Image description

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন বলেছেন, আমরা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের পদত্যাগ চাই না। দায়িত্ব শেষ হওয়ার আগে আমরা তাঁকে পদত্যাগ করতেও দেব না। তাঁর ওপর আমাদের আস্থা রয়েছে। কিন্তু তার টিম ভাল খেলছে না।

তিনি বলেন, ভাল টিম না পেলে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়া যায়, কিন্তু ম্যাচ জেতা যায় না। তাই রাষ্ট্র সংস্কার ও গণহত্যা বিচার করতে হলে অবশ্যই ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের টিম পুনর্গঠন করতে হবে। অন্যথায় এই টিম নিয়ে খেলে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস ভাল করলেও, টিম দিয়ে ম্যাচ জেতা যাবে না। আর একারণেই আমাদের দাবি উপদেষ্টা পরিষদের পুনর্গঠন।শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টন আলরাজি কমপ্লেক্সের সামনে সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের অপসারনের দাবিতে যুব অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাশেদ খাঁন বলেন, গতকাল প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জন সৃষ্টি করা হয়েছিলো। কিন্তু তিনি পদত্যাগ করছেন না। মূলত একাধিক উপদেষ্টা ও এনসিপি নেতাদের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি তাদের বলেছেন, ‘তোমরা সংযত হও, নইলে আমি দায়িত্বে থাকব না।

 এটা মূলত তাদের জন্য সতর্কবার্তা। কিন্তু তারা বাইরে ছড়িয়ে দেয়, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন। সেই তারাই আবার মধ্য রাতে বলতে থাকেন প্রধান উপদেষ্টা থাকবেন। মূলত উপদেষ্টাদের পদত্যাগের দাবি থেকে জনগণের দৃষ্টি সরাতে এই নাটক তারা মঞ্চায়ন করেছেন। 

তিনি বলেন, আজ একজন উপদেষ্টা বলেছেন- ‘শুধু নির্বাচনের জন্য আমরা বসি নাই।

কিন্তু ১০ মাসেও তো গণহত্যার বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কারের নমুনা দেখছি না। বরং সংস্কারের নামে নসরুল হামিদ বিপুর লুটপাটের সম্পদের পাহারাদার হয়েছেন একজন উপদেষ্টার স্বামী। সাবের মান্নানদের জামিন করিয়েছেন, রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ গঠনের চেষ্টা করেছেন। সংস্কারের নামে নৈরাজ্য ও অনৈক্য সৃষ্টি করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ, দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ। 

তিনি আরো বলেন, আমাদের স্পষ্ট দাবি শপথ লঙ্ঘনের দায়ে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদকে পদত্যাগ করতে হবে। প্রশাসক এজাজকে অপসারণ ও গ্রেপ্তার করতে হবে। অন্যথায় উপদেষ্টা পরিষদের নিরপেক্ষতা নিয়ে যে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, তার দূর হবে না। 

নির্বাচন প্রসঙ্গে রাশেদ খাঁন বলেন, আমরা মনে করি, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হওয়া দরকার। তার আগে গণহত্যার বিচার ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার করতে হবে। যদিও জানতে পারছি, কিছু উপদেষ্টা ক্ষমতার লোভে নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছেন।

সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান বলেন, বিতর্কিত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং মাহফুজ আলম শপথ ভঙ্গ করেছেন, সুতরাং তাদের পদত্যাগ করতেই হবে। তারা ইতিমধ্যে তাদের রাজনৈতিক অপকৌশলের মাধ্যমে ড. মোহাম্মদ ইউনূসকেও বিতর্কিত করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। আমরা ড. ইউনূসের পক্ষে আছি।

বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও অনৈক্য সৃষ্টিকারী মাহফুজ আলমকে পদত্যাগ করতে হবে। তারা পদত্যাগ না করলে তাদের বহিষ্কারে জন্য প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্বারক লিপি প্রদান করা হবে। তাছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রকে বহিষ্কার করতে হবে।

যুব অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন- ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি মিজানুর রহমান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি রাহুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক হোসাইন নুর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর হিরণ, সাধারণ সম্পাদক  ওবায়দুর রহমান শুভ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।