Image description

নরসিংদীর পলাশে এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন স্থানীয় বিএনপির দুপক্ষের নেতাকর্মীরা। ইতোমধ্যে তারা একটি সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছেন। সংবাদ সম্মেলন, মিছিল, সমাবেশসহ পালন করছেন নানা কর্মসূচি। এমতাবস্থায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বুধবার সকালে নরসিংদী প্রেস ক্লাবের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির একাংশ। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন একে হুমায়ুন কবীর। তিনি জেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া পরিষদের জেলা কমিটির সভাপতি ফজলুল কবীর জুয়েলের বড় ভাই।

হুমায়ুন বলেন, ঈদপরবর্তী জনসাধারণের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের লক্ষ্যে ১৫ জুন বিকালে শোডাউন করেন বিএনপির জুয়েল। তার বাড়ি পলাশ বাজার থেকে কর্মী-সমর্থক নিয়ে পিডিবি কবরস্থানের পাশে পৌঁছলে আলম মোল্লা, পাপন বাদশা, আরিফ, আমান উল্লাহ, লুৎফর, ইস্রাফিল, ইসমাইল ও আলামিন ভূইয়ার নেতৃত্বে প্রায় এক থেকে দেড়শ জনের সশস্ত্র সদস্য পিস্তল, শটগান, রামদা, ছুরি, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল নিয়ে হামলা করে।

এ হামলায় জুয়েল মারাত্মকভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। এ ছাড়া জুয়েলের ভাতিজা তৈয়ব আলী গুলিবিদ্ধ হয় এবং সোহেল, মিঠু, তপু, সুমন, আশিকসহ ৪০-৫০ জন আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, সিয়াম নামের এক ছাত্রলীগ নেতাকে দিয়ে মামলা করিয়ে হাসপাতালে পুলিশ ব্যারিকেড তৈরি করে চিকিৎসা নিতে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে।

জুয়েলের পক্ষে তার শাশুড়ি মমতাজ বেগম বাদী হয়ে ঘোড়াশাল পৌর বিএনপির সভাপতি আলম মোল্লাকে প্রধান আসামি করে ২১ জনের নামে পলাশ থানায় মামলা করেছেন।

অন্যদিকে ঘোড়াশাল পৌর বিএনপির সভাপতি আলম মোল্লা বলেন, ফজলুল কবির জুয়েল তার ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে শান্ত পলাশকে অশান্ত করতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করার লক্ষ্যে শোডাউনের নামে অস্ত্র প্রদর্শন করেন। তাদের মহড়া থেকে পলাশে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও গুলি করা হয়। এতে ছাত্রদলের ইসমাইল গুলিবিদ্ধসহ রবিউল ও সোহেল আহত হয়। এই অবস্থায় ছাত্র-জনতা জুয়েলকে গণপিটুনি দিয়েছে। এদিকে আহত ইসমাইল ও সোহেলকে ঢাকায় ভর্তি করা হয়। পলাশের দলীয় লোকজন জুয়েলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। এ ঘটনায় পরদিন ১৬ জুন বিকালে পলাশ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে।

তাদের পক্ষ থেকে সিয়াম নামে এক যুবক বাদী হয়ে জুয়েলকে প্রধান হিসেবে আরো ৯ জনকে অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামি করে পলাশ থানায় মামলা করেন।

শান্ত পলাশে বিএনপির দুপক্ষের এমন অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষে হঠাৎ অশান্ত পরিবেশ তৈরি হওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে উঠেছে পলাশের পথঘাট। জনমনে নিরাপত্তার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যার কারণে সন্ধ্যার পরই সুনসান হয়ে যায় পথঘাট।

মামলা দুটির তথ্য নিশ্চিত করে পলাশ থানার ওসি মনির হোসেন বলেন, সংঘর্ষ ও মামলার ঘটনায় বিএনপির দুপক্ষের নেতাকর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান করায় স্থানীয়রা কিছুটা উদ্বিগ্ন হলেও পুলিশ তৎপর। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে কাজ চলছে।