
শরিকদের কিছু কিছু আসন বিএনপি ছেড়ে দেবে- এরকম প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এটা সংসদীয় রাজনীতিতে খুবই স্বাভাবিক, এটা ন্যাচারাল এটা হওয়া উচিত। আমরা আগে থেকে কমিটেড, আমরা নির্বাচনের পর একটা জাতীয় সরকার করব।
মঙ্গলবার (১০ জুন) রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
জামায়াতে ইসলামী ও ন্যাশনাল রিপাবলিক পার্টিকে সমঝোতায় আসন দেওয়া হবে এরকম আলোচনা আছে রাজনৈতিক অঙ্গনে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এগুলো ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা নাই। আলোচনা থাকতে পারে। এই ধরনের কোনো আলোচনা হয়েছে বলে সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে আমার জানা নাই। এটা পরের ব্যাপার যদি আলোচনা হয় হবে কিছু, সেটা ডিফারেন্ট প্রশ্ন। রাজনীতিতে পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসিতে শেষ কথা বলতে কিছু নাই। চরম বিরোধী দল তার সঙ্গেও এলায়েন্স হয়ে যায়। আপনি ভারতে তাকিয়ে দেখন না যে, একেবারে কট্টর ডানপন্থি, কট্টর বামপন্থির মধ্যে এলায়েন্স হয়ে নির্বাচন হচ্ছে। কারণ ওখানে সংখ্যার ব্যাপারটা ইম্পর্ট্যান্ট।
এ ছাড়া সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির সংস্কার প্রস্তাব বিএনপির মতো করে দিয়েছে। বিএনপি যা বিশ্বাস করে, যেগুলো তার আদর্শ, সেগুলো আগেই ঘোষণা করেছে। আমাদের ৩১ দফা অভ্যুত্থানের অনেক আগেই ঘোষণা করা। সুতরাং দ্যাট ইজ মাই পয়েন্ট। তবে আলোচনা করে দুই-এক জায়গা ছাড় দিতে হয় সেগুলোতে তো আমরা দিচ্ছি। আমরা তো পরিষ্কার বলেছি, যেগুলোতে ঐকমত্য হয় সেগুলো তোমরা করো, যেগুলোতে ঐকমত্য হবে না সেগুলো সংসদে চলে আসবে ইলেকশন মেনিফেস্টো হিসেবে। পিপলস এক্সসেপ্ট করবে হয়ে যাবে, কঠিন ব্যাপার তো না।
আওয়ামী লীগের সাথে সমঝোতা হতে পারে কিনা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ তো নাই।
জাতীয় পার্টির বিষয়ে কী অবস্থান? জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা যে পার্টিগুলোর কথা বলছেন সেগুলোর সঙ্গে সবচেয়ে বড় বিরোধ বিএনপির। আওয়ামী লীগের সবচেয়ে অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন, ফ্যাসিবাদের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী বিএনপি। একইভাবে জাতীয় পার্টির কাছেও আমরা ৯ বছর (এইচএম এরশাদের শাসনামলে) নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছি। তারপরেও আমরা যেটা বলে এসেছি সবসময়। আমরা তো একমত হয়েছি আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধে। আমরা বলেছি যে, ঠিক আছে। আমরা যেটা পার্টি বিশ্বাস করি, গণতন্ত্রকে গণতন্ত্রের মতো চলতে দেওয়া উচিত।
এ ছাড়া বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফিরা নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমান নিশ্চয় দেশে ফিরবেন, অবশ্যই দেশে ফিরবে। কবে ফিরবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিগগিরই ফিরবেন। তবে দিনক্ষণ কোনো কিছুই বলেননি বিএনপি মহাসচিব।
উল্লেখ্য, চোখের জরুরি চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে গিয়েছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সঙ্গে তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগমও ছিলেন। গত ১২ মে রাত ২টা ৪৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তিনি ব্যাংককে যান। থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চিকিৎসা শেষে শুক্রবার (০৬ জুন) দিবাগত রাতে ঢাকায় পৌঁছান মির্জা ফখরুল।