ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, ‘সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে অর্থবিল ও আস্থা ভোট ব্যতীত বাকি সব ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যগণ স্বাধীন মতামত প্রদান করার ব্যাপারে ইসলামী আন্দোলন সমর্থন করেছে এবং এর ওপরে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এ ছাড়া সংসদীয় কমিটির ক্ষেত্রে পাবলিক অ্যাকাউন্টস, প্রিভিলেজ, এস্টিমেশন ও পাবলিক আন্ডারটেকিংস কমিটির প্রধান এবং অন্যান্য জনগুরুত্বপূর্ণ কমিটির প্রধান আনুপাতিক হারে বিরোধী দল থেকে নেওয়ার বিষয়েও ইসলামী আন্দোলন সমর্থন করেছে।’
মঙ্গলবার (১৭ জুন) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কশিমনের দ্বিতীয় দিনের সংলাপ শেষে তিনি এসব কথা জানান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘সংসদে নারীদের জন্য ১০০ আসন সংরক্ষিত রাখার প্রস্তাব নিয়ে ঐকমত্য কমিশন চাপাচাপি করছে।
অথচ জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে এটা অপ্রাসঙ্গিক। জুলাই অভ্যুত্থানের দাবি হলো, দেশকে ভবিতব্য স্বৈরতন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করা। বাংলাদেশে নারীদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা আছে। বাংলাদেশের ৩০০ আসনেই নারীদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ আছে।
আমাদের নারীরা উন্মুক্ত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মূলধারার রাজনীতি করে আসছেন। বিশ্বের ইতিহাসে বাংলাদেশই সবচেয়ে বেশি সময় ধরে রাষ্ট্র হিসেবে নারীকে প্রধান করে পরিচালিত হয়েছে। হ্যাঁ, সামাজিক কিছু বাস্তবতা আছে। সেটা আমাদের হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্যের কারণে আমাদের নারীরা পুরুষের সমান্তরালে রাজপথের আন্দোলন, সংগ্রাম ও রাজনীতিতে সক্রিয় হন না।
এখন সংসদে আরো ৫০টা আসন বৃদ্ধি করলেই যে এই অবস্থার বড় পরিবর্তন হয়ে যাবে, তা সত্য নয় এবং নারীর জন্য আসন সংরক্ষণ করার চেয়ে তারা বরং ৩০০ আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক, প্রার্থী বাছাইয়ে অংশ নিক এবং রাজনৈতিক দল পরিচালনা করুক। তাতেই তাদের সম্মান বৃদ্ধি পাবে। কারণ সংরক্ষণের ধারণাই নারীর জন্য অবমাননাকর।’
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘যেহেতু জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার একটা বিষয় আছে, তাই সব দল যদি একমত হয় তাহলে নারীর জন্য ১০০ আসন সংরক্ষণ করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দাবি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দেওয়া হোক এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে নারীদের আসন ঠিক করা হবে।
এটা কমিশনের বিকল্প প্রস্তাবের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। ভোটের সংখ্যানুপাতিক হারে দলগুলোর জন্য নারী আসন বরাদ্দ করা যেতে পারে। যে দল যত শতাংশ ভোট পাবে সেই দল থেকে ততজন নারী সংসদ সদস্য হবেন।’