিত্যনতুন ইস্যু তৈরি হচ্ছে। সবকিছু বিবেচনায় বিএনপির সামনে এখন পাঁচটি চ্যালেঞ্জ বা কঠিন পরীক্ষা এসে হাজির হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছে- জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি; দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটানো; পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি; সংস্কার নিয়ে চূড়ান্ত ঐকমত্যে না পৌঁছানো এবং ইসলামী দলগুলোর সম্ভাব্য জোট।

এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে যুগপৎ আন্দোলনের মিত্রদের পাশে চায় বিএনপি। এ লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে যুগপতের শরিক দল ও জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির নেতারা। প্রয়োজনে নির্বাচনে আসন ভাগাভাগির মাধ্যমে হলেও মিত্রদের আস্থায় রাখবে বিএনপি। পরিস্থিতি বুঝে অন্য দলগুলোকেও পাশে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাশাপাশি মূলধারার ইসলামী দলগুলোর সম্ভাব্য জোট নিয়েও পর্যবেক্ষণ করছে বিএনপির হাইকমান্ড। বিএনপি ও যুগপতের শরিক সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব জানা গেছে।

জাতীয়, না স্থানীয় নির্বাচন বিতর্ক:

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয়। এরপর বিভিন্ন মহল থেকে রাষ্ট্রের অতিপ্রয়োজনীয় খাতে সংস্কারের দাবি ওঠে। তা ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা শুরু থেকেই বলছিলেন সংস্কার শেষে যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই তারা জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করবেন। প্রথমে তিনি বলেছিলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে। তবে অনেক দল সরকারের সেই ঘোষণায় আস্থা রাখতে পারেনি। একপর্যায়ে কোরবানির ঈদের আগের দিন ৬ জুন প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই মাসেই একটি ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করে জাতির সামনে উপস্থাপনের আশাবাদ প্রকাশ করেন। নির্বাচনের মাস নির্ধারণ নিয়ে দলগুলোর মাঝে ব্যাপক সমালোচনা হয়।

সমালোচনার মধ্যেই গত ৯ জুন চার দিনের সফরে যুক্তরাজ্য যান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে ১৩ জুন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন তিনি। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। এ নিয়েও দলগুলোতে অস্বস্তি রয়েছে। কারণ নির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের দিনক্ষণ উল্লেখ করা হয়নি। তা ছাড়া বিএনপি ও যুগপত আন্দোলনের মিত্র দলগুলো বাদে অন্যান্য দল জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি তুলেছে। সূত্রমতে, ঢাকাসহ বিভিন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন ও সরকার। অর্থাৎ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে নাকি স্থানীয় নির্বাচন আগে, সেই ইস্যুর সমাধান এখনো হয়নি, যা বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ মনে করা হচ্ছে।

দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল: সময় যতই যাচ্ছে, কমিটি গঠন নিয়ে মতবিরোধ, আধিপত্য বিস্তার, দখলসহ নানা কারণে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল আরও প্রকাশ্য হচ্ছে। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর এরই মধ্যে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এবং হামলা-সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী খুন হয়েছেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য। একই সঙ্গে দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোর বিএনপির হাইকমান্ড। ১১ মাসে প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজারের মতো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। অর্থাৎ দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সামলানোটাও বিএনপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কালবেলাকে বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, দলের নামে যে কেউ যে কোনো ধরনের অনৈতিক, অবৈধ, সন্ত্রাসী, সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ড করবে, সে রেহাই পাবে না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এসব ব্যাপারে একেবারে জিরো টলারেন্স। তাৎক্ষণিক তদন্ত করে এবং ভিডিও-অডিও সবকিছু পরীক্ষা করে যদি দেখা যায় কেউ দায়ী, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিন্দুমাত্র বিলম্ব করছি না। রিজভী বলেন, সারা বাংলাদেশে কোথায় কারা কী করছে খবর নিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এরই মধ্যে ৪-৫ হাজার বিএনপি ও বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই ক্ষেত্রে বিএনপি এবং এর নেতারা আপসহীন।

আলোচনার নতুন ইস্যু পিআর পদ্ধতির নির্বাচন:

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন, নির্বাচনের পদ্ধতি, সংস্কারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে চরম অস্পষ্টতা, অনাস্থা ও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে। এরই মধ্যে নতুন ইস্যু হিসেবে আলোচনায় রয়েছে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন। তবে দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি পিআর পদ্ধতির ঘোর বিরোধী। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বেশকিছু রাজনৈতিক দল এই পদ্ধতির পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। ফলে পিআর পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর পক্ষে-বিপক্ষের বক্তব্য রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এরই মধ্যে সংস্কার, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে গত ২৮ জুন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। ওই সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ বিভিন্ন ইসলামী দলের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। ওই সমাবেশে অংশ নেওয়া দলগুলো নির্বাচন ও সংস্কার—দুই বিষয়ে বিএনপির অবস্থানের বিপরীতে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করছে। সেদিন পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবিতে গণভোট দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর)।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৫৫টি। এর মধ্যে বিভিন্ন কারণে চারটি দলের নিবন্ধন বাতিল এবং আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত রয়েছে। ফলে ৫০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১৮টি দল পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের পক্ষে। বিপক্ষে অবস্থান ২৮টি দলের। চারটি দল তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি। কিছু দল আংশিকভাবে এই পদ্ধতির পক্ষে। বিপক্ষে থাকা দলগুলো মূলত বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী। এর বাইরে জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) পিআর পদ্ধতির পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছে।

সংস্কার নিয়ে চূড়ান্ত ঐকমত্যে না পৌঁছানো: দায়িত্ব গ্রহণের পর অন্তর্বর্তী সরকার সম্ভাব্য সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে প্রথমে ছয়টি এবং পরে আরও পাঁচটিসহ মোট ১১টি বিষয়ে কমিশন গঠন করে। কমিশনগুলোর সুপারিশমালা এরই মধ্যে পৃথকভাবে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ের ছয়টি কমিশনের সুপারিশমালা নিয়ে তখনই জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তাদের সুপারিশের কোনোগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো সবাই একমত কিংবা ভিন্নমত থাকলে তা কোথায় এবং আলোচনার মাধ্যমে মতভেদ দূর করার চেষ্টা এখনো চলছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় পর্যায়ে নবম দিনের আলোচনায় ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৈঠকে ঢাকার পাশাপাশি বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। এ ছাড়া সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের বিদ্যমান বিধান সংশোধনের বিষয়ে দলগুলো সম্মতি জানিয়েছে। এ পর্যন্ত সংবিধানের ৭০নং অনুচ্ছেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা-সম্পর্কিত বিধান এবং বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ বিষয়ে আলোচনা নিষ্পত্তি হয়েছে। আরও কিছু বিষয়ে অনৈক্য থাকায় আগামী ৭ জুলাই ফের আলোচনার দিন ধার্য করা হয়েছে।

ইসলামী দলগুলোর সম্ভাব্য জোট: ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ইসলামী দলগুলো চায় একক প্রার্থী ঘোষণা করতে। সেই লক্ষ্যে নির্বাচনী জোট কিংবা বৃহত্তর সমঝোতার দিকে এগোচ্ছে দলগুলো। এ নিয়ে পর্দার আড়ালে চলছে নানামুখী তৎপরতা। দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন ইসলামী দলকে একই প্ল্যাটফর্মে আনতে কাজ করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। সর্বশেষ গত ২৮ জুন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সমাবেশে কয়েকটি ইসলামী দলের নেতাদের বক্তব্যে নির্বাচনে জোটবদ্ধভাবে অংশ নেওয়ার কথা প্রকাশ পায়। এটাকে নির্বাচন সামনে রেখে ইসলামপন্থি দলগুলোর একই প্ল্যাটফর্মে আসার প্রস্তুতিপর্ব হিসেবেও দেখা হচ্ছে। মূলত যেসব দলের নিবন্ধন এবং ভোটব্যাংক রয়েছে, সেসব দলই এই সমঝোতা প্রক্রিয়ায় থাকছে। অর্থাৎ আটটি ইসলামী দলের মধ্যে সমঝোতা হবে। মধ্যপন্থি দল যেমন এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপিকেও জোটে আনার ক্ষেত্রে আলোচনা চলছে। গত মঙ্গলবার জামায়াত ও গণঅধিকার পরিষদের শীর্ষ নেতারা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে নির্বাচনী জোট, পিআর পদ্ধতির নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তা ছাড়া আগামী নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এলে ছোট দলগুলোর গুরুত্ব কমে যাবে- এমন আশঙ্কা এবং সংস্কার বিষয়ে তাদের অবস্থান ইসলামপন্থি দলগুলোকে জোটবদ্ধ হওয়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

যুগপতের মিত্রদের নিয়ে বৈঠক অব্যাহত: আগামী নির্বাচন ঘিরে যে কোনো সংকট মোকাবিলায় অতীতের মতো যুগপৎ আন্দোলনে থাকা মিত্র দলগুলোকে পাশে চায় বিএনপি। সেজন্য আগামী নির্বাচনে তাদের ‘যৌক্তিক’ সংখ্যক আসন ছেড়ে দেবে। এ ক্ষেত্রে ‘যোগ্যতা’ ও ‘গ্রহণযোগ্যতা’ অনুযায়ী কোনো কোনো নেতাকে সংসদের উচ্চকক্ষেও স্থান দেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে দলটির নীতিনির্ধারকদের। বিএনপি ও সংশ্লিষ্ট সূত্র এমনটি জানিয়েছে। বিএনপি ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে মিত্রদের ৫৯টি আসন ছেড়েছিল। এবারও যুগপৎ আন্দোলনের মিত্রদের সর্বোচ্চ অর্ধশত আসনে ছাড় দিতে পারে দলটি।

বিএনপি যা বলছে: ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়া না হওয়া, পিআর পদ্ধতি অনুসরণ করাসহ নিত্যনতুন বিষয় সামনে আসছে। বিএনপি এসব বিষয়ে কী ভাবছে বা কী করবে, সে প্রসঙ্গে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, ‘দেশের জন্য টক্সিক (বিষাক্ত) পরিবেশ তৈরি করা ভালো না। আমাদের মাঝে পরস্পরের প্রতি সম্মানবোধ না থাকলে হাজার সংস্কার (রিফর্ম) করলেও কোনো লাভ হবে না।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কথা বলার অধিকার রয়েছে, কিন্তু সিদ্ধান্ত নেবে দেশের জনগণ। আমরা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক মূল্যবোধে বিশ্বাস করলে আগামী নির্বাচনে এটা (পিআর) জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে। জনগণ যদি ম্যান্ডেট দেয়, তারা সেটি করুক আমাদের কোনো সমস্যা নেই। গণতন্ত্র হলো জনগণের মতের প্রতিফলন। সেটি যদি কেউ ফেস না করে নিজের সুবিধামতো কিছু করতে চায়, তাহলে তো সেটি গণতন্ত্র হলো না। কোনো সংস্কার বা পরিবর্তন করতে হলে সংসদের মাধ্যমে এবং গণতন্ত্রের দ্বারা করতে হবে।’

সংস্কার প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, ‘বিএনপি অনেক বিষয়ে একমত হয়েছে। আমরা একটা কথা বারবার বলছি, সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না, আমরা বাকশাল করতে যাচ্ছি না। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেসব বিষয়ে সংস্কার হবে। এর বাইরে যেগুলো থাকবে, প্রতিটি দল জনগণের কাছে গিয়ে মতামতের মাধ্যমে সেটা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের সঙ্গে রাজপথে ছিল, তাদের সঙ্গে আমরা আবার কথাবার্তা বলছি। আমাদের ঐক্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু নির্বাচন বলে কথা নয়, ৩১ দফা ও সংস্কারের বিষয়ে যে ঐকমত্য, এটা আমরা কীভাবে আগামী দিনে বাস্তবায়ন করব। নির্বাচন-পরবর্তী জনগণ যদি আমাদের রায় দেয়, সবাই মিলে এটা বাস্তবায়ন করতে হবে। আমার মতের সঙ্গে যে কেউ দ্বিমত পোষণ করতে পারে। সেটাকেও সম্মান জানাতে হবে।’