
ভোলার মনপুরায় ভিজেএফের চাল বিতরণকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে জামায়াত ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন নেতাদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে তিন দলের অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পরে নৌবাহিনী ও পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
রোববার দুপুর ১২ টায় উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মনপুরা হাসপাতালে ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষের কারণে দুই ঘণ্টা চাল বিতরণ বন্ধ থাকে। পরে তিন দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর পরিস্থিতি শান্ত হলে ফের চাল বিতরণ শুরু হয় বলে জানান উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন।
আহতদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াতের কর্মীরা হলেন- নোমান, মহিউদ্দিন, মো. মাহিন, মো. রাসেদ, আব্বাস ও মো. কাউসার।
বিএনপির আহত কর্মীরা হলেন- মো. মামুন, মো. এরশাদ, আব্বাস, সহিজল ও মিল্লাদ। এদের সবার বাড়ি উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।
আহত সূত্রে জানা যায়, রোববার সকাল ১০ টায় ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসকের নেতৃত্বে চাল বিতরণ শুরু হয়। পরে একতরফা বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে চাল বিতরণের প্রতিবাদে স্থানীয় জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের নেতারা এক হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। একপর্যায়ে তারা মিছিল নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে গেলে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী চলে ত্রিমুখী সংঘর্ষ। এতে তিন দলের ১৫ জন কর্মী আহত হয়।
খবর পেয়ে নৌবাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত হলে পরিস্থিত শান্ত হয়। পরে বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকের পর চাল বিতরণ শুরু হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপত্বি মুফতি এনায়েত উল্লা জানান, প্রত্যেক বছর উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমাদের দলের অসহায় নেতাকর্মীরা চাল পেত। কিন্তু চলতি বছর আমাদের নেতাকর্মীদের চাল না দিয়ে একতরফা বিএনপির নেতাকর্মীরা চাল দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা মিছিল করি। পরে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসকের কাছে প্রতিবাদ করতে এলে বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা করে আহত করে।
উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি মাও. আবু সুফিয়ান অভিযোগ করে জানান, একতরফা বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চাল বিতরণ করা হয়। এর প্রতিবাদে মিছিল শেষে প্রশাসকের কাছে আসলে বিএনপির নেতা মোশারেফ, সামসু ও ফিরোজের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা করা হয়। এতে আমাদের নেতাকর্মীরা আহত হয়।
উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি মোশারেফ বলেন, আমরা হামলা করিনি বরং গোলমাল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে যাই।
মনপুরা থানার ওসি আহসান কবির জানান, চাল বিতরণ নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন নেতাদের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটে। পরে নৌবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের অবস্থানের পর পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এই ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিখন বনিক জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছে। উপজেলায় তিন দলের নেতাদের সঙ্গে বসে সমস্যার সমাধান করা হবে।