
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে বিএনপিপন্থিদের বের করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে কাজ করায় অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ইসি পুরোপুরি পুনর্গঠন না করলে এনসিপি জাতীয় নির্বাচনে যাবে না।
বুধবার দুপুরে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে এনসিপির ডাকে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন ও স্থানীয় নির্বাচনের দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করে এনসিপির ঢাকা মহানগর শাখা। বেলা সাড়ে ১১টায় সমাবেশ শুরু হয়। বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে মিছিলসহ অংশগ্রহণ করেন এনসিপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। দুপুর দেড়টায় কেন্দ্রীয় নেতারা আসার পর সড়ক থেকে পুলিশ বেষ্টনি অতিক্রম করে ইসি ভববনের প্রধান ফটকে অবস্থান নেন তারা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে মৃদু উত্তেজনা হলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এ সময় পুলিশ বাধা দেয়নি। সমাবেশ থেকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনেরও বর্তমান কর্মকা-ের কঠোর সমালোচনা করা হয়।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, উপদেষ্টাদের মধ্যে যারা বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন, তাদের পদত্যাগ করাতে বাধ্য হব। আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি গুঁড়িয়ে দিতে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ ও অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ কাজ করছেন। আইন মন্ত্রণালয় ধ্বংসে কাজ করছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, জনগণ যেভাবে হাসিনাকে ছুঁড়ে ফেলেছে, এভাবে চলতে থাকলে আপনাদেরও ছুঁড়ে ফেলবে। নির্বাচন কমিশন বিএনপির দলীয় কার্যালয় হিসেবে কাজ করছে। ছাত্র-জনতার রক্তের ম্যান্ডেট নিয়ে বিএনপির পক্ষে কাজ করতে পারেন না। ইসিকে আগে স্থানীয় নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন বিএনপির মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করছে। এটি আমাদের জন্য লজ্জার। এতে সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা যেভাবে কমিশনকে ধ্বংস করেছে, ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তা পুরোপুরি পুনর্গঠন না করলে এনসিপি জাতীয় নির্বাচনে যাবে না।
নগর ভবনের সামনে অবস্থানের সমালোচনা করে এনসিপির এই মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, সেখানে আওয়ামী লীগের টাকায় আন্দোলন করছে বিএনপির লোকজন। সারা বাংলাদেশেই এমনটি চলছে। কুমিল্লায় এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলায় হাসনাত আব্দুল্লাহকে বিষোদগার করা হয়। তিনি ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানান।
তিনি বলেন, সরকারের উপদেষ্টাদের কেউ কেউ বিএনপির মুখপাত্র হিসেব কাজ করছেন। তা বন্ধ না করলে আপনাদের বিদায় নিতে হবে। এ সময় তিনি উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বিভিন্ন ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন।
বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের সাম্প্রতিক বক্তব্যের বিষয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, তাকে আমরা মজলুম ভেবেছিলাম। কিন্তু তার সাম্প্রতিক বক্তব্য শহীদদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি। তিনি ভারত থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে এসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। জুলাই ঘোষণাপত্রের কোনো হেরফের মেনে নেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন এনসিপির এই নেতা।
এসসিপির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ বলেন, খুনি হাসিনার নির্বাচন কমিশন (ইসি) মানি না, মানব না। এ কমিশন ফ্যাসিবাদী কমিশন। অবৈধ কমিশন আমরা মানব না। অবিলম্বে কমিশনকে পদত্যাগ করতে হবে। এটা সিন্ডিকেটের কমিশন। এ কমিশন মানব না। এ মুহূর্তে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিতে হবে।