
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রকাশিত রাজনৈতিক দলগুলোর বরাদ্দযোগ্য প্রতীকের সর্বশেষ তালিকায় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের প্রতীক ‘দাড়িপাল্লা’কে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিতে আপিল বিভাগের নির্দেশের পর বিষয়টি ইতোমধ্যে রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল ও আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
দাড়িপাল্লা প্রতীকটি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। দলটির সঙ্গে একসময় সংশ্লিষ্ট থাকা বা আদর্শিকভাবে মিল রয়েছে—এমন কিছু দল বা ব্যক্তিবর্গ এই প্রতীকটি পছন্দনীয় মনে করেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নতুন তালিকায় ‘দাড়িপাল্লা’ অনুপস্থিত থাকায় তা আর কোনো রাজনৈতিক দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থী চাইলে নির্বাচনকালীন প্রতীক হিসেবে বেছে নিতে পারবে না।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মোট ৬৪টি প্রতীকের একটি অনুমোদিত তালিকা প্রকাশ করে, যা নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্ধারিত নিয়মে ব্যবহার করতে পারেন। তালিকায় ‘নৌকা’, ‘ধানের শীষ’, ‘লাঙল’, ‘মাছ’, ‘ঘোড়া’, ‘তালা’, ‘হাতি’, ‘বই’, ‘মশাল’, ‘চেয়ার’সহ প্রচলিত ও পরিচিত প্রতীকগুলোর বেশিরভাগই স্থান পেয়েছে। তবে জামায়াতের প্রতীক হিসেবে পরিচিত ‘দাড়িপাল্লা’ এর মধ্যে স্থান পায়নি।
এদিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ২০১৩ সালে হাইকোর্টের রায়ে বাতিল হয়। পরে নির্বাচন কমিশন ২০১৮ সালে দলটির নিবন্ধন বাতিল করে দেয়। ফলে জামায়াত নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নিতে পারে না এবং তাদের প্রতীক ‘দাড়িপাল্লা’ও বাতিল প্রতীকের তালিকায় চলে যায়। তবে আজ রবিবার (২ জুন) জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিতে আপিল বিভাগের নির্দেশ দিয়েছেন। সর্বোচ্চ আদালত বলেছেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে এখন নির্বাচন কমিশন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও প্রতীকের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, কোনো প্রতীক একবার বাতিল হলে তা কমিশনের সিদ্ধান্ত ব্যতীত পুনরায় তালিকাভুক্ত হয় না। কমিশন চাইলে কোনো প্রতীক আবার পুনর্বহাল করতে পারে, তবে সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বিবেচনা প্রভাব ফেলতে পারে।
জানতে চাইলে জামায়াতের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিশির মনির বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে আগামীকাল (সোমবার, ২ জুন) বেলা ১২টায় আমরা ইসির সাথে সাক্ষাৎ করব।’