
টেটাসেট ফ্রেন্ডস ২৪-এর ফ্ল্যাগশিপ সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে এই সপ্তাহে অতিথি ছিলেন ডা. তাসনিম জারা, যিনি সদ্য গঠিত বাংলাদেশের 'ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি'-র একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য। এই দলটি গঠিত হয়েছে জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলশ্রুতিতে, যার মাধ্যমে দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং শান্তিতে নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আগমন ঘটে।
তাসনিম জারা, যিনি একজন চিকিৎসক ও যুক্তরাজ্যপ্রবাসী শিক্ষিত তরুণী, বলেন, তিনি রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দুটি কারণে: ১. "ডাক্তার হিসেবে আমি কেবল আমার রোগীদের সাহায্য করতে পারি, কিন্তু রাজনীতি সেই সুযোগ তৈরি করে, যেখানে গোটা ব্যবস্থাকে পরিবর্তন করে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর উপকার করা সম্ভব।" ২. তিনি চান একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে- যেখানে থাকবেনা স্বজনপ্রীতি, মেরুকরণ বা দুর্নীতি; বরং থাকবে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং তথ্যনির্ভর নীতিনির্ধারণ।
তিনি আরও বলেন, "জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান এই নতুন রাজনৈতিক কল্পনাকে বাস্তবায়নের এক ঐতিহাসিক সুযোগ এনে দিয়েছে।"১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতি প্রধানত দুই দল , আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে এসেছে। এক্ষেত্রে মাত্র দুই মাস আগে গঠিত একটি নতুন দলের অবস্থান কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে?এই প্রশ্নে জারা বলেন, "রাজনৈতিক পরিমণ্ডল ইতোমধ্যেই বদলে গেছে। ছাত্রদের নেতৃত্বে গণআন্দোলন সেই 'দেয়াল' ভেঙে দিয়েছে।" "এই প্রথমবার, সব রাজনৈতিক দল বিচার বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন, সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা এবং দুর্নীতি বিরোধী পদক্ষেপ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করছে।"
নির্বাচন কবে হবে? এই প্রশ্নে জারা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার জানিয়েছে, আগামী নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে। জাতীয় সিটিজেন পার্টি এই সময়সীমার সঙ্গে একমত হলেও তাসনিম বলেন"সুপরিকল্পিত ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের আগে মৌলিক ও কাঠামোগত সংস্কার অপরিহার্য।"এ ছাড়া স্থানীয় প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়েও তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন, তবে বলেন"এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করা সম্ভব এবং আমরা আশাবাদী।"
তাসনিম জারা বলেন, "যে রাজনৈতিক দল মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত, তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। বিচারের আগে তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া উচিত নয়।"এ প্রসঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ উঠে আসে, যিনি এখন ভারতে নির্বাসিত। তিনি বলেন, "শেখ হাসিনাসহ যারাই অভিযুক্ত, তাদের দেশে এনে বিচারের সম্মুখীন করা উচিত।"দলের নেতৃত্বের বক্তব্য অনুযায়ী- বাংলাদেশে ভারত বা পাকিস্তানপন্থী রাজনীতির কোনো স্থান নেই।তাসনিম বলেন, *"আমরা সকল দেশের সঙ্গে পারস্পরিক সম্মান ও আস্থার ভিত্তিতে সম্পর্ক গড়তে চাই, তবে আমাদের মূল অগ্রাধিকার হবে বাংলাদেশের স্বার্থ।"