Image description

পয়লা এপ্রিল। মানুষকে বোকা বানানোর দিন।  বছরের পর বছর ধরে এদিন বন্ধু-বান্ধব, ভাইবোন, কাছের মানুষ এবং সহকর্মীদের বোকা বানানো হয়। সহজ কথায় বলা যায়, নিরলস হাস্যরস উদযাপনের জন্য বরাদ্দ একটা দিন।

 

জীবনে অন্তত একবার বোধ হয় আমরা সবাই ‘এপ্রিল ফুল’ হয়েছি। মজার বিষয় হলো, এদিন বোকা হওয়ার পরেও কেউ রাগ করেন না, বরং নিজেই সেই খেলায় জড়িয়ে পড়েন। 

আনন্দ, মজা, হাসিঠাট্টার মধ্য দিয়ে পালিত হতো এপ্রিল ফুল বলে। এদিন যেকোনো বয়সের মানুষ উৎসাহের সঙ্গে একে অপরকে বোকা বানানোর খেলায় অংশ নেয়।

নিতান্তই নির্মল আনন্দ উপভোগ করতে দিনটি নিয়ে মশকরার মধ্য দিয়ে কেটে যেত। সারা বিশ্বে এটি পালিত হলেও বাংলাদেশে এখন খুব একটা দেখা যায় না। কারণ এই বোকা বানানোর দিবসটির জন্মই বিদেশে।
 

এপ্রিল ফুলের ইতিহাস

‘এপ্রিল ফুলস ডে’র সূচনা ও ইতিহাস নিয়ে অনেক কাহিনি ও নানা মতভেদ প্রচলিত আছে।

উনিশ শতক থেকে জনপ্রিয় এপ্রিল ফুলস ডে-র উৎস নিয়ে জিওফ্রে চসারের ‘ক্যানটারবেরি টেলস’-এ ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।  

 

কিভাবে শুরু হলো এপ্রিল ফুলস ডে

ক্যালেন্ডারের ৩২ মার্চ  

কথিত আছে যে ১৩৮১ সাল থেকে এই দিনটি উদযাপন শুরু হয়। আসলে ইংল্যান্ডের রাজা দ্বিতীয় রিচার্ড ও বোহেমিয়ার রানি অ্যান বাগদানের ঘোষণা করেন। বাগদানের তারিখ রাখা হয়েছিল ৩২ মার্চ। মানুষ উদযাপন শুরু করেন।

পরে তারা বুঝতে পারেন যে ক্যালেন্ডারে ৩২ মার্চ কোনো তারিখ নেই। তখন তাদের বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে তারা বোকা হয়েছেন। এর পর থেকে এপ্রিল ফুলস ডে উদযাপন শুরু হয়।

 

ঠাট্টা-বিদ্রূপ শুরু 

এই দিনটি ঘিরে আরো একটি বিশ্বাসও রয়েছে, আগে ফ্রান্সে এপ্রিলেই নববর্ষ উদযাপিত হতো। ১৫৮২ সালে চার্লস পোপ গ্রেগরি দ্বাদশ ফ্রান্সে পুরনো ক্যালেন্ডার পরিবর্তন করে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার চালু করেন। তা সত্ত্বেও অনেকে পুরনো ক্যালেন্ডার অনুসরণ করতে থাকেন। এর পর থেকে ১ জানুয়ারিতে নতুন বছরের সূচনার দিন হিসেবে পালন হওয়া শুরু হয়।

তবে অনেকে এটি মানতে অস্বীকার করেন এবং এপ্রিল মাসেই বর্ষারম্ভের দিন পালন করতে থাকেন। যারা নতুন ক্যালেন্ডারকে সমর্থন করেছেন তারা এপ্রিলে নতুন বছর সমর্থনকারীদের ঠাট্টা-বিদ্রূপ করা শুরু করেছিলেন। এই ব্যক্তিদের ‘এপ্রিল ফুল’ বলা শুরু হয় এবং এ জন্য এপ্রিলের প্রথম দিনেই ‘এপ্রিল ফুলস ডে’ হিসেবে প্রচলিত হয়।

রোমান উৎসব হিলারিয়া

কিছু মানুষ আবার এই দিনটিকে প্রাচীন রোমান উৎসব ‘হিলারিয়া’র সঙ্গে সংযুক্ত করেন। যেটি একটি হাসি ও মজার উৎসব। এমনকি এই উৎসবে সবাই অন্যকে বোকা বানানোর জন্য এবং বসন্ত উপভোগ করতে ছদ্মবেশে থাকতেন। 

উপমহাদেশ উদযাপন শুরু

কিছু প্রতিবেদন অনুসারে, ব্রিটিশরা ভারতে ১৯ শতকে এই দিনটি উদযাপন শুরু করে। যদিও গত কয়েক বছরে এটি উদযাপনের উন্মাদনা বেড়েছে। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সম্পর্কিত মিম মারাত্মকভাবে ভাইরাল হয়। তবে মজা করার সময় মাথায় রাখা জরুরি, আপনার কোনো কথা যেন অপর মানুষটিকে আঘাত না করে।

সূত্র : আজতক বাংলা