
আগামী ৫ আগস্টের আগেই দেশে ফিরতে পারেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাকে স্বাগত জানাতে প্রায় ১০ লাখ লোক সমবেত হতে পারে রাজধানী ঢাকায়। বিএনপি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক শেষে শুক্রবার বাংলাদেশ সময় বেলা পৌনে ৪টার দিকে লন্ডনে পার্ক লেনের হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফিরতে কোনো বাধা নেই। তিনি যখন খুশি দেশে ফিরতে পারেন। সময়মতো তিনি এ সিদ্ধান্ত নেবেন।
এদিকে বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ড. ইউনূসের ফলপ্রসূ বৈঠকের পর বিএনপি শিবির উচ্ছ্বসিত। দ্রুতই বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমান দেশে ফিরছেন। ৫ আগস্টের আগেই তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারেন। অথবা নির্বাচনি তফশিল ঘোষণার পরপরই দেশে ফিরবেন। নির্বাচনি ডামাডোলের এক উত্তাল সময়ে তিনি প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে আসবেন। সেদিন তাকে স্বাগত জানাতে অন্তত ১০ লাখ লোক সমবেত হবে ঢাকায়। সারা দেশ থেকে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মীর বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস ধরে রাখাই কঠিন কবে। রাজধানী ঢাকা এক জনারণ্যে পরিণত হয়ে যাবে। রাজনৈতিক এক মহানায়কের আগমনে উপচে পড়া সে ঢেউ সারা দেশে নির্বাচনি জোয়ারে উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি করবে অনায়াসে।
প্রশংসায় ভাসছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান
লন্ডন বৈঠকে জাতীয় নির্বাচনসহ দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব নোবেল জয়ী ড. ইউনূসকে যথাযথভাবে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন তারেক রহমান। রাজনৈতিক প্রজ্ঞার স্বাক্ষর রাখায় এজন্য তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছেন। ইতিবাচক দিক তুলে ধরে অনেকে তারেক রহমানকে নিয়ে নানা স্ট্যাটাস দিচ্ছেন।
শত্রুপক্ষের চরম পরাজয়
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, লন্ডন বৈঠক সফল হওয়ায় গণ-অভ্যুত্থানবিরোধী সব অপশক্তি শত্রুদের চরম পরাজয় হয়েছে। একই সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের মেয়র পদে শপথ ইস্যু এবং কাক্সিক্ষত সময়ে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সরকার তথা ড. ইউনূসের মধ্যে যে বৈরী অবস্থা তৈরি হয়েছিল সেটি এখন আর নেই। এক বৈঠকেই সব উত্তাপ উবে গেছে।
লন্ডন বৈঠকের সাফল্যে শুধু রাজনৈতিক সংকটই কাটেনি, পুরো দেশ রাতারাতি নির্বাচনি ট্রেনে উঠে পড়েছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন। হাতে সময় এখনো ৭ মাস। তবু কারও যেন ফুরসত সইছে না। স্মরণকালের ঐতিহাসিক জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে নাম লেখাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। শুধু বিএনপি নয়, গণতন্ত্রকামী নির্বাচনমুখী সব দলের সম্ভাব্য প্রার্থী অভূতপূর্ব এই নির্বাচনি উৎসবে যোগ দিতে মাঠে নেমে পড়েছেন। এছাড়া আসন ভাগাভাগিসহ পর্দার আড়ালে নির্বাচনি নানা হিসাব-নিকাশ ও সমঝোতার আলাপ সেরে নিতে অনেকে ছুটছেন সাজঘরে। লন্ডন বৈঠকের ফল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে যুগান্তরের কাছে কয়েকজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও রাজনীতিবিদদের পর্যবেক্ষণ ছিল এ রকম।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন, শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার প্রথম বৈঠকেই বাজিমাত। এক মুহূর্তে উবে গেছে সব অনিশ্চয়তা। অনেকের ভাষায়, একদিকে জনমনে বইছে স্বস্তির ঢেউ, বিপরীতে চরম হতাশায় নিমজ্জিত ষড়যন্ত্রকারীরা। কেউ কেউ বলছেন, ষড়যন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক মেরেছে লন্ডন বৈঠক।