
দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে দলীয় প্রতীকসহ নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এ উপলক্ষ্যে দলের পক্ষ থেকে দেশ-বিদেশের সব শুভাকাঙ্ক্ষী, সুধী, প্রবাসী এবং গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন দলের সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাত পৌনে ৮টায় রাজধানীর বসুন্ধরায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের পর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের ভিত্তিতে এবং নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’সহ আমাদের নিবন্ধন আজ আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, গত ১ জুন আপিল বিভাগ সর্বসম্মত রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দেন। পরে নির্বাচন কমিশন ৪ জুন নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় এবং ২৪ জুন তা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করে।
গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। এই জয় ন্যায়বিচারের, এই জয় গণতন্ত্রের। মহান আল্লাহ তায়ালার খাস মেহেরবানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’সহ নিবন্ধন আদালতের রায়ের সূত্রে আজকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে আমরা অফিসিয়ালি ফিরে পেলাম। এজন্য মহান রব আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে প্রাণ খুলে তৃপ্তির সঙ্গে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি আলহামদুলিল্লাহ।
তিনি বলেন, আপনারা সমাজের সচেতন, বিবেকবান মানুষ। আপনাদের মাধ্যমে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের চিন্তা-চেতনা, মন-মানসিকতা, রাজনীতিকরণ, ভোটাধিকারসহ সবকিছুর অভিব্যক্তি ও আকাঙ্ক্ষা জাতির কাছে দেশ-বিদেশে প্রতিফলিত হয়। এজন্য আপনাদের বলা হয় জাতির বিবেক। কীভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মতো একটি গণতান্ত্রিক নিয়মতান্ত্রিক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের ওপর পতিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার জুলুম চালিয়েছিল, আমাদের অধিকারগুলো কীভাবে কেড়ে নিয়েছিলো সব ইতিহাস দেশবাসীর জানা আছে।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের জানাতে চাই, ২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশের নিবন্ধন আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনে বৈধভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধিত হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর আদালতের মাধ্যমে আমাদের এই অধিকারকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। ২০০৯ সালের একটি রিট পিটিশনের সূত্র ধরে ২০১৮ সালে আদালতের এক আদেশে আমাদের নিবন্ধন বাতিল করেছিল। এই দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে আমাদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক এবং আইনি ও সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য এই আইনি লড়াই আমাদের দেশের বরেণ্য আইনজীবীরা সহযোগিতা করেছেন; গণমাধ্যমের কর্মীরা সহযোগিতা করেছেন। ন্যায় ও ইনসাফের পক্ষে সংবাদ পরিবেশন করে জাতির সামনে আপনারা বিবেককে কাজে লাগিয়ে সাংবাদিকতার পেশার মহত্ত্বকে আপনারা তুলে ধরেছেন এবং বহাল রেখেছেন সেজন্য আপনাদের সবাইকে শুকরিয়া ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।