Image description

দুই যুগ ধরে বিএনপি ধ্বংসের মিশনে ব্যস্ত প্রথম আলো-ডেইলি স্টার গোষ্ঠী। ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে এই সুশীল মুখপত্র যেন বিএনপির বিরুদ্ধে রীতিমতো জিহাদ ঘোষণা করেছিল। বিএনপির বিরুদ্ধে প্রথম আলোর অপপ্রচারকে আমরা তিন ভাগে ভাগ করি।

প্রথমত, বিএনপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যাচার; দ্বিতীয়ত, বিএনপির সঙ্গে জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা আবিষ্কারের চেষ্টা; তৃতীয়ত, দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বিএনপির আন্দোলন, সংগঠন সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা এবং বিএনপি সম্পর্কে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা।

২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ভূমিধস বিজয় পায়। দুই-তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী হয়ে খালেদা জিয়া তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। বিএনপির এই বিজয় বাংলাদেশবিরোধী এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদে বিশ্বাসী অনেকে মেনে নিতে পারেনি। তারা বিএনপির বিজয়ের পর থেকেই শুরু করে নানা রকম ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত।

আর এই ষড়যন্ত্র চক্রান্তে মুখ্য কুশীলবের ভূমিকা পালন করেছিল প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার গোষ্ঠী। তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন ও পুনরুদ্ধারের জন্য ২০০১ সাল থেকেই মিশন শুরু করে। এই নীলনকশার একটি ছিল বিএনপির দুর্নীতির মনগড়া কল্পকাহিনি প্রচার। গোয়েবলসীয় এই প্রচারণার মাধ্যমে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের কাজ শুরু করে।
২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৬ সালের অক্টোবর সময় পর্যন্ত প্রথম আলো পত্রিকা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বিএনপির বিরুদ্ধে এক হাজারের বেশি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রথম আলো। এর মধ্যে ৩৩৮টি প্রতিবেদন ছিলো লিড নিউজ। একটি সংবাদপত্র যেকোনো বিষয়ে বস্তুনিষ্ঠভাবে দুর্নীতির সংবাদ পরিবেশন করতেই পারে। কিন্তু প্রথম আলোর প্রায় এক হাজার দুর্নীতির সংবাদের সব কটিই ছিল ভুয়া ও ভিত্তিহীন। পরবর্তী সময়ে এসব অভিযোগ অসত্য প্রমাণিত হয়েছে।
কিন্তু এসব মিথ্যাচারের জন্য প্রথম আলো বা ডেইলি স্টার গোষ্ঠী কখনো ক্ষমা চায়নি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ২০০১ সাল থেকেই প্রথম আলো বাংলাদেশে বিরাজনৈতিকীকরণের মিশনে নেমেছিল। বিএনপির চরিত্র হনন তাদের সম্পাদকীয় নীতির বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়। এ সময় পর্বে বিএনপির বিরুদ্ধে তথাকথিত দুর্নীতির যে অভিযোগগুলো উত্থাপিত হয়েছিল, সে-সংক্রান্ত সংবাদগুলো যদি আমরা আইনের মাপকাঠিতে বিশ্লেষণ করি, তাহলে দেখব প্রায় সব কটি প্রতিবেদনে প্রথম আলো দণ্ডনীয় অপরাধ করেছে।

প্রথম আলোতে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন ছিল ‘পদে পদে দুর্নীতি, ফাইবার কেবল স্থাপন অনিশ্চিত, দোষী ব্যক্তিদের রক্ষা করতে পুনঃ দরপত্র?’ ২০০৫ সালের ৪ এপ্রিল প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, দুর্নীতির কারণে ফাইবার কেবল স্থাপন সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করে বের করেছে, সেখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি। বরং দেশের স্বার্থ রক্ষায় পুনঃ দরপত্র ডাকা হয়েছিল। কিন্তু এ জন্য প্রথম আলো কখনো দুঃখ প্রকাশ করেনি।

প্রথম আলো লুৎফুজ্জামান বাবরের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ‘পুলিশ নিয়োগে দলীয়করণ ও অর্থের লেনদেন হয়েছে’ শিরোনামে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ নিয়োগ পেয়েছে টাকার বিনিময়ে, অন্যরা বিএনপির দলীয় লোক। আবার ‘ম্যাডাম তারেকের কথা বেশি শুনতেন।’ লুৎফুজ্জামান বাবরের বরাত দিয়ে প্রথম আলো এ ধরনের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ২০০৭ সালের ৫ জুন। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, রিমান্ডে থাকা অবস্থায় বাবর এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো আদালতের কোনো নথিতেই রিমান্ডে বাবরের এমন জবানবন্দির উল্লেখ নেই। এ ছাড়া রিমান্ডের বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশ দণ্ডনীয় অপরাধ।

পরবর্তী সময়ে জানা যায়, এ ধরনের কোনো কথাই লুৎফুজ্জামান বাবর জিজ্ঞাসাবাদে বলেননি। এমনকি পুলিশে দুর্নীতির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন যে অনুসন্ধান করেছিল ২০১০ সালে, সেই অনুসন্ধানের ফলাফলও ছিলো শূন্য। আওয়ামী লীগ আমলেও ওই দুর্নীতির হদিস মেলেনি।

বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময়েই প্রথম আলো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ‘দুর্নীতি : বিশ্বব্যাংক টাকা ফেরত চায়’ শিরোনামে। ২০০৫ সালের ৮ নভেম্বর প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, পৌরসভার সেবা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা এবং জাতীয় পুষ্টি কর্মসূচির তিনটি প্রকল্পে ছয় কোটি ৮০ লাখ টাকার অনিয়ম হয়েছে। পরবর্তী সময়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত করে দেখা যায় যে এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।

প্রথম আলোর আরেকটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‘৪৫ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী প্রকল্পের গাড়ি ব্যবহার করছেন। জ্বালানি বাবদ মাসে ব্যয় ১০ লাখ টাকার বেশি।’ পরবর্তী সময়ে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যখন একটি মন্ত্রণালয়ের গাড়ি থাকে না বা মন্ত্রণালয়ের গাড়ি অকার্যকর হয়, তখন মন্ত্রীরা প্রকল্পের গাড়ি ব্যবহার করতেই পারেন এবং ওই গাড়ি গ্রহণের মধ্যে কোনো ধরনের দুর্নীতি বা অনিয়ম নেই।

বিএনপির শাসনামলে প্রথম আলো প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নে সরকার ব্যর্থ’। কিন্তু বাস্তবতা হলো, বিএনপি পরিকল্পিত বিদ্যুৎ উন্নয়নের কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল, যে কর্মসূচির ফলে সারা দেশে একটি বিদ্যুৎ পরিকাঠামো তৈরি হয়েছিল। ‘প্রতিমন্ত্রীর জন্য নাইকোর কোটি টাকা দামের গাড়ি’ শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রথম আলো, যার উদ্দেশ্য ছিল বিএনপিকে ঘায়েল করা এবং আওয়ামী লীগের মিশন বাস্তবায়নে বিএনপিকে দুর্নীতিবাজ হিসেবে চিহ্নিত করা।

‘ট্রান্সপারেন্সির সূচকে বাংলাদেশ টানা পঞ্চমবার শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ।’ আওয়ামী লীগ শাসনামলে প্রথম আলো এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করে ভেতরের পাতায় অথবা গুরুত্বহীনভাবে। কিন্তু ২০০৫ সালের ১৯ অক্টোবর প্রথম আলো ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির সূচকে টানা পঞ্চমবার বাংলাদেশ প্রথম স্থান লাভ করা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছিল প্রথম পাতায় লিড নিউজ হিসেবে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রথম আলোর অন্যতম সাংবাদিকতা ছিল বিএনপি নেতাদের চরিত্র হনন। বিএনপির বিরুদ্ধে অসত্য গালগল্প লিখে তারা আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের রসদ জুগিয়েছে। জনমনে বিএনপি সম্পর্কে সৃষ্টি করেছে নেতিবাচক ধারণা। কোনো অভিযোগ পেলেই তার সত্যতা যাচাই না করে ফলাও করে প্রচার করেছে।

২০০৫ সালের ৩১ মার্চ প্রথম আলো একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যার শিরোনাম ছিল ‘১০০ প্লটের ৮৪টিই পেলেন বিএনপির মন্ত্রী-সাংসদরা। সস্তায় বিএনপি পল্লী’। এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার তদন্ত করে। কিন্তু তদন্তে দেখা যায়, প্লট বরাদ্দে কোনো অনিয়ম হয়নি। ‘অভিজাত এলাকায় এবার বিএনপি পল্লী’ শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ২০০৫ সালের ৩ জানুয়ারি। উদ্দেশ্য একই, বিএনপির চরিত্র হনন করা। এ ছাড়া বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম এবং বিএনপির বিভিন্ন নেতার বিরুদ্ধে মনগড়া মিথ্যাচার করে প্রথম আলো বিএনপিকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। এসব প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আওয়ামী লীগ শাসনামলে এই মামলাগুলোকে হয়রানির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এসব মামলায় সাজা হয় শতাধিক বিএনপি নেতার। অনেককে কারাগারে থাকতে হয় বছরের পর বছর। এভাবেই আওয়ামী লীগের হাতে বিএনপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অস্ত্র তুলে দিয়েছিল প্রথম আলো।

বিএনপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের পাশাপাশি ২০০১ সাল থেকেই বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে সামাজিক অঙ্গনে চিহ্নিত করার মিশনে নামে প্রথম আলো-ডেইলি স্টার গোষ্ঠী। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তারা প্রমাণের চেষ্টা করে যে বিএনপি-জামায়াত বেশিদিন ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশ আফগানিস্তান হয়ে যাবে। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বে বিএনপির ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়। আওয়ামী লীগ পুনর্বাসিত হয়। একের পর এক বাংলাদেশে জঙ্গি আবিষ্কারের গল্প ফাঁদে এবং এর সঙ্গে বিএনপিকে জড়িয়ে আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণের চেষ্টা করে যে বিএনপি জঙ্গিদের মদদদাতা। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় বিএনপিকে যুক্ত করা এবং বিএনপির সঙ্গে জঙ্গিদের সংশ্লিষ্টতা পুরোপুরি প্রথম আলোর ‘কল্পনা’। এই কল্পনা রূপকথাকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল ২০০১ থেকে ২০০৮ সালে। আর এসব মিথ্যাচারের মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিএনপিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার। বাংলাদেশ রাষ্ট্রকেও কলঙ্কিত করে দেশবিরোধী এই সংবাদপত্রগোষ্ঠী।

সম্প্রতি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বিএনপির সঙ্গে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার সম্পৃক্ততাকে ‘কল্পকাহিনি’ হিসেবে নাকচ করে দিয়েছেন। দেশের সর্বোচ্চ আদালত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার সব আসামিকে খালাস দেন। শুধু তা-ই নয়, ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায়ও প্রথম আলো জঙ্গিবাদ আবিষ্কার করেছিল। এই জঙ্গিবাদের ঘটনা নিয়ে বিভিন্নভাবে নানা রকম নাটক সাজানোর চেষ্টা করেছিল প্রথম আলো গোষ্ঠী। শুধু তা-ই নয়, সারা দেশে জঙ্গিবাদ আবিষ্কারের জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল সব স্থানীয় প্রতিনিধিকে। সেই নির্দেশনার অংশ হিসেবে ২০০৭ সালের ৩০ জানুয়ারি প্রথম আলো প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যে প্রতিবেদনের মধ্যে বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জঙ্গি সংগঠন’ হিসেবে পত্রিকাটি ঘোষণা করে। ওই প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল ‘জঙ্গিবাদের মদদদাতা বিএনপির ৮ মন্ত্রী-সাংসদ’।

বিএনপির ৮ মন্ত্রী-সাংসদকে সরাসরি জঙ্গিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করেছিল প্রথম আলো। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হক। এ ছাড়া সে এলাকার জনপ্রিয় এমপি এবং সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, নাদিম মোস্তফা এবং বাংলা ভাইয়ের এলাকার এমপি আবু হেনাকেও তারা জঙ্গিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে অভিহিত করেছিল।

তাঁদের ছবিসহ প্রথম আলোর প্রথম পাতায় প্রধান প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এটি কী ধরনের মারাত্মক অপসাংবাদিকতা তা চিন্তা করলেও গা শিউরে ওঠে। কারণ সরাসরি একটি রাজনৈতিক দলের আটজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও সংসদ সদস্যকে কোনো রকম তথ্য-প্রমাণ ছাড়া জঙ্গিবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করাটা ভয়ংকর অপরাধ। কিন্তু এ ধরনের ঘৃণ্য দেশবিরোধী অপরাধ করেও প্রথম আলো-ডেইলি স্টার গোষ্ঠী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিএনপির শাসনামলে প্রথম আলো একের পর এক জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন কাল্পনিক মনগড়া বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করেছে। ২০০৫ সালের ৫ অক্টোবর ‘একই জঙ্গিরা দুইবার বোমা ফাটাল’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে প্রথম আলো। এই প্রতিবেদনে তারা জঙ্গিবাদের সঙ্গে জামায়াতেরও যোগসূত্র আবিষ্কার করে। এসবই ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসেছিল। ফলে জামায়াতও ছিল প্রথম আলোর ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের টার্গেটে। শুধু তা-ই নয়, ‘জামায়াতের রাজনীতিতে হতাশ হয়ে জিহাদের পথে জঙ্গিরা’—এই শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে জামায়াতকে সরাসরি জঙ্গিবাদী সংগঠন হিসেবে চিত্রিত করে প্রথম আলো। শুধু এটাই নয়, প্রশাসন যে জঙ্গিবাদকে মদদ দিচ্ছে সে ব্যাপারেও প্রথম আলো নানা রকম গালগল্প ছেপেছিল। ‘শিবির নেতা সালেহীকে সুযোগ করে দিয়েছে রাজশাহী পুলিশ’—এই শিরোনামে প্রথম আলো প্রতিবেদন প্রকাশ করে সরকার যে জঙ্গিবাদকে মদদ দিচ্ছে তা প্রমাণের চেষ্টা করে। ‘বগুড়ায় আরো ২৬ হাজার গুলি এবং ৩২ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে প্রথম আলো প্রমাণের চেষ্টা করে, বিএনপি ও সরকার জঙ্গিবাদকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। সরকার জঙ্গি নিয়ন্ত্রিত।

প্রথম আলো প্রকাশিত সবচেয়ে ভয়ংকর প্রতিবেদনটি ছিল ‘হত্যা নির্যাতন করেও রেহাই পাচ্ছে বাংলা ভাই’। এই তথাকথিত ‘বাংলা ভাই’ ছিল প্রথম আলোর আবিষ্কার। এই ‘বাংলা ভাইয়ের’ মাধ্যমেই প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার গোষ্ঠী প্রমাণ করার চেষ্টা করে, বাংলা ভাইদের মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াত দেশে জঙ্গি রাষ্ট্র কায়েম করছে। মুফতি আব্দুল হান্নানও হলেন প্রথম আলোর আবিষ্কার এবং মুফতি হান্নানের বক্তব্য ‘আমি চার জোটের সমর্থক’—এই বক্তব্যের মাধ্যমে চারদলীয় জোটকেই প্রথম আলো জঙ্গি জোট হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করেছিল। পরবর্তী সময়ে এটি প্রমাণিত হয় যে মুফতি হান্নানের বক্তব্য ছিল অসত্য। এটা প্রথম আলোর আরেকটি মিথ্যাচার। প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার এভাবেই ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পটভূমি তৈরি করে। টানা ১৫ বছর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে এই দুই পত্রিকা নিবিড়ভাবে কাজ করেছে। তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইস্যুকে সামনে এনেছে। বিএনপির আন্দোলন নিয়ে ঠাট্টা-মসকরা করে জনগণের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। প্রথম আলো, ডেইলি স্টার গণতন্ত্র ধ্বংস করতে চায়। এরা দেশের উন্নয়নের প্রতিপক্ষ।