Image description

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনে ভোটার সংখ্যা মোট ২ লাখ ৭০ হাজার ৭০০। এই আসনে বিএনপির একাধিক প্রার্থী মাঠ চষে বেড়ালেও থেমে নেই একক প্রার্থী জামায়াত।

ইসলামী অন্যান্য দলগুলো তাদের দলীয় কর্মসূচি নিয়মিত পালন করলেও এখনো মাঠ গুছাতে পারেনি। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেই কোনো নেতা, নেই কোনো তৎপরতা। অপর দিকে আওয়ামী লীগ পলাতক ও জাতীয় পার্টি নিষ্ক্রিয়।

ফলে এ আসনে প্রধান লড়াইটা হবে জামায়াত-বিএনপির মধ্যে ।

বিএনপি প্রার্থী নিবার্চনে ভুল করলে ও গ্রুপিং রাজনীতি নিরসন না হলে আসনটি চলে যাবে জামায়াতের দখলে, এমনটিই ভাবছেন অভিজ্ঞ মহল। কেননা এ আসনে জামায়াতের রয়েছে একক প্রার্থী। যিনি বিগত আওয়ামী লীগের আমলে এ আসনে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন।

এ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে এখন পর্যন্ত যারা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তারা হলেন- নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের তালুকদার, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ও জেলা বিএনপির সদস্য এ এস এম শহীদুল্লাহ ইমরান, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত ডা. মুহাম্মদ আলীর ছেলে ইঞ্জিনিয়ার মাহাবুব আলম রানা, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বাবুল আলম তালুকদার ও যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ খান।

অপরদিকে জামায়াতে ইসলামীর একক প্রার্থী নেত্রকোনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাসুম মোস্তফা।

আর বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের একক প্রার্থী হিসেবে এলাকায় সক্রিয় রয়েছেন মাওলানা হাবিবুল্লাহ খান। হেফাজতে ইসলামের নেতা প্রিন্সিপাল আব্দুল ওয়াহহাব হামিদী তিনিও রয়েছেন মাঠে।

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা প্রতিযোগিতার সঙ্গে উপজেলায় বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। সাধ্যমতো অসহায় ও দরিদ্রদের করছেন আর্থিক সহায়তা। এলাকায় নিয়মিত করছেন গণসংযোগ ও সভা-সমাবেশ। বিতরণ করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লিফলেট।

মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু তাহের তালুকদার ২০১৮ সালেও তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন। দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কারাবরণ করেছেন। ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি শহীদুল্লাহ ইমরান-দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশায় তিনি নেতাকর্মীদের পাশাপাশি এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গেও নিবিড় যোগাযোগ রাখছেন। পাশাপাশি এলাকার উন্নয়ন ও মানুষের সহায়তায় কাজ করছেন। এ আসনে বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার মাহাবুব আলম রানা। তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ রাবেয়া আলী ও প্রয়াত সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ডা. মোহাম্মদ আলী দম্পতির ছেলে। তিনি থাকেন লন্ডনে। ঘন ঘন দেশে এসে করছেন গণসংযোগ। তিনি তার পরিবারের ইমেজকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন ।

বিএনপির আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বাবুল আলম তালুকদার। তিনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে গত দেড় দশক পূর্বধলা উপজেলা বিএনপির নির্যাতিত নেতাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি পূর্বধলায় দলের দুঃসময়ে নেতৃত্বের হাল ধরে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

এ আসনে বিএনপির অপর মনোনয়নপ্রত্যাশী যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ খান। তিনি এলাকায় এসে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়, গণসংযোগসহ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করেছেন।

অপর দিকে কারা নির্যাতিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যাপক মাসুম মোস্তফা নানা কৌশলে এলাকায় ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের একক প্রার্থী হিসেবে এলাকায় সক্রিয় রয়েছেন মাওলানা হাবিবুল্লাহ খান। তিনিও নিয়মিত গণসংযোগ করছেন।

এদিকে বসে নেই ঢাকা মহানগর হেফাজতের সদস্য, পূর্বধলা উপজেলা জমিয়তের সাবেক সভাপতি, প্রিন্সিপাল আব্দুল ওয়াহহাব হামিদী। এ নেতা গত ১৮ এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন বিশ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নমিনী ছিলেন। তিনিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানা কৌশলে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

স্থানীয় একাধিক সচেতন নাগরিক আমার দেশকে বলেন, এ উপজেলায় বিএনপির রয়েছে একাধিক গ্রুপ। এর মধ্যে প্রকাশ্যে রয়েছে তিনটি গ্রুপ। তারা নিজেরা এখন কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত। তাদের গ্রুপিং রাজনীতির নিরসন না হলে আসনটি হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এবারের মনোনয়ন যুদ্ধে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে কে পাবেন টিকিট এটা কেউ সঠিক করে বলতে না পারলেও আগামী নিবার্চনে এ আসনটিতে বিএনপি ও জামায়াত এ দুদলেই হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই এমনটাই মনে করেন এই আসনের অধিকাংশ ভোটার ।