
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়কার নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইনে বর্তমান পাঁচ সদস্যের কমিশন নিয়োগ হওয়ায় তাদের পদত্যাগ চেয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
বুধবার (২১ মে) নির্বাচন ভবনের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে দলটির নেতারা এ দাবি করেন।
এ সময় তারা, এই মুহূর্তে দরকার স্থানীয় সরকার, শেখ হাসিনার ইসি মানিনা মানবো নাসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এনসিপি’র ঢাকা মহানগর আয়োজিত এ সমাবেশে কলাবাগান প্রতিনিধি মাসুম বিল্লাহ বলেন, বর্তমান ইসি প্রশ্নবিদ্ধ কাজ করছে, অবৈধ আইনে গঠিত হয়েছে। আমরা এ ইসি পুনর্গঠনের দাবি জানাই। দ্রুত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জানাই।
শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক আবু আবদুল্লাহ বলেন, অবৈধ উপায়ে গঠিত এ ইসি মেনে নেবো না।
পল্লবী থানা শাখার রেহানা আক্তার রুমা বলেন, আমরা এখানে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছি। এ ইসির পরিবর্তন চাচ্ছি।
রমনা থানা শাখার নারী প্রতিনিধি ডা. ইশরাত জাহান বলেন, আমি একজন মা এখানে উপস্থিত হয়েছি। বড় দলগুলোর ব্যর্থতায় আমরা এনসিপিতে যোগ দিয়েছি। এ ইসিকে ধিক্কার জানাই, একটি বড় দলকে সাপোর্ট করছে। এমন ইসির পুনর্গঠন চাই।
মিরপুর মডেল থানা প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম বলেন, আজ সারাদেশের মানুষের একই চাওয়া। ঢাকা দক্ষিণ নিয়ে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইসির পদত্যাগ চাই। ইসি পুনর্গঠন চাই।
গুলশান প্রতিনিধি নূরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, আমরা যা চাই দাবি আদায় করে নিতে হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিয়ে জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। লতিফ মার্কা নির্বাচন চাই না।
উত্তরা পূর্ব থানার প্রতিনিধি মাহিন সরকার বলেন, ইসি পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে দিতে হবে। এ ইসি হাসিনা সরকারের মতো চলছে। নতুন ইসি দিয়ে স্থানীয় নির্বাচন দিন, এর আগে জাতীয় নির্বাচন এর আলাপ হবে না।
বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট নামাতে পারেননি, রাজনীতির ভাষায় কথা বলেন।
হাতিরঝিল প্রতিনিধি জিয়াউল হুদা বলেন, নতুন করে অস্থিতিশীল করার জন্য কাজ চলছে, নির্বাচন ভবনে এমন লোক আছে। এ ইসিকে সতর্ক করছি হয় অবস্থান পরিবর্তন করুন, নয়তো বলে যান। আপনারা নিরপেক্ষতা প্রমাণে ব্যর্থ।
রূপনগর প্রতিনিধি তৌহিদুর রহমান বলেন, আমরা রক্ত দিয়েছি, প্রয়োজনে আবার রক্ত দেবো। আপনারা নির্লজ্জ। ইসির পদত্যাগ চাই। আমরা মাথা নত করবো না।
মিরপুর মডেল থানা শাখার প্রতিনিধি রাসেল খন্দকার বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দক্ষিণের লোক সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। আপনাদের জনপ্রিয়তা থাকলে স্থানীয় নির্বাচনে আসেন।
ধানমন্ডি থানা শাখার প্রতিনিধি জসিম নায়েদ বলেন, দেশে কোনো ফেয়ার নির্বাচন হয় নি। আমরা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ইসি চেয়েছিলাম। একটি দল পেট ভরতে যা লাগে করছে। গত আট মাসে সেবা পাচ্ছে না জনগণ। এজন্য স্থানীয় সরকার নির্বাচন দরকার।
গেন্ডারিয়ার প্রতিনিধি নাজমুল ইসলাম বলেন, ইসির লজ্জা থাকা উচিত। নতুন বাংলাদেশে কোনো পক্ষপাতিত্ব চলবে ন।
গেন্ডারিয়ার আরেক প্রতিনিধি কামরুল হাসান বলেন, হাসিনাকে উৎখাত করেছি। আপনাদের উৎখাতে ১৫ সেকেন্ডও লাগবে না, পালাবেন কোথায়?
মোহাম্মদপুর প্রতিনিধি আবু সুফিয়ান বলেন, এটা গণদাবি। ইসি পুনর্গঠন হলে সবার ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে। নতুন ইসি চাই। অবৈধ নির্বাচনের মেয়র কিভাবে বৈধ হয়?
এনসিপি কেন্দ্রীয় সদস্য আল আমিন টুটুল বলেন, জন ভোগান্তির আন্দোলন করে জনগনকে পাশে পাবেন না। একদল চলে গেছে, আরেক দল খাওয়ার অপেক্ষায়। আমরা চাই স্থানীয় নির্বাচন, যাতে সবাই নাগরিক সুবিধা পায়।
কামরাঙ্গীচর প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান বলেন, আপনারা হয়তো পালাতে পারবেন না। এ মুহূর্তে ইসি পুনর্গঠন প্রধান সংস্কার দাবিতে পরিণত হয়েছে।
খিলক্ষেত থানার তৌফিকুল ইসলা বলেন, বিগত আমলে আইন এখনও আছে, বর্তমান ইসি কখনও নির্দলীয় ভূমিকা পালন করেনি। ইশরাক অবৈধ নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
শাহরিয়ার শুভ বলেন, নীল নকশা চলছে। ইসি পুরোপুরি বিএনপির দিকে কথা বলছে। এভাবে পক্ষপাত দুষ্ট হলে জাতীয় নির্বাচন সম্ভব নয়। এখন স্থানীয় নির্বাচন দরকার।
এনসিপি নেতারা বলেন, ২০২২ এর আইনের অধীনে এ ইসি গঠন করা হয়। এনসিপি চায় সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী নতুন ইসি গঠন করতে হবে। একই তারা বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদু’র করা একটি মন্তব্য নিয়ে তীব্র নিন্দা জানান।