Image description

আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফরিদপুর-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী তিন প্রার্থী এবং জামায়াতের একক প্রার্থী মাঠে সরব রয়েছেন। রাজনৈতিক নানা কর্মসূচির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা। 

প্রার্থীরা পোস্টার-ব্যানার সাঁটিয়ে দোয়াও চাইছেন। ফরিদপুর-৩ আসনটি ফরিদপুর সদর নিয়ে গঠিত। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী এখানে মোট ভোটার ৪ লাখ ৩ হাজার ১০৮ জন।

এ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন-বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রয়াত চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্মসম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মাহবুবুল হাসান পিংকু ও ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদারেছ আলী ইছা। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর চূড়ান্ত প্রার্থী কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও ফরিদপুর জেলার সাবেক আমির অধ্যাপক আব্দুত তাওয়াব।

সূত্রমতে, এ আসনে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ ধানের শীষ প্রতীকে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের ইমাম উদ্দীন আহমেদ। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ ফের জয়লাভ করেন।

একই বছরের জুনের নির্বাচনেও তিনিই বিজয়ী হন। ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জয় পান চৌধুরী কামাল। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিজয়ী হন। এর পরের বিতর্কিত নির্বাচনগুলোয় যথারীতি আওয়ামী লীগের প্রাথী জয়লাভ করেন।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব একেএম কিবরীয়া স্বপন বলেন, বিএনপি একটি বড় গণতান্ত্রিক দল। দল থেকে যে কেউ নির্বাচনে মনোনয়ন চাইতে পারেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনোনয়নের বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত দেবেন। তারা যাকে মনোনয়ন দেবেন, সব ভেদাভেদ ভুলে আমরা সবাই মিলে কাজ করে তাকে বিজয়ী করব।

নির্বাচন প্রসঙ্গে মাহবুবুল হাসান পিংকু যুগান্তরকে বলেন, যুবদল করার কারণে ১৯৯৫ সালে ছোট ভাই নাজমুল হাসান যুবলীগের সন্ত্রাসীদের হাতে হত্যার শিকার হন। ছোট ভাইকে হত্যা করে আমাকে দুর্বল করতে চায় সন্ত্রাসীরা। তারপরও আমি জীবনের মায়া ত্যাগ করে ১৯৯৬ সাল থেকে টানা দীর্ঘদিন যুবদলকে সংগঠিত করেছি। বিপদে আপদে এলাকার মানুষের পাশে থেকেছি। সাহায্য-সহযোগিতা করেছি। আওয়ামী দুঃশাসনের সময় বাধাবিঘ্ন পেরিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মামলা-হামলা থেকে রক্ষার চেষ্টা করেছি। তারেক রহমানের ৩১ দফা নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। দলের হাইকমান্ড এসব বিবেচনায় নিলে আশা করি আমি মনোনয়ন পাব।

চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বলেন, ফরিদপুর আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত এলাকায় আমার পরিবার বিএনপিকে সবল করেছে। আমার বাবা চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ এ আসন (সদর) থেকে কয়েকবার এমপি এবং তিনবারের মন্ত্রী। আমরা বংশপরম্পরায় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমি তারেক রহমানের নির্দেশনায় কাজ করে যাচ্ছি। জনগণের সঙ্গে আমার বাবার মতো সম্পৃক্ত হয়েছি। ফরিদপুরে ধানের শীষ মানে কামাল ইবনে ইউসুফ। সেই দাবি থেকে আমি নিশ্চিত আমাকে আগামী নির্বাচনে নোমিনেশন দেওয়া হবে।

অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদারেছ আলী ইছা বলেন, দলের হয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছি। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলাম দীর্ঘদিন, বর্তমানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হয়ে কাজ করছি। আমার আশা দল আমাকে মনোনয়ন দেবে।

জামায়াতের প্রার্থী অধ্যাপক আব্দুত তাওয়াব যুগান্তরকে বলেন, এ আসন থেকে আমাকে নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়েছে। আমরা দলের নীতি-আদর্শ মেনে সভা-সমাবেশ করে মানুষের মাঝে ভালো বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি। ফরিদপুরবাসীকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করে যাচ্ছি। ছাত্র আন্দোলনে যারা শহিদ বা আহত হয়েছেন, তাদের পাশে থেকে সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। এছাড়া শহরের যানজট নিরসন, আওয়ামী দুঃশাসনে আমাদের দলের যারা নির্যাতিত তাদের পাশে থাকা, চরাঞ্চলের দুঃখী মানুষের পাশে থাকা-সব মিলিয়ে ইনসাফপূর্ণ একটি সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় কাজ করছি।