Image description

লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সফল বৈঠকের পরে পুরোদমে নির্বাচনি কর্মকাণ্ডে মনোনিবেশ করেছে রাজনৈতিক দলগুলো।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নিজেদের ঘর গোছানোর পাশাপাশি ভোটারদের মন জোগাতে নানামুখী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। দেশের উপকূলীয় জেলা বরগুনার চিত্রও এর ব্যতিক্রম নয়।

ছয়টি উপজেলা ও চার পৌরসভা নিয়ে গঠিত বরগুনায় সংসদীয় আসন মাত্র দুটি। যদিও এর আগে জেলায় তিনটি সংসদীয় আসন ছিল। ভৌগলিক ও অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে সেটাই ছিল যৌক্তিক। ২০০৮ সালে এক/এগারো সরকার আওয়ামী লীগকে বিশেষ সুবিধা করে দিতে দেশের নির্বাচনি সীমানা পুনর্বিন্যাস করে। তখন বরগুনার আসন সংখ্যা তিনটি থেকে কমিয়ে দুটি করা হয়। ফলে এখানকার রাজনীতির হিসাব-নিকাশ অনেকটা পাল্টে যায়। যদিও স্বাধীনতার পর থেকে অধিকাংশ সময়ই জেলার কর্তৃত্ব ছিল আওয়ামী লীগের হাতে। বিশেষ করে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের আমলে দশম থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নজিরবিহীন কারচুপি, প্রহসন, রাতের ভোট, বিনা ভোট ও ডামি ভোটের কারণে আরো পাকাপোক্ত হয় তাদের অবস্থান।

তবে জুলাই বিপ্লবের মুখে আওয়ামী লীগের পতন ও শেখ হাসিনার ভারতে পলায়নের ফলে পাল্টে যায় এখানকার রাজনৈতিক চালচিত্র। বর্তমানে মাঠছাড়া আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসর হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টি। এ সুযোগে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্য দলগুলো।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় ছয় মাস আগে জেলার দুটি আসনেই দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে জামায়াতে ইসলামী। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও ভোটারদের মন জোগাতে কাজ শুরু করেছেন। আগামী বছর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারেÑ এমন সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় এখন পুরোদমে মাঠে নেমে পড়েছে বিএনপি। তবে এখন পর্যন্ত জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ অন্যান্য দলের তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। এসব দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে তারা দল গোছানো ও যোগ্য প্রার্থী খোঁজার কাজ করছেন। নির্বাচনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হলে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।

এদিকে আওয়ামী লীগকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে আসন কমানোয় উন্নয়নবঞ্চিত বরগুনার মানুষ, দীর্ঘদিন ধরেই তিনটি আসনে ফিরে আসার দাবি জানিয়ে আসছে। এ লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে। ইতোমধ্যে আসন বাড়ানোর যৌক্তিকতা তুলে ধরে তারা নির্বাচনবিষয়ক সংস্কার কমিশন ও নির্বাচন কমিশনে পৃথক পৃথক স্মারকলিপি দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে এক এগারো সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচনি আসনবিন্যাস বাদ দেওয়া হতে পারে। এমনটা হলে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার আসন সংখ্যা একটি বেড়ে তিনটি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে আসনভিত্তিক প্রার্থী তালিকা পরিবর্তন হবে এবং পাল্টে যাবে ভোটের হিসাব-নিকাশ।

বরগুনা-০১ আসন (সদর, আমতলী ও তালতলী)

বরগুনা সদর, আমতলী ও তালতলী উপজেলা নিয়ে বরগুনা-১ আসন। ২০০৮ সালে নতুন করে আসন বিন্যাসের আগে সদর উপজেলাটি বরগুনা-১ আসনের অংশ ছিল এবং আমতলী ও তালতলী উপজেলা নিয়ে ছিল বরগুনা-৩ আসন। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরগুনা-১ আসনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. দেলোয়ার হোসেন এবং বরগুনা-৩ আসনে প্রথমে শেখ হাসিনা এবং উপ-নির্বাচনে বিএনপির মো. মতিয়ার রহমান তালুকদার সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হয়েছিলেন।

নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটিতে আওয়ামী লীগের ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এবং দ্বাদশ সংসদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী গোলাম সরোয়ার টুকু নির্বাচিত হন। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর পাল্টে গেছে এখানকার রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ। আওয়ামী সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, অত্যাচার ও সাবেক এমপি শম্ভুর ছত্রছায়ায় বরগুনায় মাদক কারবার ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় মানুষ আওয়ামী লীগ থেকে একেবারে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সে কারণে বিএনপিসহ অন্যান্য সমমনা রাজনৈতিক দলের প্রতি আস্থা বেড়েছে মানুষের।

আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এই আসনে এখন পর্যন্ত বিএনপির ছয়জন মনোনয়নপ্রত্যাশী কাজ শুরু করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা, বিএনপির কেন্দ্রীয় শ্রমবিষয়ক সহ-সম্পাদক ফিরোজ-উজ-জামান মামুন মোল্লা, বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ফজলুল হক মাস্টার, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব গাজী তৌহিদুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. রেজবুল কবির এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান।

এর মধ্যে নজরুল ইসলাম মোল্লাকে ২০১৮ সালে সাবেক সংসদ সদস্য মতিউর রহমান তালুকদারের সঙ্গে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। পরে বিএনপি মতিউর রহমানের মনোনয়ন চূড়ান্ত করলে নজরুল মোল্লা তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন।

আসন্ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, সারা জীবন বিএনপির রাজনীতি করেছি। শেখ হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মাঠে সক্রিয় ছিলাম। রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। তিনবার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। দিন-রাত সাধারণ মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছি। আশা করি দল নিশ্চয়ই আমার এসব কাজের মূল্যায়ন করবে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ-উজ-জামান মামুন মোল্লা বলেন, বিগত সরকারের আমলে রাজপথে থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। চাঁদাবাজি-দখলবাজির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছি। স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করায় এবং যোগ্যতা বিবেচনায় দল আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশা করছি।

কেন্দ্রীয় আরেক নেতা গাজী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের সময় প্রতিটি আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছি। বিনা পারিশ্রমিকে প্রায় ১৭ হাজার দলীয় নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থাকা রাজনৈতিক মামলা লড়ে তাদের জামিন করিয়েছি। তাছাড়া আমার বাড়ি আমতলী উপজেলায় হওয়ায় আমতলী ও তালতলী উপজেলার মানুষ আমার পক্ষে রয়েছেন। এসব বিবেচনায় দল আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশা প্রকাশ করছি।

বিএনপি নেতা ফজলুল হক মাস্টার বলেন, দলের কঠিন সময়ে অনেক নেতাকে যখন কাছে পাইনি তখন সব কর্মসূচিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অংশগ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় গণসংযোগ করেছি। সাধারণ মানুষ আমার সঙ্গে আছে। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।

বিএনপি নেতা মো. রেজবুল কবির বলেন, বরগুনা সরকারি কলেজের দুবার জিএস নির্বাচিত হয়েছি এবং সদর উপজেলায় সর্বাধিক ভোট পেয়ে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। দিন-রাত মানুষের জন্য কাজ করেছি। সার্বিক বিবেচনায় দল আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচিত হব ইনশাআল্লাহ।

এ ছাড়া ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান শেষ পর্যন্ত এ আসনে মনোনয়ন চাইতে পারেন বলেও দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে এখন পর্যন্ত বিএনপির ছয় নেতা মনোনয়নপ্রত্যাশী হলেও অনেকটা স্বস্তিতে আছে জামায়াত। প্রায় ছয় মাস আগে দলটি তাদের জেলা আমির ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মহিবুল্লাহ হারুনকে এ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে। তিনি এলাকায় নিয়মিত গণসংযোগ করছেন।

জানতে চাইলে মাওলানা মহিবুল্লাহ হারুন বলেন, ‘জনগণ এখন ইসলামি দলকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান থাকাকালীন নিঃস্বার্থভাবে কাজ করেছি। যেখানে যাচ্ছি জনগণের আকুণ্ঠ সমর্থন পাচ্ছি। আশা করছি আগামী নির্বাচনে জমায়াতে ইসলামীকে আসনটি উপহার দিতে পারব, ইনশাআল্লাহ।’

আসনটিতে ইসলামী আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থী দলটির প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা মাহমুদুল হোসাইন ওয়ালীউল্লাহ। ইসলামী আন্দোলনের জেলার সভাপতি মুফতি মো. মিজানুর রহমান বলেন, বরগুনায় আমাদের ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে। বিগত নির্বাচনগুলোর ফল বিশ্লেষণ করলে এটির প্রমাণ পাওয়া যায়। বরগুনা-১ আসনে আসন্ন নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আমরা খুবই আশাবাদী।

তবে আসনটিতে জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ অন্যান্য দলের তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। নির্বাচন ঘিরে তাদের মধ্যে তৎপরতাও দেখা যায়নি।

বরগুনা-২ আসন (পাথরঘাটা, বামনা ও বেতাগী)

পাথরঘাটা, বামনা ও বেতাগী উপজেলা নিয়ে বরগুনা-২ আসন। ২০০৮ সালের আগে বেতাগী বরগুনা-১ এবং পাথরঘাটা ও বামনা উপজেলা নিয়ে বরগুনা-২ আসন গঠিত ছিল। পরে সীমানা পুনর্নির্ধারণের পর বেতাগী উপজেলাকে বরগুনা-২ আসনের সঙ্গে একীভূত করা হয়।

২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরগুনা-২ আসনে বিএনপি প্রার্থী নূরুল ইসলাম মণি নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে ১৯৮৮ ও ১৯৯১ সালে তিনি স্বতন্ত্র এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে এ আসনে আওয়ামী লীগের গোলাম সবুর টুলু, শওকত হাচানুর রহমান রিমন ও সুলতানা নাদিরা এমপি হন। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর পাল্টে গেছে এখানকার নির্বাচনী হিসাব-নিকাশ।

আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এ আসনে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নূরুল ইসলাম মণি। তিনি এ আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বিজ্ঞান এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং প্যানেল স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেছেন। এখানে মূলত তার আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তাই বিএনপিকে অন্যসব দল থেকে এগিয়ে রেখেছে।

জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম মণি বলেন, এ এলাকার সার্বিক উন্নয়ন আমার হাত দিয়ে হয়েছে। আমি এমপি হওয়ার আগে এখানে কিছুই ছিল না। মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নানা কাজ করেছি। এলাকায় অসংখ্য লোককে চাকরি দিয়েছি। এ জন্য এলাকার মানুষ আমার পক্ষে অবস্থান করছে।

মণি আরো বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার আমার জনপ্রিয়তাকে ভয় পেয়ে, বিগত ১৫ বছর আমাকে এলাকায় আসতে দেয়নি। মামলা-হামলা করে আমাকে শেষ করে দিতে চেয়েছে। কিন্তু, আমি শত বাধার পরেও দলের প্রশ্নে আপসহীন থেকেছি। আশা করছি আগামী নির্বাচনে আসনটি দলকে উপহার দিতে পারব।’

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এই আসন থেকে বিএনপির আরো দুজন মনোনয়ন চাইতে পারেন। তারা হলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক নেতা মো. মনিরুজ্জামান মনির ও বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান প্রয়াত খন্দকার মাহবুব হোসেনের ছেলে খন্দকার সোয়াইব মাহবুব। তারা দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টায় আছেন।

বরগুনা-২ আসনে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ডা. সুলতান আহমেদকে প্রার্থী করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছেন। সুলতান আহমেদ বলেন, বর্তমানে সারা দেশেই জামায়াতের অবস্থা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। এ আসনেও এর ব্যতিক্রম নেই। ইতোমধ্যে তিনটি উপজেলায়ই সভা-সমাবেশ করেছি। এ সময়ে মানুষের যথেষ্ট সমর্থন পেয়েছি। আশা করছি জনগণের এ ভালোবাসা আমাকে জয়ী হতে সাহায্য করবে।

আসনটিতে ইসলামী আন্দোলনেরও কিছু ‘রিজার্ভ’ ভোট রয়েছে বলে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে আসন্ন নির্বাচনে এখানে কে প্রার্থী হবেনÑ সেটি এখনো নির্ধারণ করতে পারেনি দলটি। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, পরিস্থিতির আলোকে এ আসনে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।

এ আসনেও জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ অন্যান্য দলের তেমন কোনো কার্যক্রম নেই বললেই চলে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়েও তাদের তেমন কোনো তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

বরগুনা-২ আসনের বিভিন্ন উপজেলার ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আসন্ন নির্বাচনে সৎ, যোগ্য ও এলাকার উন্নয়নের জন্য নিবেদিতপ্রাণ প্রার্থীকেই তারা বেছে নেবেন। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যার চিন্তা-মননে অপরিসীম দেশপ্রেম রয়েছে, ধর্মীয় মূল্যবোধের পাশাপাশি আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যার পরিষ্কার অবস্থান থাকবে এমন প্রার্থীকে ভোট দিতে চান তারা।

নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিগত সরকারের আমলে ‘ভোট’ শব্দটি মানুষ ভুলে গিয়েছিল। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম বিগত তিনটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানুষের ভোটদানের একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে কাঙ্ক্ষিত সংস্কারবিহীন নির্বাচন ফলপ্রসূ হবে না।