
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপের নতুন দফার আলোচনা ‘বয়কট’ করে প্রথম দিন না এলেও দ্বিতীয় দিন জামায়াতে ইসলামী যোগ দেবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
একই সঙ্গে বিএনপির প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের ‘একপক্ষীয় আচরণ’ নিয়ে ওঠা সমালোচনার বিষয়ে তার দাবি, বর্তমান সরকার ’সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা’ বজায় রেখেছে।
মঙ্গলবার বিকালে প্রেস সচিব জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের পর সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন।
রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রেস বিফ্রিংয়ে জামায়াতের সংলাপে অংশ না নেওয়া বিষয়ক প্রশ্নে তিনি বলেন, "জামায়াতে ইসলামী আগামীকাল (বুধবার) যোগ দেবে। তাদের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। একদিন অনুপস্থিত থাকতেই পারে। আগামীকাল ভালোভাবে থাকবে।"
কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, "কারণ জানি না, তবে আগামীকাল আসবে।"
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের পাশের আসনটি জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের জন্য রাখা হলেও তা খালি দেখা যায়।
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের পাশের আসনটি জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের জন্য রাখা হলেও তা খালি দেখা যায়।
এ বিষয়ে বিকালে জানতে চাইলে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ এখনই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
এর আগে সকালে সংলাপে না আসার বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেছিলেন “আমরা অন প্রোটেস্ট আজকের বৈঠকে যাইনি।”
তখন আগামীকাল (বুধবার) বৈঠকে যোগ দেবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, “এটা এখনই বলতে পারছি না। আমরা আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”
এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের মূলতবি বৈঠক শুরু হয়। এতে জামায়াতের কোনো প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি।
পরে জানা যায় লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর যে যৌথ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তার প্রতিবাদে কমিশনের এ বৈঠক ‘বয়কট’ করেছে জামায়াতে ইসলামী।
দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে সকালে বলেন, দ্বিতীয় দফার সংলাপে তারা যোগ দেবেন না।
আধাঘণ্টা দেরিতে বৈঠক শুরু হলেও জামায়াতের কোনো প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি।
বিএনপির সালাহউদ্দিন আহমদের আসনের পাশের আসনটি জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের জন্য রাখা হয়। তবে তা খালি দেখা যায়।
এদিকে মধ্যাহ্ন বিরতিতে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ থেকে বের হওয়ার সময় কয়েকজন সাংবাদিক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দারের কাছে জামায়াতের যোগ না দেওয়ার বিষয়ে জানতে চান।
তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামী প্রতীকী বয়কট করেছে।”
‘বয়কটের’ কারণ লন্ডনে ইউনূস-তারেক বৈঠক কি না, এ প্রশ্নে তিনি বলেন, “আপনারা বুঝে নেন।”
প্রথম দিনের বৈঠক শেষে প্রেস সচিব শফিকুলের কাছে প্রশ্ন ছিল লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের যৌথ বিবৃতি কারণে জামায়াত ক্ষুব্ধ হয়ে আসেনি বলে জামায়েতের নেতারা দাবি করেছেন–এবিষয়ে আপনি কী বলবেন?
জবাবে তিনি বলেন, "আমরা এমন কিছু জানি না।"
এসময় প্রধান উপদেষ্টা বিএনপির প্রতি একপাক্ষিক আচরণ করছে বলে জামায়াত ও এনসিপি’র উদ্বেগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, "আমরা মনে করি আমরা সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা মেনটেইন করছি। জুলাই গণ অভ্যুত্থানে যারা অংশ নিয়েছে সবাইকে আমাদের অংশীজন মনে করি। আমার মনে হয় না যে এটা সত্য। আমরা সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতায় আছি। এক কথায় সব দিক থেকে আমরা নিরপেক্ষ।
"বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব দল ও পক্ষকেই সরকার সমান গুরুত্ব দিচ্ছে, কাউকে আলাদা করে দেখছে না।"
পরে ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি আলী রীয়াজকে জামায়াত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, "সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে উনারা কালকে আসবেন।"