
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলা তুলে নিতে ভুক্তভোগী ও তার ছেলেকে খুন করে লাশ গুমের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব আবু কাউছার আহমেদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তবে আবু কাউছার আহমেদের দাবি, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ নেতা রবি চেয়ারম্যান এ ষড়যন্ত্র করছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ এপ্রিল বিধবা ওই নারী বাড়িতে একা ছিলেন। এ সুযোগে মুসা মিয়া, কামাল মিয়া ও হৃদয় মিয়া তাকে ধর্ষণ করে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে মুসা মিয়া, কামাল মিয়া ও হৃদয় মিয়ার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে নবীনগর থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, মামলা দায়েরের পর থেকেই মূল অভিযুক্তরা এবং নবীনগর উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব আবু কাউছার আহমেদ আমাকে ও ছেলেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ক্রমাগত চাপ দিচ্ছেন। এমনকি আমাদের খুন করে লাশ গুম করার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রাণের ভয়ে আমি বর্তমানে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছি। এ হুমকির ঘটনায় গত ১৪ এপ্রিল রাতে আবু কাউছার আহমেদের বিরুদ্ধে নবীনগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।
হুমকির অভিযোগ প্রসঙ্গে নবীনগর উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব আবু কাউছার আহমেদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে খুন করে লাশ গুম করার হুমকির যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। বাঙ্গরা বাজারের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল আউয়াল রবি আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য তার আশ্রিত ভুক্তভোগী নারীকে ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে এসব রটাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ধর্ষণে অভিযুক্ত মুসা মিয়া, কামাল মিয়া বা হৃদয় মিয়া এদের কারো সঙ্গেই আমার ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক কোনো সম্পর্ক নেই।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার অন্যতম অভিযুক্ত মুসা মিয়া তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওই নারী আমাকে হয়রানি করার জন্যই এ অভিযোগ করেছে।
নবীনগর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং হুমকির অভিযোগ দুটি বিষয়ে আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। আদালত কর্তৃক নির্দেশিত সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার তদন্ত এবং হুমকির বিষয়ে করা লিখিত অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।