
আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং তার আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
সংসদ নির্বাচন পরে আয়োজনের যুক্তি হিসেবে দলটির আমির শফিকুর রহমান বলছেন, আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে জনগণের কষ্ট কমবে এবং নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা প্রমাণ হবে।
উচ্চ আদালতের রায়ে দলের নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার প্রতিক্রিয়া জানাতে মঙ্গলবার রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে আসেন জামায়াতের আমির।
সেখানে নির্বাচনের পাশাপাশি রাষ্ট্র সংস্কার নিয়েও কথা বলেন তিনি।
শফিকুর রহমান বলেন, "কিছু জিনিস না হলে তো কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করা যায় না। মাত্র পাঁচটা বেসিক সংস্কার নিয়ে সরকার এগোচ্ছে। ৪১টা পয়েন্টে আমাদের সুপারিশ আছে। কিন্তু এই ৫টার আমরা বাস্তবায়ন দেখতে চাই।
"আমরা বলেছিলাম, যারা অপরাধী, তাদের বিচারটা যেন দৃশ্যমান হয়। এ বিচার দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে, এখানে আমরা একটু আশাবাদী। জুলাই সনদের একটা ব্যাপার অপেক্ষমাণ, চার্টারের পাশাপাশি ঘোষণা দেওয়া, যেটাতে এখনও কাজ করছে ঐকমত্য কমিশন।"
নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা হালনাগাদের দাবি তুলে জামায়াতের আমির বলেন, "বায়বীয় ভোট ছেঁটে ফেলতে হবে। ন্যায্য ভোট সংযুক্ত করতে হবে।"
শফিকুর রহমান বলেন, "প্রধান উপদেষ্টা যে টাইমলাইন দিয়েছেন- ডিসেম্বর টু জুন। এর মধ্যে তিনি নির্বাচন দেওয়ার পক্ষে। আমাদের মতটা ইততোমধ্যে ব্যক্ত করেছি৷ এটা ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগে হতে পারে রোজার আগে আগে।
“কোনো কারণে যদি না হয়, তাহলে কোনো অবস্থায় এপ্রিল পার না হওয়াটা ভালো হবে। কারণ মেয়ে মাস থেকে আমাদের দেশের আবহাওয়া ক্রমাগত খারাপের দিকে যায়। এটা নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত কোনো সময় হবে না। আমরা এভাবেই আমাদের মতামত ব্যক্ত করেছি।
তিনি বলেন, "কিন্তু আমরা বেঁধে দেওয়ার অধিকার রাখি না। আমরা যদি নির্দিষ্ট করে বলে দেই, তাহলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর্যায়ে পড়ে যায়। সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। আমরা আমাদের মতামত জানাতে পারি, দাবি জানাতে পারি, আমরা সেটি জানিয়েছি।"
জাতীয় নির্বাচনের আগেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, "মানুষের সাফারিংটা দূর হোক সেটা আমরা চাই। নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা ও নিরপেক্ষতা প্রমাণ হোক, সেটা আমরা চাই।"
এদিকে জাতীয় নির্বাচনের জন্য সমতল মাঠ তৈরি হলে যেকোনো সময় নির্বাচনে অংশ নিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রস্তুত বলে তুলে ধরেন শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, "আমরা ফেব্রুয়ারি টু এপ্রিল একটা ফ্লেক্সিবল টাইম আমরা মেনশন করেছি, প্রথমে ফেব্রুয়ারি বলেছিলাম পরে এপ্রিল পর্যন্ত আমরা এটাকে ফ্লেক্সিবল করেছি। আর অন্যদিকে বিএনপি তারা ডিসেম্বরকে স্ট্রিক্ট করেছে।
“এখন যদি ডিসেম্বরে ইলেকশন হয়, সেখানে আমাদের ভূমিকা কী হবে- না ডিসেম্বর কেন? আজকেও যদি ইলেকশন আমি দেখি যে এটা আসলে সমতল মাঠ তৈরি হয়ে গেছে এবং এখন ফেয়ার ইলেকশনের পক্ষে জাতি প্রস্তুত, সকল অর্গান প্রস্তুত, সেই ইলেকশনে তো আমরা যাব, আমাদের তো যাইতে কোনো সমস্যা নেই, এটা ডিসেম্বর দিয়ে কোনো কথা না।"
শফিকুর রহমান বলেন, "প্রবাসীদের অবশ্যই ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে, এ বিষয়ে আমরা ছাড় দিতে নারাজ। প্রবাসীরা তাদের নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারে না। আমরা ইসির কাছে দাবি জানিয়েছি, প্রবাসীরা যেন ভোট দিতে পারে তার ব্যবস্থা করার জন্য। এটা কোন কঠিন বিষয় নয়। কিন্তু ইসির পক্ষ থেকে আমরা কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।"