
বিএনপিকে পাশ কাটাতেই অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন বিলম্ব করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুজ্জামান দুদু। শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ইলিয়াস আলীসহ গুম হওয়া বিএনপির সব নেতাকর্মীর সন্ধানের দাবিতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পরিষদ আয়োজিত এক যুব সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এই অভিযোগ করেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আপনারা কি করবেন আর কি করবেন না, এটা বড় কথা না। একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য অনতিবিলম্বে একটা রোড ম্যাপ ঘোষণা করুন। কবে নির্বাচন হবে, কোনো মাসে হবে, কোনো সালে হবে বলুন। একবার ডিসেম্বরে, একবার জুন মাসে- এসব বাদ দিন। এগুলোর জন্য আমরা তৈরি নই। তিনি আরও বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আট মাস হয়ে গেল এখনো কেন উপদেষ্টাদের মধ্যে কেউ ইলিয়াস আলীর বাসায় গেলেন না।
দুদু বলেন, বর্তমান সরকারের কাজ-কামে দেশবাসী খুবই উদ্বিগ্ন। এ সরকার কি চায় সেটাও আমরা বুঝি না। বিএনপি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে, মানুষের সমর্থন আদায়ের মধ্য দিয়ে, ভোটের মধ্য দিয়ে যেন সরকার গঠন করতে না পারে সেজন্য নির্বাচনকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে আমরা মনে করি।
দুদু বলেন, আমরা মনে করি, বাংলাদেশে এখন যে অবস্থা দাঁড় করানো হয়েছে তাতে ষড়যন্ত্রকারীরা যারা ১৫ থেকে ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্র ধরে ধ্বংস করেছে, তাদের কোনো না কোনোভাবে রক্ষা করা হচ্ছে, কোনো না কোনোভাবে ষড়যন্ত্র করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তবে যারা অর্থ লুটপাট করেছে তাদের আইনের আশ্রয়ে নিয়ে আসুন।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে দুদু বলেন, যারা প্রশাসনে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ফ্যাসিবাদকে প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ দিয়েছে, রক্ষা করেছে, থাকার ব্যবস্থা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিন। সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, আগেও বলেছি, শেখ হাসিনাকে যখন তাড়াতে পেরেছি, অন্য ফ্যাসিবাদের যদি উদ্ভব ঘটে তাদের তাড়ানো দেশের মানুষের ‘ওয়ান-টু’র ব্যাপার। সেটি মাথায় রেখে কার্যক্রম হাতে নেবেন আপনাদের ফুলের মালা দিয়ে গ্রহণ করেছি, ফুলের মালা দিয়ে বিদায় জানাতে চাই। এটাই এখনো পর্যন্ত বিএনপির অবস্থান।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, গুমের বিচার অবিলম্বে দৃশ্যমান চাই। ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ গুম হওয়া নেতাকর্মীদের সন্ধান চাই। আমরা জানি না তারা এখনো জীবিত আছেন, না মারা গেছেন। শেখ হাসিনা তাদের শুধু গুম করে নাই, অপহরণ করে নাই, নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে। আমি এই সভায় দাবি জানাচ্ছি যে, ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ যাদের আমরা এখনো সন্ধান পাই নাই এই অপরাধের জন্য আমি শেখ হাসিনার ফাঁসি দাবি করছি।
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক কামাল আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন খোকনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য আরিফা সুলতানা রুমা প্রমুখ।