Image description

চট্টগ্রাম নগরীতে মাত্র তিন ঘণ্টার ভারী বর্ষণে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (১৮ জুন) ভোর থেকে মুষলধারে টানা বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকার সড়কে হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে যায়। এতে চরম বিপাকে পড়েন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগামী শিক্ষার্থী ও কর্মজীবীরা।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মাত্র তিন ঘণ্টায় ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এর আগের ২৪ ঘণ্টায় ৭৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। পাশাপাশি সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত জারি রয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, বৃষ্টির ফলে নগরীর বহদ্দারহাট, শুলকবহর, জিইসি মোড়, আগ্রাবাদ, কাতালগঞ্জ, কাপাসগোলা, চৌমুহনী, ইস্পাহানি রেলগেট, এ কে খান এলাকা, বাকলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কগুলোতে পানি জমে গেছে।

দেওয়ানহাট এলাকার স্কুল শিক্ষার্থী মো. খালেকুজ্জামান বলেন, এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও স্কুলে যেতে পারিনি। স্কুলে যাওয়ার পথে পানি জমে গেছে।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মেহেরুন্নেসা বলেন, ভোর থেকে বৃষ্টি দেখে একটু আগে করে বের হয়েছি। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর একটি গাড়ি পেয়েছি।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উপপ্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা বলেন, সকালে জোয়ারের কারণে শুলকবহরসহ কিছু এলাকায় পানি জমে ছিল। তবে এসব পানি বেশি সময় থাকেনি, দ্রুত নেমে গেছে।

চট্টগ্রামে পতেঙ্গার প্রধান আবহাওয়া কার্যালয়ের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. ইসমাইল ভূঁইয়া কালবেলাকে বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও এর আশপাশ এলাকায় লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। এ কারণে শনিবার পর্যন্ত চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।

চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। এর মধ্যে ৩৬টি খাল নিয়ে যে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। এরই মধ্যে ৮৪ শতাংশের বেশি কাজ শেষ হয়েছে। ৩৬টি খালের মধ্যে ২৫টি খালের কাজ শেষ হয়েছে। এই মেগা প্রকল্পের কাজ ২০১৭ সালে শুরু করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।

শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা। সেটি শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের জুনে। পরে মেয়াদ ও খরচ বেড়ে এখন প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। আর মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের জুনে।

প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খালগুলোর কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা থেকে অনেকটা নিস্তার পাওয়া যাবে।