
ভোটের মাঠে ব্যাপক সক্রিয় জামায়াতে ইসলামী। অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত সময় ধরে জাতীয় নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে দলটি। ইতোমধ্যে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৬টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ঠিক করা হয়েছে। জামায়াতের মূল লক্ষ্য আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইতিহাস সৃষ্টি করা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় দলীয় ও সামাজিক কর্মকা চালিয়ে যাচ্ছেন। করছেন গণসংযোগ, সভাসমাবেশ। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেদের ঘর গুছিয়ে আনছে দলটি। দলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ আসনে সভা ও সমাবেশ করছেন। বাজারে, গ্রামে, পাড়া মহল্লায়, পথেঘাটে গণসংযোগ করছেন। হ্যান্ড মাইক দিয়ে পাড়া মহল্লায় সংগঠনটির কার্যক্রম তুলে ধরছেন। আসনে আসনে পোস্টার, ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে নিজেদের উপস্থিতির জানান দিচ্ছেন। কম পরিচিত মুখ যেসব আসনে সেসব আসনের নেতারা মাঠে বেশি সক্রিয়। দলের পরিচিত ও শীর্ষ নেতাদের আসনগুলোতেও টানানো হয়েছে ব্যানার-পোস্টার। রমজানের ঈদ ও কোরবানির ঈদে প্রার্থী তালিকায় নেতারা ব্যানার টাঙিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সামাজিক অনুষ্ঠান- বিয়ে, ওয়াজমাহফিলে অংশ নিচ্ছেন সম্ভাব্য সংসদ প্রার্থীরা। উন্নয়নের নানান প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন। রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে কী কী উদ্যোগ নেবে সেটিও জানান দিচ্ছেন নেতারা। তবে জাতীয় নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কার করতেই হবে। একই সঙ্গে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে বলে জানান দলের শীর্ষ নেতারা। এ ছাড়া বিগত সরকারের সূত্র জানায়, জামায়াত এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। ৩০০ আসনেই প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। প্রাথমিকভাবে ২৯৬ জনের তালিকা প্রস্তুত করেছে। কোনো কোনো আসনে একাধিক প্রার্থীর নামও রয়েছে। এই তালিকায় যাদের নাম এসেছে তাদের মাঠপর্যায়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। নির্বাচনের জন্য তারা মাঠ প্রস্তুত করছেন। কোথাও কোনো প্রতিবন্ধকতা আছে কি না সেটিও দেখা হচ্ছে। ’২৪-এর গণ অভ্যুত্থানের পরপরই জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্ব ও কেন্দ্রীয় নেতারা নিজ নিজ এলাকায় সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের জনবান্ধব কর্মসূচি দিতে কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে। এলাকার সমস্যা সমাধানে কাজ করা, সামাজিক ও মানবিক কাজে অংশগ্রহণ এবং সংগঠনের পরিচিতি তুলে ধরতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া এলাকায় সন্ত্রাস ও কালো টাকা রুখতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার কথাও বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দলীয় সভাসমাবেশ, দাওয়াতি কার্যক্রম, গণসংযোগ সবই আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম। তাই আলাদা করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার হয় না। আমাদের সাংগঠনিক নিয়মিত কার্যক্রমের অংশই নির্বাচনি কার্যক্রম।
হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, নির্বাচন কখন হবে? কোন সময়ে হবে? নির্বাচনের পরিবেশ কেমন থাকবে? লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়েছে কি না, সামগ্রিক বিষয়ে চিন্তা করে নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, বিগত নির্বাচনে জোট করেই নির্বাচন হয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনেও জোট হতে পারে। জোট নিয়ে ইসলামি দলসহ অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে তখন কোন পদ্ধতিতে জোট হবে, কে কোন আসনে ছাড় দেবে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে।