Image description
 

দীর্ঘ প্রায় আড়াই দশকের জোট শরিক বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব বেড়েই চলেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে দেশের অন্যতম প্রধান দুটি দল এখন বিপরীতে মুখোমুখি অবস্থানে। উভয় দলের শীর্ষনেতারা একে অপরের প্রতি করছেন কটাক্ষ। এ অবস্থায় আগামী নির্বাচন সামনে রেখে দল দুটির অবস্থান শেষ পর্যন্ত কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছায় এখন দেখার বিষয়।

জামায়াত চাচ্ছে সব সংস্কার শেষ আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন। আর বিএনপি চাচ্ছে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষেই নির্বাচন। এদিকে জামায়াত এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা করেছে, কয়েকটি ইসলামি দল নিয়ে নির্বাচনি মোর্চা গঠনের প্রয়াস চালাচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপিও নির্বাচন সামনে রেখে মিত্র দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে যাচ্ছে এখানেও নেই জামায়াত। 

১৯৯৯ সালে চারদলীয় জোট গঠিত হয়। এ জোটের প্রধান দুটো দল ছিল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। দল দুটি ২০০১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায়ও আসে। এর পর আবার বিরোধী দলে যায়। চার দলীয় জোট থেকে ২০ দলীয় জোট হয়। শেখ হাসিনার শাসনের শেষদিকে দল দুটির মধ্যে দূরত্ব দেখা দেয়। গত কয়েক বছর ধরেই নানা বিষয়ে টানাপোড়েন চলছে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সভা-সমাবেশের বক্তব্য-বিবৃতিতে মন্তব্য ছোড়াছুড়ি চলছে। 

জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর এই বিরোধ আরও প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। ৫ আগস্টের পর থেকেই জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব প্রকাশ্যে আসতে থাকে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি-জামায়াত এবং ছাত্রদল-শিবিরের সঙ্গে একাধিকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায়ও ঘটেছে। জামায়াতের শীর্ষনেতারা সভা-সমাবেশ থেকে বিএনপিকে ইঙ্গিত করে দখল বাণিজ্যসহ কড়া সমালোচনা করে বক্তব্য রেখে চলেছে। 

এদিকে, গত রবিবার বিএনপির একটি অনুষ্ঠানে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জামায়াতের কঠোর সমালোচনা করে বক্তব্য দেন জামায়াতও এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে। সব মিলিয়ে দল দুটির দূরত্ব এখন দৃশ্যমান।  তবে জামায়াত নেতারা এও বলছেন, মাঠে অনেক রাজনৈতিক কথা হয়। সব দলই সংস্কার চায়। তারা সংস্কারের জন্য কোনো সময় বেঁধে দিতে চান না। তাদের পারস্পরিক সম্পর্কে চূড়ান্ত পর্যায়ে কোনো ঘাটতি হয়েছে বলে মনে করেন না। 

তবে এখন তারা বিএনপির সঙ্গে জোটভুক্ত নয়। কিন্তু বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ আছে। তারা ইসলামি দল ও সংগঠনের সঙ্গে এখন আলাপ-আলোচনা করছেন সবাই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে কোনো জোট করবেন কি না, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। আর বিএনপির ব্যাপারেও তাদের একই অবস্থান। এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। 

অন্যদিকে বিএনপির নেতারা জানান, তারা এখন এককভাবে চলতে চান। কারণ এখন দেশের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হচ্ছে বিএনপি। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জোট করবেন কি না, তখন সিদ্ধান্ত নেবেন। সামনে এখনো রাজনীতির অনেক হিসাব-নিকাশ আছে।


বিডি-প্রতিদিন