Image description
 

নোয়াখালীতে ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে এক কলেজে পড়া অবস্থায় জালিয়াতির মাধ্যমে অন্য কলেজে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদ বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ছাত্রদল নেতা মুরাদ হোসেন রাব্বি।

অভিযুক্ত মুরাদ হোসেন রাব্বি নোয়াখালী সরকারি কলেজের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ডিগ্রি (পাস) বিএসএস কোর্স ২য় বর্ষের ছাত্র। সম্প্রতি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ কর্তৃক ঘোষিত ভুলুয়া ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের কমিটিতে মুরাদ হোসেন রাব্বিকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

জানা যায়, গত ২৩ মার্চ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির নোয়াখালীর ৩৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের নতুন কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে ভুলুয়া ডিগ্রি কলেজের ২০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে মো. ইলিয়াছ সুজনকে সভাপতি ও মুরাদ হোসেন রাব্বিকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ভুলুয়া ডিগ্রি কলেজের ছাত্র না হয়েও মুরাদ হোসেন রাব্বির সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া নিয়ে সংগঠনের পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ, হতাশা ও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

ভুলুয়া ডিগ্রি কলেজের ২০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে মুরাদ হোসেন রাব্বিকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।ভুলুয়া ডিগ্রি কলেজের ২০ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে মুরাদ হোসেন রাব্বিকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ছবি: ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশননাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুলুয়া ডিগ্রি কলেজের একাধিক ছাত্রদল নেতা জানান, মুরাদ হোসেন রাব্বি জালিয়াতির মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদকের পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন। তিনি ভুলুয়া কলেজ থেকে ২০২০ সালে এইচএসসি পাস করেন। এর পর তিনি এ কলেজ ভর্তি না হয়ে নোয়াখালী সরকারি কলেজে ডিগ্রিতে ভর্তি হন। ভুলুয়া কলেজে তাঁর ছাত্রত্ব না থাকলেও তিনি সংগঠনের নেতাদের ধোঁকা দিয়ে সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। তাঁর এমন কর্মকাণ্ডে সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ জন্য তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। 

অভিযোগ অস্বীকার করে মুরাদ হোসেন রাব্বি বলেন, ‘ছাত্রদলের একজন পরীক্ষিত কর্মী হিসেবে আমি দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। এ জন্য বিগত দিনে ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাকে হত্যাচেষ্টা করেছে। আমি ভুলুয়া কলেজের সাবেক কমিটিতে ছিলাম। আমাকে মূল্যায়ন করে বর্তমান কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। আমার ছাত্রত্বের সকল প্রমাণ আছে।’

 

এদিকে মুরাদ হোসেনকে নিয়ে গত ৬ মার্চ ভুলুয়া ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, মুরাদ হোসেন ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষে কলেজটিতে ভর্তিকৃত উচ্চমাধ্যমিক ব্যবসায় শিক্ষা শাখার একজন ছাত্র ছিলেন। তিনি ২০২০ সালের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৩ দশমিক ৩৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

অন্যদিকে গত ১৬ এপ্রিল নোয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ করা হয়, মুরাদ হোসেন কলেজের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ডিগ্রি (পাস) বিএসএস কোর্স ২য় বর্ষের ছাত্র।

এ বিষয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মঞ্জুরুল আলম রিয়াদ বলেন, ‘মুরাদ হোসেন রাব্বি ছাত্রত্ব, ছাত্রদলের প্রাথমিক সদস্যপদ এবং তাঁর দেওয়া তথ্য স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠনের সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে তাকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সে সংশ্লিষ্ট কলেজের ছাত্র না হয়ে থাকে তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’