
শরীয়তপুর জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক রুহুল আমীন মুন্সিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের একাংশের বিরুদ্ধে। আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে সদর হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দুপুরের দিকে শরীয়তপুর সরকারি কলেজের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রদলের কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করা নেতাকর্মীরা তাকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ ও বিএনপি সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকালে ছাত্রদলের শরীয়তপুর জেলা কমিটি ঘোষণা করা করা হয়। ৩৫ সদস্যের ওই আহ্বায়ক কমিটিতে আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, ১৬ জন যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ১৭ জনকে সদস্য করা হয়েছে। ওই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জাকিরকে। তিনি শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী। সদস্যসচিব করা হয়েছে শরীয়তপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল তালুকদারকে। এদিকে কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে জেলা ছাত্রদল দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
দলের এক অংশের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন কমিটির আহ্বায়ক এইচ এম জাকির ও সদস্যসচিব সোহেল তালুকদার। আর অন্যদিকে নেতৃত্বে রয়েছেন ওই কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক পান্থ তালুকদার, বাবু মাদবর, আফজাল খান, ইসহাক সরদার।
মঙ্গলবার বিকালে সদ্য ঘোষিত কমিটির একটি পক্ষ কমিটির ঘোষণাকে সাধুবাদ জানিয়ে বিজয় মিছিল বের করে। অপরদিকে আরেকটি পক্ষ কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল দুটির একটি পালং থানার সামনের গেটের সড়ক ও আরেকটি মিছিল পেছনের গেটের সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ করেই একটি পক্ষ আরেকটি পক্ষের ওপর হামলা চালায়।
বুধবার থেকে কমিটি বাতিলের দাবিতে ফের মাঠে নামে পান্থ তালুকদার, বাবু মাদবর, আফজাল খান, ইসহাক সরদারের সমর্থকরা। গতকালের ন্যায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের সমর্থকরা ঢাকা-শরীয়তপুর সড়ক অবরোধ করে রাখেন। দুপুর ১টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করে তারা শরীয়তপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে যায়।
এসময় কলেজের সামনের সড়ক দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক রুহুল আমীন মুন্সি ও তার স্ত্রী শরীয়তপুর জজকোর্টের আইনজীবী মনিরা আক্তার।
এসময় বিক্ষোভকারীরা রুহুল আমীন মুন্সিকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ উঠে। এছাড়াও তার মোটরসাইকেলটি অগ্নিসংযোগ করা হয়। পরে স্থানীয়রা রুহুল আমীনকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক নেতা বলেন, আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর মঙ্গলবার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়। ওই সংঘর্ষে একটি পক্ষে অংশ নিয়েছিলেন রুহুল আমীন মুন্সি। সেই কারণে অপরপক্ষ (কমিটি বাতিল দাবির পক্ষের ছাত্রদলের অংশ) ক্ষুব্ধ ছিল। আর সেই ঘটনার জেরে আজ রুহুল আমীনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
রুহুল আমীনের স্ত্রী মনিরা আক্তার বলেন, আমি আর আমার স্বামীর বাড়িতে ফিরছিলাম। শরীয়তপুর সরকারি কলেজের সামনে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাকর্মী আমার স্বামীকে মারধর করেছেন। তারা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। পরে তারা মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। আমরা হামলাকারীদের কয়েকজনকে চিনেছি।
কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ইসহাক সরদার বলেন, ছাত্রদলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে আমি কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে ছিলাম। হৈচৈ শুনে সড়কের দিকে এসে দেখি কয়েকজন রুহুল ভাইকে মারধর করছে। আমরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই। তবে কারা তাকে মারধর করেছে তা শনাক্ত করতে পারিনি।
এ ব্যাপারে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, এক বিএনপি নেতাকে মারধরের খবর পেয়েছি। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পায়নি। আহত ওই বিএনপি নেতাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে গেছে তাদের স্বজনেরা।