Image description

সেনাবাহিনী নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা তার একান্ত ব্যক্তিগত বক্তব্য নাকি দলীয় স্টেটমেন্ট বিষয়টি স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।

 

গতকাল রবিবার দেশের জাতীয় গণমাধ্যম দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, ‘৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রশাসন ওভারঅল কারফিউ জারি থেকে শুরু করে তখন একটা পরিস্থিতি ছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আমরা দেখেছি সেনাবাহিনী, ছাত্র-জনতার কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে। ছাত্র-জনতাকে সহযোগিতা করেছে। এখন পর্যন্ত দেশের আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখার জন্য, ফিরিয়ে আনার জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছে। এটাকে আমরা নিঃসন্দেহে অ্যাপ্রিশিয়েট করব।’

সেনাবাহিনীর একটি বড় অংশই দেশকে ভালোবাসে উল্লেখ করে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ফ্যাদিবাদের বিরুদ্ধে তারা তখন অবস্থান নিয়েছিল। হয়ত কারও কারও মাঝে ভুলত্রুটি থাকতে পারে, আবার অভিন্ন কোনো চিন্তা থাকতে পারে- এটা একান্তই তাদের নিজস্ব বিষয়। সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের সরকার আছে, সরকার বিষয়টি নিয়ে ভাববে।’

হাসনাতের পোস্টের বিষয়ে শিবির সভাপতি বলেন, ‘হাসনাত আব্দুল্লাহ যে পোস্ট দিয়েছেন, তিনি একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তিত্ব। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে ওনার অনেক ভূমিকা ছিল। অনেক ত্যাগের নজরানা তিনি দেখিয়েছেন। তো তিনি একটি রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্টে আছেন। আমরা যেটা লক্ষ্য করেছি যে, ওনার এই বক্তব্যের সঙ্গে ওনার দলেরই আরেকজন সহযোগী ভিন্ন মত দিচ্ছেন।এই বক্তব্যটা তার একান্ত ব্যক্তিগত বক্তব্য নাকি দলীয় স্টেটমেন্ট এটা আসলে আমাদের কাছে এখনো ক্লিয়ার না।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘নতুন দল হিসেবে দেশ কিংবা রাষ্ট্রের কোনো একটি বিষয়ে তাদের আরও অর্গানাইজ হওয়া দরকার।তাদের আরও বেশি গঠনমূলক করা যেতে পারে।’ 

‘তবে একটা বিষয় আমরা আমাদের জায়গা থেকে ক্লিয়ার করব যে ফ্যাদিবাদের কবর আসলে ৫ আগস্টেই রচিত হয়ে গেছে’, মন্তব্য করেন জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে তার রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ নিজেই নিজের করব রচনা করে চলে গেছে। এই জায়গা থেকে আসলে নতুন করে এটাকে জাগিয়ে তোলা এটার কোনো যৌক্তিকতা বা প্রাসঙ্গিকতা আমরা দেখছি না। মূলত ফ্যাদিবাদ এখানে কোনোভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে না। এটাই হচ্ছে জুলাইয়ের শহীদদের প্রতি আমাদের কমিটমেন্টের দায়বদ্ধতা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আহতদের কাছে এটা আমাদের দায়বদ্ধতা যে কোনোভাবেই ফ্যাদিবাদকে আমরা নতুন করে জেগে ওঠা অথবা নতুন কোনো লেবাসে কেউ এখানে ফ্যাসিবাদ করবে অথবা নিজে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠবে- এটা কখনোই ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না।’ 

জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট যারা, তারা যে গণহত্যা চালিয়েছে নিঃসেন্দেহে এর বিচারটা এখন আমাদের কাছে অনেক বেশি মুখ্য। বিশেষ করে শহিদ পরিবারের সঙ্গে আমরা যখনই দেখা করেছি, কথা বলেছি তারা অ্যানি হাউ ন্যায়বিচার যেন প্রতিষ্ঠিত হয়, তাদের সন্তান বা ভাই হারানোর যে কষ্টগুলো সেটা নিঃসন্দেহে বিচার হতে হবে এবং বিচারের মধ্য দিয়েই ফ্যাসিজমের কবর রচিত হবে।’

উল্লেখ্য, ভারতের পরিকল্পনায় সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরিন শারমিন চৌধুরী এবং ফজলে নূর তাপসকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফেরানোর ষড়যন্ত্র চলছে বলে জানিয়েছিলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। গত বৃহস্পতিবার সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন। 

ওই পোস্টে গত ১১ মার্চ তিনিসহ আরও দুজনকে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ক্যান্টনমেন্ট থেকে ওই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় বলেও গোপন তথ্য তুলে ধরেন হাসনাত।