
ডাকসু পেছানোর অপচেষ্টা জুলাই স্পিরিটের সঙ্গে প্রতারণা বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সভাপতি এসএম ফরহাদ। তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেছেন।
পোস্টে তিনি বলেন, একটি অশুভ চক্রের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করতে ডাকসু পেছানোর অপচেষ্টা ‘জুলাই স্পিরিট’-এর সঙ্গে সুস্পষ্ট প্রতারণা। অশুভ চক্রের পেশিশক্তি ও দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি ফিরিয়ে আনার প্রকল্পে যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহযোগিতা করে, তাহলে এই প্রশাসনের বিরুদ্ধেও শিক্ষার্থীরা আরেকটি ‘জুলাই’ নামাবে—ইনশাআল্লাহ।
সম্প্রতি ঢাবি প্রশাসনের কাছে অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের দাবি করে কয়েকটি ছাত্র সংগঠনের নেতারা।
সোমবার ডাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতির অগ্রগতি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রস্তুতির ৭ম ধাপে চলছে নির্বাচন কমিশন গঠনের কাজ। এই ধাপে প্রাথমিকভাবে তিনজন শিক্ষকের নাম চূড়ান্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে জনসংযোগ দফতর উপ-পরিচালক ফররুখ মাহমুদ পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, নির্বাচন কমিশনের জন্য সাতজন শিক্ষকের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা তিনজনের নাম কমিশনার পদে প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি, ঈদের ছুটি ও সম্ভাব্য শিক্ষকদের কেউ কেউ ছুটিতে থাকায় নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লাগছে। ঈদ-উল-আজহার ছুটি শেষে প্রস্তাবিত এই নামগুলো সিন্ডিকেট সভায় উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদন পেলেই কমিশন গঠনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ শুরু হবে।
প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত শিক্ষকরা হলেন— উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস এম শামীম রেজা, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মারুফুল ইসলাম
বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ও আগ্রহকে সম্মান জানিয়ে প্রশাসন একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য ডাকসু নির্বাচনের জন্য আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। গত ১৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ডাকসু নির্বাচনের একটি নির্দিষ্ট টাইমলাইন প্রকাশ করে। এই অনুযায়ী ৪র্থ ধাপ পর্যন্ত কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং ৫ম, ৬ষ্ঠ এবং ৭ম ধাপের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ৫ম ধাপে ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে বৈঠকের প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ১৩ মে। ৬ষ্ঠ ধাপে চলছে অংশীজনদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা। এখন চলছে ৭ম ধাপ—নির্বাচন কমিশন গঠনের কাজ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ‘ডাকসু ইলেকশন কোড অব কন্ডাক্ট রিভিউ কমিটি’ সাতটি বৈঠক করে আচরণবিধির খসড়া চূড়ান্ত করেছে, যা সর্বশেষ সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়েছে। একই সঙ্গে ৬টি সভার মধ্য দিয়ে সংশোধিত গঠনতন্ত্রও অনুমোদিত হয়েছে এবং তা ছাত্রসংগঠনগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া নির্বাচনকে কার্যকর ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটি ছাত্রসংগঠন, হল প্রশাসন, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে ৯টি মতবিনিময় সভা করেছে। কমিটি তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, তারা একটি অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ডাকসু নির্বাচন আয়োজনের জন্য বদ্ধপরিকর। কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের পরবর্তী ধাপগুলো শুরু হবে। ডাকসু নির্বাচন সম্পন্ন করতে সবার নিকট সহযোগিতা করার আহ্বান জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।