
টুডে রিপোর্ট
৫ই আগস্ট থেকেই তুণমূল থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ের বিএনপি নেতাকর্মীরা বেপরোয়া দখল ও চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়। সামাজিক মাধ্যমে এর প্রবল নিন্দা হলেও এটিকে ঠেকানোর জন্য দলটি তেমন কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। দীর্ঘদিন বিষয়টিকে অস্বীকার করা হয়েছে এবং অভিযোগকারীদেরকে হেনস্তা করা হয়েছে। এক পর্যায়ে কয়েকজন কর্মীকে বহিস্কার করা হয়, যাদের অনেককে আবার দলটি ফিরিয়েও নিয়েছে। এই দখল ও চাঁদাবাজির আওতা সীমাহীন। গ্রামের ভ্যানস্ট্যান্ড থেকে শুরু করে টিভি চ্যানেল, প্রশাসনের পদ – সব কিছুই দখল করা হয়েছে এবং সবার কাছ থেকে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। এর সাথে আরেকটি কাজ করা হয়েছে - বিএনপি নেতা এটর্নী জেনারেল হওয়ার সুযোগে বিএনপি সমর্থক শীর্ষ সন্ত্রাসীদেরকে জেল থেকে ছাড়িয়ে এনে অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণে বসানো হয়েছে।
এই বিষয়গুলো নিয়ে বিএনপি সমর্থকেরা বিব্রত হয়েছেন। তখন এর একটি সহজ ব্যাখ্যা দলটি থেকে দেয়া হয়েছে। তা হচ্ছে – এতো বড় দলের উপর হাই কমান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে বাস্তব পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দলটির হাই কমান্ড নির্বাচন নিয়ে মেটিকুলাস ডিজাইনের অংশ হিসেবেই এই দখল ও চাঁদাবাজিকে অনুমোদন করেছেন।
আসুন দেখা যাক, কী সেই ডিজাইন:
ক) নির্বাচনের আগের রাতে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ভয় ভীতি প্রদর্শন, কেন্দ্র দখল, কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীর অ্যাজেন্টকে ঢুকতে না দেয়া – ইত্যাদি কাজগুলো করে থাকে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সমর্থন থাকলে খুব সহজে ১০-১৫% ভোট বেশি পাওয়া যায়। তৃণমূল পর্যায়ের চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের কারণে বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়ের সন্ত্রাসীদের উপর বিএনপির শতভাগ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
খ) স্থানীয় হাট-বাজারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখলে রাখার ফলে জনমানসে বিএনপি এই ধারণা বদ্ধমূল করে দিতে পেরেছে যে, আগামী নির্বাচনে তারাই ক্ষমতায় আসছে। এর ফলে, অধিকাংশ মানুষ প্রকাশ্যে তাদের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজেদের সমস্যায় ফেলতে চাইবে না।
গ) টিভি চ্যানেল ও অন্যান্য মিডিয়া দখল করার ফলে নির্বাচনের আগে তারা প্রতিদ্বন্দী দলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে পারবে।
ঘ) প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো বিএনপির দখলে। ফলে প্রশাসনকে দলটি তাদের পক্ষে কাজে লাগাতে পারবে।
ঙ) বর্তমানে দলটির প্রধান প্রতিদ্বন্দী জামায়াতে ইসলামির নেতাদেরকে হারানোর জন্য ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশন সংসদীয় আসনের সীমানা পুন:নির্ধারণ করে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন শপথ নেয়ার পর পরই আগের সীমানায় ফিরে যাবার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু, পরবর্তীতে জানানো হয় যে তারা আওয়ামী লীগ আমলে নির্ধারিত সীমানার ভিত্তিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করবেন।