
সাধারণ ক্ষমার’ (ট্যাক্স অ্যামনেস্টি) আওতায় আবাসন খাতে কালোটাকা বা অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার সুযোগ থাকছে না। কেননা ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে অর্থ উপদেষ্টা এই সুযোগের মেয়াদ আর বাড়াননি। ফলে ৩০ জুন এই সুযোগের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। যদিও বর্গমিটার হিসাবে এলাকাভেদে বিশেষ কর দেওয়ার মাধ্যমে আবাসন খাতে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ বহাল থাকছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে আয়কর আইনে করহার বাড়িয়ে ট্যাক্স অ্যামনেস্টি সুবিধা যুক্ত করা হয়। দেশের প্রচলিত আইনে যাই থাকুক না কেন, কোনো করদাতা স্থাবর সম্পত্তি যেমন ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট ও জমির জন্য নির্দিষ্ট করহারে এবং নগদ, ব্যাংক আমানতসহ অন্য পরিসম্পদের ওপর ১৫ শতাংশ কর দিলে কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকারের প্রশ্ন উত্থাপন করবে না।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে ট্যাক্স অ্যামনেস্টি সুবিধা বাতিল করে। ২ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর জানায়, বৈষম্যমুক্ত ও প্রগতিশীল করব্যবস্থা গড়ে তুলতে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু আবাসন খাতে বিশেষ করহার বহাল রাখা হয়। এ সুবিধার মেয়াদ এক বছর ছিল। ৩০ জুন মেয়াদ শেষ হওয়ায় কথা। নতুন অর্থবছরে করে আর মেয়াদ বাড়ানো হয়নি।
সর্বপ্রথম ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ১০ শতাংশ কর দিয়ে আয়কর রিটার্নে কালোটাকা বা অপ্রদর্শিত নগদ অর্থ, ব্যাংক আমানত প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বর্গমিটারপ্রতি নির্দিষ্ট হারে কর দিয়ে প্লট-ফ্ল্যাট প্রদর্শনের সুযোগ দেওয়া হয়। অর্থনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের চাপে মুখে এ সুবিধা প্রত্যাহার করা হলেও পরবর্তী সময়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে করহার বাড়িয়ে এই সুযোগ পুনর্বহাল করা হয়।
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় থেকে ২২ বার কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছে সরকার। ২০২৩ সাল পর্যন্ত মাত্র ৪৭ হাজার কোটি টাকা সাদা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ২০ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা সাদা হয় ২০২০-২১ অর্থবছরে।
এনবিআরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অপ্রদর্শিত অর্থসম্পদ আইনের ফাঁক গলিয়ে দুর্নীতিবাজরা রিটার্নে প্রদর্শন করতেন না, সেজন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অবশ্য জমি-ফ্ল্যাট-অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে আগের মতোই কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ থাকছে।