Image description
 

নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নিবন্ধনের আবেদনের সময়সীমা ৯০ দিন বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবের দপ্তরে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে।

সিইসির একান্ত সচিব আশ্রাফুল আলম ও এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আগামী রবিবার শেষ হচ্ছে এবারের দল নিবন্ধন আবেদনের সময়। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ঘোষিত সময় ২০ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।

ডিসেম্বরে ভোটের লক্ষ্য ধরে ১০ মার্চ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন। ২০ এপ্রিল হচ্ছে আবেদনের শেষ সময়সীমা।

জানতে চাইলে সিইসির একান্ত সচিব বলেন, ‌বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবের দপ্তরে এনসিপির পক্ষ থেকে সংস্কার ও দল নিবন্ধনের সময় বাড়ানোর বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

দলটির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রবিবার সিইসির বৈঠকের সময়সূচি রয়েছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

‘রবিবার ১২টায় এনসিপি প্রতিনিধি দল আসবে, সিইসির সঙ্গে বৈঠকের সূচি রয়েছে’ বলেন তিনি।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার জানান, মৌলিক সংস্কার ও নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা ন্যূনতম ৯০ দিন বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা টিম ইসির সাথে দেখা করে উদ্বেগগুলো জানাবে। সেখানে নিবন্ধন সময়সীমা বাড়ানোসহ বেশ কিছু বিষয়ে আমাদের আলাপ হবে।’

যা বলছে এনসিপি

ঐতিহাসিক জুলাই-আগস্ট ২৪ গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় গণমানুষের প্রত্যাশার আলোকে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গণঅভ্যুত্থানের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন সংস্কারমূলক কার্যক্রম শুরু করে। তার মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠন করা হয় এবং উক্ত কমিশন একটি প্রতিবেদনসহ তাদের সুপারিশ কর্তৃপক্ষের নিকট প্রদান করলেও অদ্যবধি মৌলিক সংস্কার কার্যক্রমের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।

নির্বাচন কমিশনের মৌলিক সংস্কার এবং বিদ্যমান আইন যুগোপযোগী না করেই বর্তমান নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য গত ১০ মার্চ, ২০২৫ তারিখে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সংস্কারের পূর্বেই তড়িৎ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে সমালোচনার জন্ম দেয়।

২০০৮ সালের রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা ও প্রাসঙ্গিক আইনের অধীনে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন শর্তাবলিসমূহ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অসাংবিধানিক। পূর্বের স্বৈরাচারী সরকারের আমলে তৈরি এই বিধিগুলো রাজনৈতিক বহুত্ববাদকে সংকুচিত এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য প্রণীত।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন নিজেই জেলা পর্যায় ১০% এবং উপজেলা পর্যায়ে ৫% কার্যালয় স্থাপনের শর্ত সহজীকরণের পাশাপাশি প্রতি পাঁচ বছরে নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন নবায়নের বাধ্যবাধকতার প্রস্তাবের কথাও তুলে ধরে এনসিপি।

সুতরাং বর্তমানের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রণয়ন বা সংশোধন পূর্বক নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হওয়া দরকার।

একই সঙ্গে মৌলিক সংস্কারের আলোকে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, বিদ্যমান নিবন্ধিত দলের নিবন্ধন হালনাগাদ করাও আবশ্যক। এমতাবস্থায়, অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত মৌলিক সংস্কার সাধন এবং নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা ন্যূনতম ৯০ দিন বর্ধিত করার অনুরোধ জানায় এনসিপি।

বিডি প্রতিদিন