
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদ এবং বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল থেকে রাজধানীজুড়ে যান চলাচলে চরম স্থবিরতা নেমে আসে। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মজীবী ও বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শাহবাগ, মৎস্য ভবন ও কাকরাইল মোড়ের আশপাশের এলাকায় বেশিরভাগ গণপরিবহন চালকরা গাড়ি বন্ধ করে বসে আছেন, এবং যাত্রীরা গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছেন। গাড়িগুলোর মধ্যে বেশ কিছু পরিবহণ যাত্রী নামিয়ে আবার ফিরে যাচ্ছে।
আবার যানবাহনগুলো বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করায় অন্যান্য এলাকাগুলো যেমন- মগবাজার, হাতিরপুল, কাটাবন, গাবতলীতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। সাভার, গাজীপুরের গাড়িগুলোও আটকে আছে জ্যামে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর আসাদ গেট থেকে বাংলামোটর, মালিবাগ মৌচাক পর্যন্ত জ্যাম ছড়িয়ে পড়েছে। সড়কে থমকে আছে গাড়ির চাকা। অন্যদিকে গুলিস্তান, পল্টন এলাকাতেও তীব্র যানজট দেখা গেছে।
শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচারের দাবিতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবার (২২ মে) সকাল ১০টা থেকে শাহবাগ মোড়ে একাধিক পয়েন্টে অবস্থান নেন। এতে করে আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় এবং গণপরিবহন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। অনেক যাত্রী গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নুসরাত তালবিয়া বলেন, প্রায় প্রতিদিনই শাহবাগে কোনো না কোন আন্দোলনের কারণে সড়ক অবরুদ্ধ থাকে। এতে প্রতিদিন অফিস যেতে এবং ক্লাস করতে ভার্সিটিতে আসতে সমস্যা হয়। তাছাড়া অ্যাম্বুলেন্সগুলোও আটকে থাকে এসবের মাঝে অনেক সময় ধরে। এভাবে একঘুয়ে এবং রিপিটেড স্টাইলে আন্দোলনের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান খুঁজতে গিয়ে পিছিয়ে পড়ছি আমরা; আমাদের দেশই। সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলে কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না।
অন্যদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথের দাবিতে টানা অষ্টম দিনের মতো বৃষ্টি উপেক্ষা করে কর্মসূচি পালন করছেন ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা। মৎস্য ভবন ও কাকরাইল মোড় সংলগ্ন সড়কগুলোতে থমকে গেছে যানবাহন। এই অবস্থায় কর্মমুখী সাধারণ মানুষের জন্য চরম দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে।
বাংলামোটর কর্পোরেট অফিসের এক চাকরিজীবী ইমতিয়াজ কবির প্রত্যয় বলেন, গাবতলী থেকে বাংলামোটর পৌঁছাতে আমার প্রায় ৩ ঘণ্টা লেগেছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা হাঁটতে হয়েছে। কারণ কোনো গাড়ি চুল পরিমাণ নড়ছে না। এটা খুবই দুঃখজনক যে জুলাই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পরও আমরা এত বিবেচনাহীন, এত অধৈর্যভাবে কাজ করছি। অন্তর্বর্তী সরকার যেন শুধু সবার আবদারই শুনবে কিন্তু কোনো কাজ করতে পারবে না। সব রাজনৈতিক দলই বলছে তারা জনগণের পক্ষে কাজ করতে চায় এবং সরকারের সাথে সংস্কারের জন্য সহযোগিতা করতে চায়, কিন্তু সবাই গ্রাউন্ড রিয়েলিটি থেকে এত দূরে সরে গেছে- তারা এখন দেখতে পাবেন না।