
ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারা দেশে বিভিন্ন থানায় দায়ের করা হয় হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অসংখ্য মামলা। এসব মামলার অধিকাংশই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-কেন্দ্রিক গুলিতে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা। মামলাগুলোয় নিয়মিত গ্রেফতার হচ্ছেন আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের নিয়মিতই হাতে হাতকড়া, মাথায় হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে আদালতে উত্থাপন করা হয়। গত দুই সপ্তাহ ধরে আসামিদের হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে আদালতে হাজির করছে পুলিশ। আর এবার প্রথমবারের মতো ঢাকার আদালতে ডাণ্ডাবেড়ির দেখা মিললো নিষিদ্ধ-ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় এক সাবেক নেতার বিরুদ্ধে। আসামির নাম আবু জাফর (৩৪)। ছাত্রলীগের শোভন-রাব্বানী কমিটির কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক ছিলেন।
রবিবার (২৩ মার্চ) বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের করা হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে কারাগার থেকে আদালতে উপস্থিত করে পুলিশ। এরপর তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মারুফ হাসান।আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখি রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।
দুপক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন রেজার আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
গত ২৩ ডিসেম্বর নিউমার্কেট থানার আরেক মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ বছরের ১২ মার্চ ওই মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পরদিন হাইকোর্টের চেম্বার জজ জামিন আটকে দেন। আজ নিউমার্কেট থানার নতুন দুই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে এক মামলায় রিমান্ডে পাঠান আদালত।
রিমান্ড আবেদন বলা হয়েছে, আসামি আবু জাফর (৩৪) ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের কর্মীদের সঙ্গে যোগসাজসে চাঁদা আদায় করে বিভিন্ন আন্দোলন দমনে অর্থায়নসহ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সঙ্গে থেকে ঢাকা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার কথা জানা গেছে।
এদিকে পায়ে ডাণ্ডাবেড়ির বিষয়ে আসামি আবু জাফরের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখি বলেন, সাধারণত সাজাপ্রাপ্ত বা দুর্ধর্ষ আসামিদের পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি দিতে দেখা যায়। আজ যার পায়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরানো হয়েছে, তিনি সাজাপ্রাপ্ত আসামি নন।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ডাণ্ডাবেড়ি দেওয়া নির্ভর করে আসামির আচরণের ওপর। কোনও আসামি যদি পুলিশের সঙ্গে উগ্র আচরণ করে, তাহলে সাধারণত ডাণ্ডাবেড়ি দেওয়া হয়।